শুক্রবার, ২০ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা
ইলিশশূন্য বরিশাল মোকাম

নদীর বড় বড় পাঙ্গাশসহ সয়লাব দেশীয় মাছে

রাহাত খান, বরিশাল

নদীর বড় বড় পাঙ্গাশসহ সয়লাব দেশীয় মাছে

ইলিশের দেশ বরিশালের মোকামে ইলিশ নেই। তবে নদী ও সাগরের অন্যান্য মাছে ভরপুর মোকাম। কিছু ইলিশ মোকামে এলেও দাম তুলনামূলক বেশি। গতকাল মোকামে ১ কেজি সাইজের একটি ইলিশ পাইকারি বিক্রি হয়েছে ৬৭৫ টাকা কেজি। নদ-নদী, খাল-বিলের দেশীয় জাতের এবং সাগরের অন্যান্য মাছ প্রকারভেদে পাইকারি প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ১৫০ থেকে ৫০০ টাকা। এর মধ্যে বিভিন্ন নদী থেকে আহরিত পাঙ্গাশ মাছ এসেছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ। পাঙ্গাশগুলো সাইজেও বেশ বড়। আড়তদাররা বলছেন, মৌসুমের এ সময় সাধারণত নদীতে তেমন ইলিশ পাওয়া যায় না। ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে ৪ নভেম্বর সাগরে যাওয়া মাছ ধরা ট্রলারগুলো ফিরে এলে ইলিশের সরবরাহ বাড়বে। তখন দামও কিছুটা কমবে। জুলাই-আগস্ট-সেপ্টেম্বর ইলিশের প্রধান মৌসুম। এ সময় নদ-নদী এবং সাগরে প্রচুর ইলিশ আহরিত হয়। ১৪ অক্টোবর ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরুর আগে নদী এবং সাগরে প্রচুর ইলিশ আহরিত হয়। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর নদীতে তেমন ইলিশ মিলছে না। নিষেধাজ্ঞার পর সাগরে যাওয়া ট্রলারগুলো ফিরে না আসায় পোর্ট রোডের মোকাম অনেকটা ইলিশ-শূন্য। ভরা মৌসুমে এই মোকামে প্রতিদিন ২ হাজার থেকে ৫ হাজার মণ ইলিশ আসে। দুই দিনে এসেছে প্রায় ২০০ মণ ইলিশ। গতকাল মোকামে রপ্তানিযোগ্য এলসি সাইজ (৬০০ থেকে ৯০০ গ্রাম) প্রতি কেজি ৬০০ থেকে ৬২৫ টাকা এবং কেজি সাইজের প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ৬৭৫ টাকা দরে। ১ কেজি ২০০ গ্রাম সাইজের প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ৮০০ টাকা দরে।  মোকামে তেমন ইলিশ না থাকলেও নদ-নদী খাল-বিল-ঘের থেকে আহরিত দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন মাছে ভরপুর পোর্ট রোডের মোকাম। বিশেষ করে তেঁতুলিয়া ও চন্দ্রমোহন নদী থেকে আহরিত বড় বড় সাইজের পাঙ্গাশ দৃষ্টি কাড়ছে ক্রেতাদের। একেকটি পাঙ্গাশের ওজন ৩ থেকে ৭ কেজি পর্যন্ত। বড় সাইজের একটি পাঙ্গাশ গতকাল প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে সাড়ে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা দরে। নদ-নদীর দেশীয় পোয়া মাছ সাইজ ভেদে বিক্রি হয়েছে ১৫০ থেকে ২২০ টাকা কেজি দরে। গতকাল মাঝারি সাইজের চিংড়ি বিক্রি হয়েছে সাড়ে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি দরে। মাছ ব্যবসায়ী মো. হারুন জানান, গতকাল মোকামে সামুদ্রিক জাভা কই ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা, মোচন মাছ ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা, ম্যাদ মাছ ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা, চিতল ১১০ থেকে ১২০ টাকা, কালো রঙের রূপচাঁদা ৩০০ থেকে ৪০০ এবং সাদা রঙের রূপচাঁদা ৬০০ থেকে সাড়ে ৬০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। জেলা মৎস্য আড়তদার মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ রিপন জানান, শীতের শুরুতে গ্রামগঞ্জে ঘের, পুকুর, ডোবা, খাল-বিল সেচ করে মাছ ধরার হিরিক পড়েছে। নদীতে ইলিশ না পাওয়া গেলেও দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন মাছ পাওয়া যাচ্ছে প্রচুর। নিষেধাজ্ঞা শেষে সমুদ্রে যাওয়া ট্রলারগুলো ফিরে এলে ইলিশের সরবরাহ বাড়বে এবং ইলিশসহ সব মাছের দাম আরও কমবে বলে তিনি জানান।

জেলা মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তা (ইলিশ) ড. বিমল চন্দ্র দাস বলেন, নদীতে ডিম ছেড়ে ইলিশ সমুদ্রে চলে যায়। এই সময়ে নদ-নদীতে তেমন ইলিশ পাওয়া যায় না। তবে বাজারে অন্যান্য মাছের প্রচুর সরবরাহ আছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর