রবিবার, ২২ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

মুন্সীগঞ্জ পাড়ের সঙ্গে সংযোগ পদ্মা সেতুর

লাবলু মোল্লা, মুন্সীগঞ্জ

মুন্সীগঞ্জ পাড়ের সঙ্গে সংযোগ পদ্মা সেতুর

মুন্সীগঞ্জ পাড়ের সঙ্গে সংযোগ হলো স্বপ্নের পদ্মা সেতুর। ৩৮তম স্প্যান বসানো হয়েছে গতকাল। ফলে সেতুটির পৌনে ৬ কিলোমিটার বা ৫ হাজার ৭০০ মিটার এখন দৃশ্যমান। সেতুমন্ত্রীর সিনিয়র জনসংযোগ কর্মকর্তা আবু নাসের জানান, সকাল ৯টার দিকে মুন্সীগঞ্জের মাওয়ার কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে স্প্যানটি নিয়ে যাওয়া হয় ১ ও ২ নম্বর পিলারের কাছে। এরপর বিকাল ৩টা ৩৫ মিনিটে সেটি স্থাপন করা হয় নির্দিষ্ট পিলারে।

আবু নাসের বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, সুপারস্ট্রাকচার পদ্মা সেতু। দুর্নীতির অপবাদ ঘুচিয়ে প্রমত্তা পদ্মার জলরাশির ওপর একের পর এক বসছে সক্ষমতার ইস্পাত কঠিন সংযোগ। দুই তীরের জনজীবন জুড়ে দেওয়ার এক সময়ের অসম্ভব ভাবনা আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী নেতৃত্বে দৃশ্যমান বাস্তবতা। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নিবিড় তত্ত্বাবধানে সব প্রতিকূলতা মাড়িয়ে প্রায় শেষ প্রান্তে স্বপ্নের সেতুবন্ধ।  তিনি জানান, সকালের মিষ্টি রোদে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে ১ ও ২ নম্বর পিলারের ওপর বসানোর প্রস্তুতি শুরু হয় ওয়ান-এ নামের ৩৮তম স্টিল ট্রাস (স্প্যান)। আর মাত্র তিনটি স্প্যান বা ট্রাস বসলেই স্বপ্নপূরণ। আবু নাসের আরও জানান, প্রকল্পে নিযুক্ত প্রকৌশলীদের কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী, গতকাল সকাল ৯টার দিকে মুন্সীগঞ্জের মাওয়ার কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে ভাসমান ক্রেন তি-আনই ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যরে স্প্যানটি পাজা করে নিয়ে আসে নির্ধারিত পিলারের কাছে। সাড়ে ৬ ঘণ্টা চেষ্টার পর বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে তা ১ ও ২ নম্বর পিলারের ওপর বসানো সম্পন্ন হয়।

 ১-২ নম্বর পিলারের অবস্থান মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তের পদ্মা নদীর একেবারে তীরে। এতে করে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর সঙ্গে মুন্সীগঞ্জ পাড়ের সংযোগ হয়। সবকিছু ঠিক থাকলে বাকি ৩টি স্প্যানের মধ্যে ২৯তম স্প্যান ২-ডি ১০ ও ১১ নম্বরে পিলারে বসবে এ মাসেই। আগামী ২ ডিসেম্বর পিলার ১১ ও ১২ নম্বরে ৪০তম স্প্যান (২-ই) ও ১০ ডিসেম্বর সর্বশেষ ৪১ নম্বর স্প্যান (২-এফ) বসবে ১২ ও ১৩ নম্বর পিলারের ওপর। ৪১তম স্প্যানটি বসানোর সময় পদ্মা সেতুর কাছে থাকার কথা রয়েছে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপির।

পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে। মূল সেতুর ২ হাজার ৯১৭টি রোডওয়ে স্লাবের মধ্যে অর্ধেকটা বসানো হয়েছে। ২ হাজার ৯৫৯টি রেলওয়ে স্লাবের মধ্যে অর্ধেকের বেশি স্লাব বসানো হয়েছে। মাওয়া ও জাজিরা ভায়াডাক্টে ৪৮৪টি সুপার টি গার্ডারের মধ্যে প্রায় ৩০০টি স্থাপন করা হয়েছে। স্প্যান বসানোর পাশাপাশি স্লাব বসানোর কাজও এগিয়ে চলছে।

মূল সেতু নির্মাণের কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড (এমবিইসি) ও নদী শাসনের কাজ করছে চীনের আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। সার্বিক তত্ত্বাবধানে রয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৯৯ ব্রিগেড কমান্ড।

সর্বশেষ খবর