রবিবার, ২২ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা
বিশ্ব পরিস্থিতি

করোনার সংক্রমণ ৬ কোটি ছুঁই ছুঁই

প্রতিদিন ডেস্ক

বিশ্বব্যাপী মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস এখন দ্বিগুণ গতিতে ছুটছে। এরই মধ্যে সংক্রমণের সংখ্যা ৬ কোটির ঘর ছুঁতে চলেছে। গতকাল সকাল পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী, বিশ্বে সংক্রমিতের সংখ্যা ছিল ৫ কোটি ৮০ লাখ ৫ হাজার। প্রতি ২৪ ঘণ্টায় যুক্ত হচ্ছিল ৬ লাখ ৬০ হাজারের বেশি সংক্রমিত। এ পর্যন্ত বিশ্বে মৃতের সংখ্যা হয়েছে অন্তত ১৩ লাখ ৮০ হাজার।

বিপর্যস্ত মেক্সিকো : মেক্সিকোয় প্রাণঘাতী এ ভাইরাস এরই মধ্যে ১ লাখ ৮ হাজার মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে।

ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য অনুযায়ী, মেক্সিকোয় এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ১০ লাখ ২৫ হাজার ৯৬৯ জন। মৃত্যু হয়েছে ১ লাখ ৮২৩ জনের। কানাডায় দ্বিতীয় ঢেউ : কানাডায় শুরু হয়েছে করোনাভাইরাস মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউ। বর্তমানে সেখানে দৈনিক পাঁচ হাজারের কম নতুন রোগী শনাক্ত হলেও চলতি বছরের শেষ নাগাদ তা দৈনিক ২০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে। আর পরিস্থিতি আরও নাজুক হলে দৈনিক ৬০ হাজার নতুন রোগী দেখতে হতে পারে দেশটিকে। শুক্রবার কানাডার শীর্ষ জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. থেরেসা ট্যাম আশঙ্কাজনক এ তথ্য জানিয়েছেন। এক সংবাদ সম্মেলনে দেশটির বর্তমান স্বাস্থ্যব্যবস্থা বিষয়ে তিনি বলেন, এরই মধ্যে নির্দিষ্ট কিছু অঞ্চল, কিছু শহরে স্বাস্থ্যসেবা ব্যাপক চাপ অনুভব করছে।

 এটা এখনই যদি ঘটতে থাকে, তাহলে ভাবুন, এসব ক্লান্ত স্বাস্থ্যসেবা কর্মী সংক্রমণের তীব্রতা বাড়লে মোকাবিলা করতে পারবেন না।

কানাডায় গত কয়েক দিনে করোনাভাইরাস সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় কয়েকটি প্রদেশে আবারও চলাচল ও ব্যবসা-বাণিজ্যে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। উদ্ভূত এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় দেশবাসীকে শারীরিক সংস্পর্শ সীমিত করার আহ্বান জানিয়েছেন কানাডীয় প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। শুক্রবার নিজ বাসভবন থেকে রাখা এক বক্তব্যে তিনি বলেছেন, আমাদের জনস্বাস্থ্যের নির্দেশিকা অনুসরণ করতে হবে। ইচ্ছামতো যোগাযোগ কমাতে হবে। আমরা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছি, যেখানে কভিড-১৯ প্রাদুর্ভাব থামাতে কয়েক সপ্তাহ অবরুদ্ধ রাখার বিষয়গুলো আরও জোরদার করতে হবে।

কানাডার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা, চলতি মাস শেষে দেশটিতে করোনায় মৃত্যু ১১ হাজার ৮৭০ থেকে ১২ হাজার ১২০ জনের মধ্যে থাকতে পারে। আর আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছাতে পারে ৩ লাখ ৬৬ হাজার ৫০০ থেকে ৩ লাখ ৭৮ হাজার ৬০০ জনের মধ্যে। সরকারি হিসাব অনুসারে, কানাডায় এ পর্যন্ত প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ লাখ ১৫ হাজার ৭৫১ জন। মারা গেছেন অন্তত ১১ হাজার ২৬৫ জন।

এক ব্যক্তির মিথ্যা কথায় লকডাউনে ১৭ লাখ মানুষ : পিৎজা বারে কর্মরত এক ব্যক্তির মিথ্যা কথার কারণে লকডাউনে যেতে হয়েছে গোটা সাউথ অস্ট্রেলিয়াকে। গত শুক্রবার অনেকটা বাধ্য হয়েই এ কথা স্বীকার করে নিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। সাউথ অস্ট্রেলিয়া প্রশাসনের প্রধান স্টিভেন মার্শাল এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, রাজ্যটির ১৭ লাখ মানুষকে ছয় দিনের লকডাউনে যেতে হতো না, যদি পিৎজা বারের ওই কর্মী মিথ্যা না বলতেন। তবে পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় ছয় দিন শেষ হওয়ার আগেই লকডাউন তুলে নেওয়া হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন এ কর্মকর্তা।

জানা গেছে, সম্প্রতি স্থানীয়ভাবে কয়েক ডজন মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর গত বুধবার ছয় দিনের ‘সার্কিট ব্রেকার’ লকডাউন ঘোষণা করে সাউথ অস্ট্রেলিয়া কর্তৃপক্ষ। করোনা নিয়ন্ত্রণে অসাধারণ সাফল্য দেখানো রাজ্যটিতে গত এপ্রিলের পর এটাই ছিল প্রথমবার স্থানীয়ভাবে সংক্রমণের ঘটনা। সংক্রমণের উৎস খুঁজতে গিয়ে অ্যাডিলেড শহরের উডভাইল পিৎজা বারকে হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করেন রাজ্যের স্বাস্থ্যসেবা কর্মীরা। সাউথ অস্ট্রেলিয়ার পুলিশ কমিশনার গ্রান্ট স্টিভেনস বলেন, স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা দেখতে পান উডভাইল পিৎজা বারের সঙ্গে সম্পর্কিত এক ব্যক্তি করোনা শনাক্তকরণ টিমকে ক্রমাগত ভুলপথে পরিচালিত করেছেন। আমরা এখন জানি, তারা মিথ্যা বলেছে। তবে করোনা সংক্রমণের বিষয়ে ভুল তথ্য দেওয়া সেই পিৎজা কর্মীর বিরুদ্ধে জরিমানা বা কোনো ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।

উল্টোনীতি সুইডেন সরকারের : করোনা ঠেকাতে যেখানে ‘মাস্ক মাস্ট’ বলে ঘোষণা দিয়েছে সব দেশ, সেখানে উল্টোপথে হাঁটছে সুইডেন সরকার। দেশটি ফেস মাস্ক ব্যবহার বাতিল ঘোষণা করেছে। প্রশাসনের তরফ থেকে বলা হয়েছে, মাস্ক ব্যবহারের জন্য অনেকেই সামাজিক দূরত্ব মেনে চলছেন না। মানুষ মনে করছেন যে, মাস্ক ব্যবহার করলে সামাজিক দূরত্ব পালনের প্রয়োজন নেই। সে জন্যই মাস্ক ব্যবহার বাতিল করে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সুইডেনের প্রশাসন।

সর্বশেষ খবর