সোমবার, ৩০ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

অপ্রতিরোধ্য দালাল, দুর্ভোগে রোগীরা

কোনো কিছুতেই উন্নতি হচ্ছে না চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিস্থিতি

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার প্রসূতি রোগী নাসরিন সুলতানা গত শুক্রবার রাতে আসেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে। এখান থেকে টিকিট নেওয়ার পর থেকেই অচেনা এক লোক রোগীর পেছন পেছন যান প্রসূতি ওয়ার্ড পর্যন্ত। এরপর ওয়ার্ডে ভর্তি, ফরম পূরণ ও ওষুধ লিখে দেওয়া পর্যন্ত তিনি সঙ্গে থাকেন। ওষুধ লিখে দেওয়ার পর বিলম্ব না করেই প্রেসক্রিপশন হাতে নিয়ে বলেন, ‘আমি কম মূল্যে ওষুধ এনে দিতে পারব। আমার সঙ্গে আসেন।’ এরপর তিনি দুই হাজার ৩৫৬ টাকার ওষুধ ক্রয় করে দেন। পরে একই প্রেসক্রিপশন নিয়ে একই দোকানে গেলে ওই ওষুধের দাম বলা হয় এক হাজার ২২০ টাকা। প্রসূতি রোগীর ভাই কামাল সুলতান বলেন, ‘ভর্তি করার পর কিছু বোঝার আগেই ওই লোকটি প্রেসক্রিপশন নিয়ে টানাটানি করে ওষুধের জন্য যেতে বলেন। পরে বুঝেছি ওই লোকটি দালাল।’ এভাবে চমেক হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে দালালরা সক্রিয়। জরুরি বিভাগ থেকে ওয়ার্ড পর্যন্ত লেগেই থাকে রোগীর পেছনে। চিকিৎসক ব্যবস্থাপত্র দেওয়ার পর তা নিয়ে ফার্মেসিতে যেতে অনেকটা বাধ্যও করে। ফলে দেড় থেকে দুইগুণ পর্যন্ত বেশি মূল্যে কিনতে হয় ওষুধ। রোগী নিয়ে দুশ্চিন্তার স্পর্শকাতর ওই মুহূর্তে দালালদের খপ্পরে পড়ে অতিরিক্ত টাকা গুনতে হয় স্বজনদের। দালালরা ক্রমেই হয়ে ওঠছে অপ্রতিরোধ্য। প্রায় সময় ওয়ার্ডের বারান্দা থেকে আটক করা হয় দালাল। জানা যায়, চমেক হাসপাতালে দালালের উৎপাত অনেক পুরনো সমস্যা। অতীতে কর্তৃপক্ষ দালাল ঠেকাতে ওয়ার্ডভিত্তিক সিসি ক্যামেরা স্থাপন ও আনসার সদস্য নিয়োগসহ নানা উদ্যোগ নিলেও তা বন্ধ হয়নি। নানা সমীকরণে হাসপাতালকে স্থায়ীভাবে দালালমুক্ত করতে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘হাসপাতালে দালাল প্রতিরোধে চিকিৎসক, পুলিশ ও আনসার নিয়ে একটি কমিটি আছে। কমিটি নিয়মিত মনিটরিং করে। গত পরশু এক দালালকে আটক করা হয়। তাছাড়া দালাল প্রতিরোধে একটি টাস্কফোর্সও গঠন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’ চমেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির এস আই আবদুল হামিদ বলেন, ‘দালালরা ওয়ার্ডভিত্তিক সাধারণ রোগীর বেশে থাকার কারণে শনাক্ত করা যায় না।’

 তাছাড়া কোনো রোগীর স্বজনও অভিযোগ করেন না। তবে আমাদের তৎপরতায় গত দুই মাসে তিন দালালকে আটক করা হয়েছে। দালাল নিয়ন্ত্রণে আমরা সব  সময় সক্রিয়।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর