শিরোনাম
সোমবার, ৩০ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

সরকারি জমিতে বেসরকারি স্কুল করে বাণিজ্য

গোল্ড মনিরের বিরুদ্ধে মানববন্ধন

নিজস্ব প্রতিবেদক

সরকারি জমি নামমাত্র মূল্যে বরাদ্দ নিয়ে বেসরকারি স্কুল করে বাণিজ্য করে আসছিলেন সোনা চোরাকারবারি মনির হোসেন ওরফে গোল্ড মনির। রাজউকের কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীর সঙ্গে যোগসাজশে মাত্র ৫০ টাকা কাঠা দরে ১৫ কাঠা ৪ ছটাক জমির প্লটটি ৭৬৫ টাকা দিয়ে লিজ নিয়ে গোন্ডেন মনির তার বাবা চিহ্নিত রাজাকার সিরাজ মিয়ার নামে ‘সিরাজ মিয়া মেমোরিয়াল স্কুল’ প্রতিষ্ঠা করেন। শর্ত অনুযায়ী এলাকার সাধারণ মানুষের ছেলে-মেয়েদের স্বল্প খরচে পড়াশোনার সুযোগ করে দেওয়ার কথা থাকলেও মূলত প্রতিটি ছাত্র-ছাত্রীর কাছ থেকে আদায় করা হতো মোটা অঙ্কের টাকা। গতকাল এসব তথ্য এবং স্কুলের নাম পরিবর্তনের দাবিতে বেলা ১১টার দিকে মেরুল বাড্ডা প্রগতি সরণি ডিআইটি প্রজেক্টের সামনে মানববন্ধন করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, মেরুল বাড্ডা দক্ষিণ বারিধারা আবাসিক পুনর্বাসন প্রকল্পে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য জনস্বার্থে একটি মসজিদ, একটি বিদ্যালয়, একটি কলেজ ও একটি খেলার মাঠের জন্য রাজউক জমি বরাদ্দ দেয়। কিন্তু দুর্নীতিবাজ, সোনা চোরাকারবারি, কুখ্যাত রাজাকার মৃত সিরাজ মিয়ার ছেলে গোল্ডেন মনির রাজউক থেকে ৫০ টাকা কাঠা দরে ১৫ কাঠা ৪ ছটাক জমির প্লটটি মাত্র ৭৬৫ টাকা দিয়ে বরাদ্দ নেন। স্কুলের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রতিবছর ভর্তির সময় ১২ হাজার ৩০০ টাকা এবং মাসিক বেতন হিসেবে ১ হাজার ৮৫০ টাকা আদায় করা হয়, যা ওই প্লট বরাদ্দের শর্তের পরিপন্থী।

 ফলে এ এলাকার মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানদের স্বল্প খরচে শিক্ষা প্রদানের সুযোগ অধরাই রয়ে গেছে। অপরদিকে সরকারি নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে দুর্নীতিবাজ গোল্ডেন মনির স্কুলকে বাণিজ্যিক ও ব্যক্তিগত লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করে বিপুল টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা হামিদ আহমেদ বলেন, সরকারি সম্পত্তি তো কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি হতে পারে না। প্রতি মাসে সাড়ে আঠারো শ’ টাকা বেতন দিয়ে কোনো পরিবারের সন্তানরা ওই স্কুলে পড়ছে তা তো সবাই জানে। এর পরও একজন রাজাকারের নামে সরকারি জমিতে স্কুল হবে তা কীভাবে একজন সচেতন মানুষ মেনে নেবে।

বক্তারা বলেন, শুরু থেকেই সাবেক বাড্ডা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবদুল কাদির, আওয়ামী লীগ নেতা মোমতাজ উদ্দিন বেপারীসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা স্কুলটির নামকরণের বিরোধিতা করেও মনিরের ক্ষমতার কাছে পরাস্ত হন। ২০০৯ সালে স্কুলটির নাম থেকে রাজাকারের নাম বাদ দিয়ে অন্য নাম দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তৎকালীন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আবদুল মান্নান খান এবং শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বরাবর লিখিত আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু রহস্যজনক কারণে দীর্ঘ ১১ বছরেও এর কোনো সুরাহা হয়নি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর