সোমবার, ৩০ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা
পৌরসভা নির্বাচন

চট্টগ্রামে টেনশনে কাউন্সিলর প্রার্থীরা

এখনো চূড়ান্ত হয়নি বিএনপির তালিকা, আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী বদিউল

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

আগামী ২৮ ডিসেম্বর প্রথম দফা পৌরসভা নির্বাচন। এদিন চট্টগ্রামের সীতাকু- পৌরসভায়ও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই পৌরসভায় নির্বাচন ঘিরে আওয়ামী লীগ-বিএনপিসহ রাজনৈতিক সংগঠনের নেতারা সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। তফসিল ঘোষণার পর থেকেই শুরু হয়েছে প্রচারণার নানা তৎপরতা। আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী চূড়ান্ত হলেও এখনো বিএনপির প্রার্থী চূড়ান্ত হয়নি। তবে কাউন্সিলর পদে দলীয় প্রতীক বা একক প্রার্থী ঘোষিত না হওয়ায় কোন্দল বেড়ে গেছে নেতা-কর্মীদের মধ্যে। সীতাকুন্ডে নির্বাচন কমিশন মনোনয়নপত্র বিতরণ শুরু করেছে। গতকাল পর্যন্ত মেয়র পদসহ মোট ১০৪ জন কাউন্সিলর পদে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। তবে এবার সীতাকু- পৌরসভায় প্রথমবারের মতো সব কটি ভোট কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোট গ্রহণ হবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ। ইভিএমে ভোট হওয়ায় অনেকের মধ্যে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। আর কাউন্সিলর প্রার্থীরা আছেন টেনশনে। নির্বাচন কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, মেয়রসহ বিভিন্ন পদে ১০৪টি মনোনয়নপত্রের মধ্যে মেয়র পদে ১৪টি, কাউন্সিলর (সাধারণ) পদে ৭৮টি এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ১২টি ফরম বিতরণ করা হয়েছে। তফসিল অনুযায়ী সীতাকু- পৌরসভার নির্বাচন হবে ২৮ ডিসেম্বর। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ১ ডিসেম্বর, মনোনয়নপত্র বাছাই ৩ ডিসেম্বর এবং প্রার্থিতা প্রত্যাহার ১০ ডিসেম্বর। তবে গতকাল পর্যন্ত ২৫ জনের মতো মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। এদের মধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলসহ স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন। আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা-কর্মী বলেন, মেয়র পদে একক প্রার্থী হওয়ায় দলে কোন্দল কিছুটা কমেছে। কিন্তু কাউন্সিলর পদ নিয়ে কোন্দল এখনো রয়ে গেছে। একক প্রার্থী না হলে বড় ধরনের সহিংসতারও আশঙ্কা করা হচ্ছে। এসব নিয়ে প্রতিটি এলাকায় বা ওয়ার্ডে নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভও দেখা দিয়েছে। চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান বলেন, দলের পক্ষ থেকে মেয়র পদে বদিউল আলমকে মনোনয়নপত্র দেওয়া হয়েছে। কাউন্সিলর পদে দলীয়ভাবে কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে না। তারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন। কাউন্সিলর পদে দল কাউকে মনোনয়ন দেবে এমন কোনো নির্দেশনা নেই।

তাই কাউন্সিলর পদে দলের পক্ষ থেকে কোনো একক প্রার্থী নেই। এ ছাড়া মেয়র পদে দলীয় প্রার্থীকে জিতিয়ে আনতে হলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে বলে তিনি জানান।

তবে দলীয় সূত্রে জানা গেছে, অনেকেই প্রত্যাশা করেছিলেন মেয়র পদে দলের মনোনয়ন পাবেন। কিন্তু বর্তমান মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদিউল আলম মনোনয়ন পাওয়ায় তারা হতাশ। ফলে দীর্ঘদিন রাজনীতিতে সক্রিয় এমন বেশ কয়েকজন নেতা মেয়র পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হতে পারেন। এ ছাড়া কাউন্সিলর পদে প্রতিটি ওয়ার্ডে একাধিক প্রার্থী থাকায় অন্তর্কোন্দল দেখা দিতে পারে। সীতাকুন্ডের এই কোন্দল রূপ নিতে পারে সহিংসতায়। ইতিমধ্যে দলের বেশ কয়েকজন কাউন্সিলর পদে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। তারা প্রত্যেকেই ত্যাগী ও যোগ্য নেতা বলে দাবি করছেন প্রচারণায়।

বিএনপিতে অবশ্য এখনো কোন্দল দেখা দেয়নি। উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব জহুরুল আলম জহুর বলেছেন, সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা তৈরি করে কেন্দ্রে পাঠানো হবে। তারপর কেন্দ্র থেকে চূড়ান্ত করা হবে দলীয় প্রার্থী।

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানা যায়, ১৯৯৮ সালে ১ এপ্রিল ২৮ বর্গমাইল আয়তনের নয়টি ওয়ার্ড নিয়ে সীতাকু- পৌরসভা গঠিত হয়। হালনাগাদ তালিকায় পৌরসভায় মোট ভোটার ৩৪ হাজার ৮১৩ জন। নির্বাচন হবে ১৭টি কেন্দ্রে। ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর এ পৌরসভায় সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর