সোমবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

নিরাপত্তা ঝুঁকিতে শাহ আমানত

অবৈধ দখলে নেভাল রোড ♦ সন্ধ্যার পর শুরু হয় মাদক বেচাকেনা

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

নিরাপত্তা ঝুঁকিতে শাহ আমানত

চট্টগ্রাম নগরীর পর্যটন এলাকা নেভাল রোডে চলছে দখলদারদের রাজত্ব। ‘জোর যার দখল তার’ এমন কৌশলে রাস্তার পাশে গড়ে তুলেছেন কয়েকশ দোকান। এমনকী সন্ধ্যার পরপরই রাস্তার ওপর চেয়ার-টেবিল বসিয়ে চলে মাদকসহ অবৈধ বাণিজ্য। এতে দেশের অন্যতম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে। অভিযোগ রয়েছে, দিনের পর দিন বন্দরের জায়গা দখলে নিয়ে অবৈধ বাণিজ্য চললেও কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না সংশ্লিষ্টরা। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর বলেন, ‘রাস্তা দখল ও মাদক বিক্রি বন্ধে প্রয়োজনী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সংশ্লিষ্ট থানাকে এ বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হবে।’ চট্টগ্রাম বন্দরের প্রধান ভূমি কর্মকর্তা জিল্লুর রহমান বলেন, ‘অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে নিয়মিত অভিযান চালানো হয়। কিন্তু উচ্ছেদের পর ফের স্থাপনা গড়ে উঠছে। অবৈধ দখলদারদের কোনোভাবেই ঠেকানো যাচ্ছে না।’ জানা যায়, কর্ণফুলীর তীরবর্তী নেভাল এলাকার বিমানবন্দর সড়কের ১ কিলোমিটারজুড়ে সড়কের একপাশে গড়ে উঠেছে অবৈধ কয়েকশ ভাসমান দোকান। এসব দোকানে রাত-দিন চলে মাদক বিকিকিনি। সন্ধ্যার পর বাড়তে থাকে দখলের পরিধি। রাস্তার পাশ থেকে যেতে যেতে দখলদাররা চলে যায় মাঝ রাস্তায়। চেয়ার-টেবিলের দখলে চলে যায় রাস্তার সিংহভাগ। প্রশাসনের কড়াকড়ি না থাকায় পুরো এলাকা লোকারণ্য হয়ে পড়ে। যান চলাচলে প্রতিকূল পরিবেশ সৃষ্টির পাশাপাশি দেশের অন্যতম বিমানবন্দর চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তাও বিঘ্ন             হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে- অবৈধ দোকান স্থাপন ও মাদক বাণিজ্যের পেছনে রয়েছে শক্তিশালী কয়েকটি সিন্ডিকেট। এ সিন্ডিকেটে রয়েছেন পতেঙ্গার কয়েকজন প্রভাবশালী রাজনীতিবীদ, পুলিশ সদস্যসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। তাদের কেউ মাসোয়ারা নেন আর কেউ নিজেই জায়গা দখল করে দোকান ভাড়া দিচ্ছেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ- চট্টগ্রাম বন্দরের জায়গায় অবৈধভাবে দখলে নিয়ে গড়ে উঠেছে শত শত দোকান। এ ছাড়া সন্ধ্যার আগে থেকে শুরু হয় রাস্তা দখলের প্রতিযোগী। অবৈধ দোকানদাররা রাস্তার ওপর চেয়ার-টেবিল দিয়ে ক্রেতাদের খাবার সরবারহ করেন। চলে মাদক বিক্রি। রাস্তার দখলের ফলে লোকজনকে হাঁটাচলা করতে বেশ বেগ পেতে হয়। রাস্তা সরু হওয়ার ফলে প্রায় দুর্ঘটনা ঘটে। বিমানবন্দরের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক দখলে নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাস্তার ওপর জটলার ফলে যে কোনো সময় অনাকাক্সিক্ষত ঘটনার আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অবৈধভাবে গড়ে ওঠা এসব দোকানের সিংহভাগেরই নেই কোনো বৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ। তারা অবৈধ লাইনের মাধ্যমে চালাচ্ছে বিদ্যুৎ। আবার কেউ কেউ আবাসিক সংযোগ দিয়ে এসব দোকান চালাচ্ছে। এতে প্রতি মাসেই লাখ লাখ টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর