সোমবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

দালাল চক্রের অক্টোপাসে চমেক হাসপাতাল

নিয়ন্ত্রণকারী কমপক্ষে ১০ গ্রুপ

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) চলছে দালাল চক্রের রাজত্ব। বাইরের ল্যাব থেকে রোগীদের বেশি দামে টেস্ট ও পছন্দের ফার্মেসি থেকে বেশি দামে ওষুধ কিনতে বাধ্য করা, নিজের সিন্ডিকেট থেকে রক্ত কিনতে বাধ্য করাসহ অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে দালাল চক্রের বিরুদ্ধে। অভিযোগ রয়েছে, দালাল চক্রের অপকর্মের প্রতিবাদ কিংবা তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন ফার্মেসির বাইরে থেকে ওষুধ কিনলেও রোগী ও তাদের স্বজনদের ওপর চালানো হয় নির্যাতন। তাদের এসব অপকর্ম নিয়ে ভুক্তভোগীরা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করলেও দালাল চক্রের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ (সিএমপি) উপ-কমিশনার (উত্তর) বিজয় বসাক বলেন, ‘চমেক হাসপাতালের দালাল চক্রে বাইরের লোকজন ছাড়াও ভিতরের লোকজন জড়িত। দালাল চক্রগুলোকে নিয়ন্ত্রণে কাজ চলছে। সম্প্রতি তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’ জানা যায়, চমেক হাসপাতালে সক্রিয় রয়েছে ১০টির অধিক দালাল চক্র। তারা রাজনৈতিক ও ছাত্র সংগঠনের ছত্রছায়ায় রাজত্ব করছে। অভিযোগ রয়েছে, রোগীদের বাইরের ল্যাবে বেশি দামে টেস্ট করাতে বাধ্য করা, নিজেদের ফার্মেসি থেকে বেশি দামে ওষুধ কিনতে বাধ্য করা, বিভিন্ন কোম্পানির মার্কেটিং অফিসারদের কাছ থেকে মাসোহারা আদায়, নিজেদের অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহারে বাধ্য করা, রোগীদের মোবাইল ও মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি, রোগীর স্বজনদের মলম লাগিয়ে মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেওয়া, পছন্দের ব্লাডব্যাংক থেকে বেশি দামে রক্ত কিনতে বাধ্য করার অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে দালাল চক্রগুলোর বিরুদ্ধে। তাদের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত রোগী ও তাদের স্বজনরা অভিযোগ করলেও প্রশাসন কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। চমেক হাসপাতাল নিয়ন্ত্রণকারীদের একজন রবিউল ইসলাম প্রকাশ কালা সম্রাট। হাসপাতালে প্রতিটি ওয়ার্ডে রয়েছে তার অনুসারীদের বিচরণ।

 তারা বিভিন্ন ওয়ার্ডে বিচরণ করে রোগীদের পরীক্ষার জন্য দেওয়া চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র সংগ্রহ করে। এরপর রোগীদের বাইরের ল্যাবে বেশি দামে টেস্ট করাতে বাধ্য করে। তার এ কাজে সহযোগী হিসেবে রয়েছেন তার ভাই হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী আবদুর রহিম। দালাল চক্রের আরেক হোতা জট কাদের। তার বোন হাসপাতালের কর্মচারী সুলতানার মাধ্যমেই নিয়ন্ত্রণ করেন হাসপাতাল এলাকা। হাসপাতালে অপরাধ কর্মকান্ডের নিয়ন্ত্রণকারীদের মধ্যে অন্যতম হলেন নোবেল, কিবরিয়া, তানভির, জয়, স্বপন দাশসহ আরও কয়েকটি গ্রুপ।

সর্বশেষ খবর