মঙ্গলবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

এস কে সিনহার বিরুদ্ধে ভাই-ভাতিজার সাক্ষ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক

ফারমার্স ব্যাংকের (বর্তমানে পদ্মা ব্যাংক) ঋণের টাকা আত্মসাতের মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহার বিরুদ্ধে আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন তার বড় ভাই নরেন্দ্র কুমার সিনহা ও ভাতিজা শঙ্খজিৎ সিনহা। গতকাল ঢাকার ৪ নম্বর বিশেষ জজ শেখ নাজমুল আলমের আদালতে তারা নিজেদের জবানবন্দি তুলে ধরেন। এ সময় তারা দুজনই বলেছেন, এস কে সিনহার কথাতেই তাদের নামে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের উত্তরা শাখায় হিসাব খোলা হয়। পরে সেই হিসাবে সোয়া দুই কোটি টাকা স্থানান্তরের বিষয়ে তারা জানতেন না। জানা গেছে, ৭০ বছর বয়সী নরেন্দ্র কুমার সিনহা সাবেক প্রধান বিচারপতির আপন বড় ভাই। আর শঙ্খজিৎ সিনহা বিচারপতি সিনহার মামাতো ভাইয়ের ছেলে। এদিন সাক্ষ্য গ্রহণের সময় মামলার অন্যতম আসামি ফারমার্স ব্যাংক লিমিটেডের অডিট কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুল হক চিশতী (বাবুল চিশতী) অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে পাশের ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে কারাগারে পাঠানো হয়। নরেন্দ্র আদালতে বলেন, তার ভাই এস কে সিনহা একদিন তাকে বলেন, বিশেষ প্রয়োজনে তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা প্রয়োজন। কিন্তু সরকারি চাকরিতে থাকার কারণে তার পক্ষে তা সম্ভব নয়। সে জন্য এস কে সিনহার অনুরোধে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের কিছু কাগজপত্রে তিনি সই করেন। তিনি কখনোই ওই ব্যাংকে      যাননি এবং কোনো চেকে স্বাক্ষরও করেননি। শঙ্খজিতের সঙ্গে তার কোনো ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিল না। সোনালী ব্যাংকের সুপ্রিম কোর্ট শাখায় এস কে সিনহার অ্যাকাউন্ট থেকে ওই যৌথ অ্যাকাউন্টে জমা হওয়া টাকার বিষয়ে তার কোনো ধারণাও নেই। ওই অ্যাকাউন্ট খোলার সময় কিছু কাগজপত্রে সই করা ছাড়া লেনদেন সম্পর্কে তিনি কিছুই জানতেন না এবং এসব বিষয়ে এস কে সিনহাই এককভাবে অবগত ছিলেন। পরে জবানবন্দিতে শঙ্খজিৎ বলেন, কাকা এস কে সিনহার অনুরোধে তিনি শাহজালাল ব্যাংকের উত্তরা শাখায় যান এবং ওই শাখার ম্যানেজারের দেওয়া কিছু কাগজপত্রে সই করেন। ওই অ্যাকাউন্টে যত টাকা লেনদেন হয়েছে, সে বিষয়ে তার কোনো ধারণা ছিল না এবং ওই টাকা তার কাকা সুরেন্দ্র সিনহা এবং সুরেন্দ্রর স্ত্রী লেনদেন করেন। কাকার নির্দেশেই তিনি ঢাকা ব্যাংক লিমিটেডের উত্তরা শাখায় ৫০ লাখ এবং ১০ লাখ টাকার দুটি এফডিআর করেন এবং ১৪ লাখ টাকা ঢাকা ব্যাংকের ইপিজেড শাখায় রাখেন।

শঙ্খজিতের সাক্ষ্য গ্রহণের মাঝপথে শুনানি মুলতবি করেন বিচারক। পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আগামী ১৩ জানুয়ারি দিন ঠিক করেন তিনি।

এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের ১৮ সাক্ষীর মধ্যে ১৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে। আগামী তারিখে শঙ্খজিতের বাকি সাক্ষ্য শোনার পাশাপাশি হাই কোর্টের বেঞ্চ রিডার মো. মাহবুবের সাক্ষ্য গ্রহণের কথা রয়েছে। এস কে সিনহা এই বেঞ্চ রিডারের মাধ্যমেই ব্যাংকে টাকা জমা করতেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে মামলায়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর