বুধবার, ৬ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

অপ্রতিরোধ্য মোবাইল চোর সিন্ডিকেট

চট্টগ্রামে সক্রিয় ৫০ গ্রুপ, চোরাই মোবাইল বিক্রি হয় ই-কমার্সে, হাই সিকিউরিটি মোবাইলের পার্টস খুলে করা হয় বিক্রি

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

অপ্রতিরোধ্য মোবাইল চোর সিন্ডিকেট

চট্টগ্রামে চুরি হওয়া মোবাইল বিক্রি হচ্ছে ই-কমার্সভিত্তিক বিভিন্ন সাইট ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন পেজে। এমনকি হাই সিকিউরিটি লক থাকা দামি মোবাইল সেটগুলোর ‘প্যাটার্ন লক’ খুলতে না পেরে পার্টস খুলে বিক্রি করা হচ্ছে খোলা বাজারে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের অনুসন্ধানে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য মিলেছে। এ কাজে নগরজুড়ে সক্রিয় রয়েছে পঞ্চাশের অধিক মোবাইল চোর সিন্ডিকেট। যাদের নিয়ন্ত্রণ করে পুলিশের কথিত সোর্স, ক্যাশিয়ার এবং রাজনৈতিক দলের নেতা। সিএমপির কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের উপ-কমিশনার হামিদুল আলম বলেন, ‘চোরাই মোবাইল ই-কমার্সভিত্তিক বিভিন্ন সাইটে বিক্রি হচ্ছে এমন তথ্য আমাদের কাছেও রয়েছে। এরই মধ্যে তাদের আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘মোবাইল চুরির অভিযোগ আমরা নিয়মিত পাই। অভিযোগের ভিত্তিতে এরই মধ্যে বেশ কিছু মোবাইল উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে চোর চক্রের সদস্যদের।’ নগরীর কোতোয়ালি থানার ওসি (তদন্ত) মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, ‘হাই সিকিউরিটি লক খুলতে চোর চক্রের সিন্ডিকেট উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করছে বলে তথ্য রয়েছে। কোন কোন চক্র উন্নত এ প্রযুক্তি ব্যবহার করছে সে বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।’ অনুসন্ধানে জানা যায়, নগরী ও জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে চুরি হওয়া  মোবাইলগুলো সরাসরি চলে আসে নগরীর রিয়াজুদ্দীন বাজার, শাহ আমানত মার্কেটসহ ঢাকার কয়েকটি মার্কেটে। এরপর তুলনামূলক কম সিকিউরিটি লক থাকা মোবাইলগুলোর ‘আইএমইএ’ পরিবর্তন করে বিক্রি করে দেওয়া হয় সাধারণ মার্কেটে। দামি এবং হাই সিকিউরিটি মোবাইল যেগুলোর ‘প্যাটার্ন লক’ খুলতে পারে না সেগুলোর পার্টস খুলে বিক্রি করে দেওয়া হয় বিভিন্ন মোবাইল মেরামতকারীদের কাছে। কিছু কিছু সিন্ডিকেট দামি মোবাইলগুলোর লক খুলতে আবার ব্যবহার করছে হাই সিকিউরিটি লেজার প্যাটার্ন। চীন থেকে আমদানি করা বিশেষ প্রযুক্তি মোবাইলের আইসির সঙ্গে যুক্ত করে প্যারালাল নতুন প্যাটার্ন তৈরি করে সহজে তৈরি করে নতুন সিকিউরিটি লক। যদিও ঢাকা ও চট্টগ্রামে হাতে গোনা কয়েকটি চোর সিন্ডিকেট উন্নত এ প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। বর্তমানে চট্টগ্রাম মহানগরে মোবাইল চোর চক্রের ৫০টি অধিক গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। মোবাইল চোর নিয়ন্ত্রণকারী সিন্ডিকেটগুলোর নিয়ন্ত্রণকারীদের মধ্যে রয়েছে পুলিশের কথিত সোর্স, হকার্স নেতা, রাজনৈতিক নেতা থেকে শুরু করে ছিনতাইকারী চক্রের নেতা। চট্টগ্রামের মোবাইল চোর চক্রের নিয়ন্ত্রণকারীদের মধ্যে সিংহভাগই নগরীর রিয়াজুদ্দীন বাজার এবং স্টেশন রোড এলাকার। নিয়ন্ত্রণকারীদের মধ্যে রয়েছে নগরীর ইপিজেড থানার কথিত ক্যাশিয়ার সুলতান, সদরঘাট এলাকার সোর্স বাবু, নিউমার্কেট এলাকার জাহাঙ্গীর আলম, মো. বশর, হানিফ, জানে আলম, মো. রফিক, হাত ভাঙা সুমন, রিয়াজুদ্দীন বাজারের মানিক, পেয়ার আহমদ, মো. বাদশা, হোসেন, বস লিটন, আলী, আজম, রিয়াজুদ্দীন বাজার চোরাই মার্কেটের কাইয়ুম, রেহেনা বেগম, শাহজাহান, রুবেল, স্টেশন রোড এলাকার শুক্কর, ফিরোজ অন্যতম।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর