বৃহস্পতিবার, ৭ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

ভারত ও সিঙ্গাপুর থেকে চাল কিনবে সরকার

নিজস্ব প্রতিবেদক

চলতি অর্থবছরের জন্য আড়াই লাখ টন (দেড় লাখ টন নন-বাসমতি সিদ্ধ ও ১ লাখ টন আতপ) চাল কিনবে সরকার। এর মধ্যে ভারত থেকে দেড় লাখ টন নন-বাসমতি সিদ্ধ চাল ও ৫০ হাজার টন আতপ চাল কেনা হবে। অবশিষ্ট ৫০ হাজার টন আতপ চাল কেনা হবে সিঙ্গাপুর থেকে। এতে মোট ব্যয় হবে প্রায় ৮৬৭ কোটি ৩ লাখ টাকা। গতকাল ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ সংক্রান্ত তিনটি পৃথক ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. আবু সালেহ মোস্তফা কামাল সাংবাদিকদের জানান, ক্রয় কমিটির বৈঠকে সরকারি পর্যায়ে (জি-টু-জি-এর আওতায়) ভারতের ‘ন্যাশনাল এগ্রিকালচার কো-অপারেটিভ মার্কেটিং ফেডারেশন অব ইন্ডিয়া লিমিটেড’ থেকে ১ লাখ টন নন-বাসমতি সিদ্ধ চাল ও ৫০ হাজার টন আতপ চাল কেনার একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে চাল কেনার এ প্রস্তাবটি ক্রয় কমিটির বৈঠকে উপস্থাপনের আগে ‘অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে মোট ব্যয় হবে ৫২১ কোটি ৯৪ লাখ ৪০ হাজার টাকা। তিনি জানান, বৈঠকে ভারত থেকে ৫০ হাজার টন নন-বাসমতি সিদ্ধ চাল ক্রয়ের আরেকটি পৃথক প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ চাল সরবরাহ করবে ‘মেসার্স ইটিসি এগ্রো-প্রসেসিং (ইন্ডিয়া) প্রাইভেট লিমিটেড’। এতে ব্যয় হবে ১৭১ কোটি ৯৭ লাখ ৪৪ হাজার টাকা।

অতিরিক্ত সচিব জানান, এ ছাড়া সিঙ্গাপুরের ‘মেসার্স এগ্রোকর্প ইন্টারন্যাশনাল পিটিই লিমিটেড’ থেকে ৫০ হাজার টন আতপ চাল ক্রয়ের আরেকটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ১৭৩ কোটি ১১ লাখ ৭ হাজার টাকা। এ ছাড়া চলতি ২০২১ সালের পঞ্জিকা বছরের প্রথম ছয় মাসের জন্য ১২ লাখ ৮৫ হাজার মেট্রিক টন পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানিসহ ৯টি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে মোট ব্যয় হবে ৫ হাজার ৭৮৫ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।

অতিরিক্ত সচিব মোস্তফা কামাল সংবাদিকদের আরও জানান, বৈঠকে জি-টু-জি-এর আওতায় ‘বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন’ (বিপিসি) কর্তৃক ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে বিভিন্ন ক্যাটাগরির আমদানিতব্য ২৫ লাখ ৫০ হাজার টন পরিশোধিত জ্বালানির পরিমাণ এবং জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত সময়ের জন্য ১২ লাখ ৮৫ হাজার টন পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানির একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে মোট ব্যয় হবে ৪ হাজার ৩৮৪ কোটি ৫৮ লাখ টাকা।  বৈঠকে ‘বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন’ (বিসিআইসি) কর্তৃক রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে ৫০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্র্যানুলার (অপশনাল) ইউরিয়া সার ক্রয়ের দুটি পৃথক প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৫৫ কোটি ৬৯ লাখ টাকা ব্যয়ে কাতারের ‘মুনতাজাত’ থেকে ১০ম লটে (শেষ লট) ২৫ হাজার মেট্রিক টন এবং ৫৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ব্যয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ২৫ হাজার টন সার কেনা হবে।

অতিরিক্ত সচিব জানান, বৈঠকে ‘চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন ইয়ার্ড ও টার্মিনালের জন্য প্রয়োজনীয় ইকুইপমেন্ট সংগ্রহ’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ৪টি কি গ্যান্ট্রি ক্রেন ক্রয়ের একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এগুলো সরবরাহ করবে চীনা প্রতিষ্ঠান ‘সাংহাই ঝেনহুয়া হেভি ইন্ডাস্ট্রিজ কোম্পানি লিমিটেড’। এতে ব্যয় হবে ২৪৩ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। তিনি আরও জানান, বৈঠকে চট্টগ্রাম বন্দরের একই প্রকল্পের আওতায় ১১টি রাবার টায়ার্ড গ্যান্ট্রি ক্রেন ক্রয়ের একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে মোট ব্যয় হবে ১৩০ কোটি ১৭ লাখ টাকা। দুটি প্রতিষ্ঠান এগুলো সরবরাহ করবে। এর মধ্যে ৫৯ কোটি ৩৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ৫টি রাবার টায়ার্ড গ্যান্ট্রি ক্রেন সরবরাহ করবে দুবাই ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ‘ট্রান্স গাল্ফ পোর্ট ক্রেন্স এলএলসি’ এবং ৭০ কোটি ৮৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ৬টি রাবার টায়ার্ড গ্যান্ট্রি ক্রেন সরবরাহ করবে চীনা প্রতিষ্ঠান ‘সাংহাই ঝেনহুয়া হেভি ইন্ডাস্ট্রিজ কোম্পানি লিমিটেড’।

বৈঠকে বিআরটিএ কর্তৃক ‘কালেকশন অব মোটর ভেহিক্যাল ট্যাক্সেস অ্যান্ড ফিস থ্রোয়াউ অন-লাইন ব্যাংকিং সিস্টেম’-এর আওতায় অন-লাইন ব্যাংকিং ব্যবস্থায় মোটরযানের কর ও ফি আদায়ের সম্ভাব্য অতিরিক্ত ৭৬ লাখ ৯৭ হাজার ৫৭৭টি ট্রানজেকশন সেবা ক্রয়ের জন্য চুক্তি মূল্যের অতিরিক্ত ৪৮ কোটি ২ লাখ টাকা ব্যয় বৃদ্ধির একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ক্রয় কমিটির বৈঠকের আগে ‘অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়’-এ কভিড-১৯ রোগীদের সেবা প্রদানে জরুরি ভিত্তিতে যন্ত্রপাতি ওষুধ ও অন্যান্য জিনিসপত্র এবং সেবা সরাসরি পদ্ধতিতে ক্রয়ের একটি প্রস্তাব ভূতাপেক্ষ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ কোটি ২৫ লাখ ৬৭ হাজার টাকা।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর