শনিবার, ৯ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

তবুও বেপরোয়া বিদ্রোহী প্রার্থীরা

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

তবুও বেপরোয়া বিদ্রোহী প্রার্থীরা

চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েও ‘টেনশনে’ দলীয় প্রার্থীরা। প্রায় প্রতিটি ওয়ার্ডেই দলের বিদ্রোহী ঠেকাতে বা সরে দাঁড়াতে বার বার হাই কমান্ডসহ কেন্দ্রীয় ও জেলার শীর্ষ নেতাদের একাধিক বৈঠকের পরও এসব বিদ্রোহীকে দমানো যায়নি। তবে নৌকা প্রতীক বা দলের মনোনীত মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরীকে জেতাতে ‘অনড়’ অবস্থানে রয়েছেন নগর আওয়ামী লীগসহ দলের নেতা-কর্মীরা। নগরীর প্রতিটি ওয়ার্ড পর্যায়ে নানামুখী উঠান বৈঠকের পাশাপাশি দেওয়া হচ্ছে কর্মীদের গঠনতান্ত্রিক নির্দেশনাও। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ছাড়াও শীর্ষ নেতারা বিদ্রোহীদের বিষয়ে নানা উদ্যোগ নিয়ে একাধিকবার বৈঠক করেছেন। দলের মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরীর বাসায় নগর আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায়ও প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন ও চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফসহ স্থানীয় নেতাদের উপস্থিতিতে বিদ্রোহীদের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে। এতে নানা হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন নেতারা। সভায় চসিক নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি ও করণীয় নিয়ে আলোচনা হয়। বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থীদের বিষয়ে বহিষ্কারের মতো কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ কেন্দ্রে পাঠানো হবে বলে সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক নেতা-কর্মী বলেন, নানা কারণে বিদ্রোহীরা দলের প্রার্থীদের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছেন। এসব প্রার্থীর কারণে অনেক ওয়ার্ডেই মূল প্রার্থী বা দলের প্রার্থীর জয় কঠিন হয়ে উঠতে পারে। ওয়ার্ড পর্যায়ে দ্বিধাবিভক্তি থাকলে তার প্রভাব দলীয় মেয়র প্রার্থীর ক্ষেত্রেও পড়তে পারে। এমনও আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে কৌশল হিসেবে জামায়াত-বিএনপি আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীকে ভোট দিয়ে দিতে পারে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দলের শৃঙ্খলা ও স্বার্থ পরিপন্থী কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকতে সংশ্লিষ্ট সবার প্রতিও আহ্বান জানিয়ে বিভিন্ন গণ-মাধ্যমের সাংবাদিকদের বলেছেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের বিরুদ্ধে দল থেকেই যারা ‘স্বতন্ত্র প্রার্থী’ হিসেবে নির্বাচন করছেন, তাদের আগামীতে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হবে না। সম্প্রতি চট্টগ্রামে এসে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেছেন, চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে দল সমর্থিত প্রার্থীর বাইরে যারা সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হিসেবে থাকবেন এবং বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে কাজ করবেন, তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই নির্বাচনকে গুরুত্ব দিয়ে জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। বিদ্রোহীদের বিষয়েও দল কঠোর অবস্থানে রয়েছে। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সিটি নির্বাচনের ৪১টি ওয়ার্ডের মধ্যে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে আওয়ামী লীগের ১২ জন বর্তমান কাউন্সিলরসহ প্রায় অর্ধ-শতাধিক বিদ্রোহী হিসেবে প্রার্থী রয়েছেন। তাছাড়া প্রতিটি ওয়ার্ডেই একের অধিক প্রার্থী হওয়ায় দলের কাউন্সিলর প্রার্থীরা টেনশনেই আছেন। চলতি মাসের ২৭ জানুয়ারি চসিক নির্বাচন হতে যাচ্ছে। এর আগে গত ২৯ মার্চ চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোট গ্রহণের কথা থাকলেও করোনা পরিস্থিতির কারণে ২১ মার্চ নির্বাচন স্থগিত করা হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর