রবিবার, ১০ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

বাছাইয়ের নামে মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

যাচাই-বাছাইয়ের নামে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের অপমানিত করার অভিযোগ উঠেছে। লাল বই, মুক্তিবার্তা, ভারতীয় তালিকা ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় ঘোষিত তালিকায় নাম থাকার পরও বরিশালের অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম মূল তালিকা থেকে বাদ দিয়ে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের যাচাই-বাছাই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এতে অপমানিত, বিব্রত  ও ক্ষুব্ধ একাত্তরের রণাঙ্গনের সূর্যসন্তানরা। গতকাল বেলা ১১টায় বরিশাল মহানগরের ফকিরবাড়ী রোডে বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন মুক্তিযোদ্ধারা।

সংবাদ সম্মেলনে নিজে অপমানিত হয়েছেন দাবি করে স্বাধীনতাযুদ্ধে শহীদ সুধীর কুমার চক্রবর্তীর ছেলে মুক্তিযোদ্ধা তপন কুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘২০১৯ সালের ডিসেম্বরে রাজাকারের তালিকায় মুক্তিযোদ্ধাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় দায়িত্বহীনতার পরিচয় দেয়।

 ওই সময় মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই তালিকায় বরিশাল জেলায় যাদের নাম এসেছে তার মধ্যে ৫ নম্বর ক্রমিকে রয়েছি আমি। ২৬ নম্বরে রয়েছেন জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক ’৬৯-এর গণআন্দোলনে বরিশাল সর্বদলীয় ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের সভাপতি ও বিএম কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি খান আলতাফ হোসেন ভুলু, ১২ নম্বরে প্রয়াত সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মিন্টু বসু এবং ১৭০ নম্বর তালিকায় তরুণ দেবসহ অনেকের নাম।’

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের যাচাই-বাছাই সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, যেসব গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধার নাম লাল বই, মুক্তিবার্তা, ভারতীয় তালিকা বা মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় ঘোষিত ৩৩টি প্রমাণকের একটিতেও থাকবে তারা এ যাচাই-বাছাই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হবেন না।

সংবাদ সম্মেলনে তপন কুমার চক্রবর্তী দাবি করেন, তিনি ভারতের বিহারে ট্রেনিং নিয়ে ৯ নম্বর সেক্টরে মেজর জলিলের অধীন সাতক্ষীরাসহ বিভিন্ন এলাকায় সম্মুখযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন। লাল বইতে তাঁর নাম রয়েছে। এ ছাড়া জেনারেল ওসমানী স্বাক্ষরিত দেশরক্ষা সংগ্রামের সনদ, বেসামরিক গেজেট ও মন্ত্রণালয়ের সাময়িক সনদপত্র রয়েছে তাঁর। অথচ তাঁর নাম যাচাই-বাছাই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে তাঁকে অপমানিত করা হচ্ছে।

একইভাবে খান আলতাফ হোসেন ভুলুসহ বরিশালের অনেকের নাম রয়েছে যাচাই-বাছাই তালিকায়। যাদের সামনে ডেকে তাঁদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়, তাদের অনেকেই মুক্তিযোদ্ধা নন। তাদের সামনে সাক্ষাৎকারের নামে মুক্তিযোদ্ধাদের ডেকে অপমানিত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তপন চক্রবর্তীর মেয়ে জেলা বাসদের সদস্যসচিব ডা. মনীষা চক্রবর্তী।

সংবাদ সম্মেলনে যাচাই-বাছাইয়ের নামে অবিলম্বে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের হয়রানি ও অপমান বন্ধের দাবি জানান স্বাধীন বাংলা ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের সদস্য খান আলতাফ হোসেন ভুলু।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর