সোমবার, ১১ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

রোহিঙ্গাদের মিয়ানমার ফেরত নেবে, তবে কখন বলা মুশকিল : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

রোহিঙ্গাদের মিয়ানমার ফেরত নেবে, তবে কখন বলা মুশকিল : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

রোহিঙ্গাদের ফেরাতে মিয়ানমারের আন্তরিকতার অভাব রয়েছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, মিয়ানমার প্রতিবেশী রাষ্ট্র। তাদের সঙ্গে আলাপ হয়েছে। তারা বারবার বলছে, সত্যতা যাছাইয়ের পর তারা রোহিঙ্গাদের নিয়ে যাবে। তারা কখনো বলেনি, রোহিঙ্গাদের নেবে না। আমরা বলেছি, তাদের নিয়ে যাও, তবে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। তারা অঙ্গীকার করেছে নিয়ে যাবে। কিন্তু এরপরও আজ প্রায় সাড়ে তিন বছরে একজন রোহিঙ্গাও ফেরত যায়নি। কারণ তাদের মধ্যে আন্তরিকতার অভাব রয়েছে। এরপরও আমরা আশাবাদী, রোহিঙ্গাদের তারা  ফেরত নেবে। তবে কখন নিয়ে যাবে, তা বলা মুশকিল মন্তব্য করেন তিনি। গতকাল দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে মেজর (অব.) মোহাম্মদ এমদাদুল ইসলামের দুটি বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

 রোহিঙ্গাদের নিয়ে লেখা ‘শেষ সীমান্তের পর কোথায় যাব আমরা’ এবং ‘রোহিঙ্গা : নিঃসঙ্গ নিপীড়িত জাতিগোষ্ঠী’ শীর্ষক বইয়ের ওই প্রকাশনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীন আখতার। বিশেষ অতিথি ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল

আবদুল মোমেন বলেন, রোহিঙ্গাদের ফেরাতে সরকার যেসব উদ্যোগ নিয়েছে তা ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। আমরা প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত, চীন, থাইল্যান্ডসহ সব দেশে গেছি। সবাই স্বীকার করেছে রোহিঙ্গা সমস্যা সৃষ্টি করেছে মিয়ানমার। তাই সমস্যা নির্মূলও করবে তারা। সবাই বলেছে, স্থায়ী সমাধান হলো লোকগুলো ফিরিয়ে নেওয়া। সুতরাং সেই দিন থেকে এখনো আমাদের পররাষ্ট্রনীতি চালকের আসনে আছে। আমেরিকা বলেন, ইউরোপ বলেন- সবাই এক বাক্যে বলছে মিয়ানমারকেই রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে হবে।

তিনি বলেন, দুনিয়ার কোথাও ১১ লাখ মানুষকে জায়গা দেওয়ার কোনো নজির নেই। সিরিয়া, ইয়েমেন ও ইরাকের ১০ লাখ বাস্তুহারা মানুষ ইউরোপের ২৭টি দেশ জায়গা দিতে গিয়ে হিমশিম খেয়েছে। আর এখানে ১১ লাখ মানুষকে মানবিক কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশ্রয় দিয়েছেন। প্রথমদিকে বিদেশিরা কেউ সাহায্য করেনি। এখানকার লোকজন তাদের ঠাঁই দিয়েছে, খাবার দিয়ে সাহায্য করেছে। আমরা নতুন আদর্শ সৃষ্টি করেছি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৮ ও ১৯৯২ সালে দেখেছি, তখন অনেক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছিল আবার নিয়েও গেছে। ১৯৯২ সালে প্রায় ২ লাখ ৫৩ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আসে। পরবর্তীতে আলোচনা মাধ্যমে তারা ২ লাখ ৩০ হাজারকে নিয়ে যায়। ইতিহাস আছে তারা নিয়ে গেছে, সেজন্য আমরা আশাবাদী বর্তমানে ১১ লাখ রোহিঙ্গাকেও নিয়ে যাবে। কিন্তু কখন নিয়ে যাবে, তা বলা মুশকিল। রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর জন্য যে ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার বাংলাদেশ সরকার সব নিয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর