শিরোনাম
মঙ্গলবার, ১২ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

টিকিটে বাড়তি টাকা আদায়ের অভিযোগ

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ জরুরি বিভাগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগের টিকিট কাউন্টারের সামনে দুটি সাইনবোর্ড। তাতে লেখা আছে, ‘রোগীর টিকিট মূল্য ১০ টাকা। রোগীর ভর্তি ফি ১৫ টাকা। উপরোক্ত টাকার বেশি দিবেন না। দাবি করলে কর্তৃপক্ষকে জানান।’ কিন্তু এখানে নেওয়া হয় বাড়তি টাকা। এই বাড়তি টাকা নেওয়ার ব্যাপারে কেউ কর্তৃপক্ষকেও জানান না। কাউন্টারে টিকিটের অতিরিক্ত মূল্য নেওয়ার অপরাধে সম্প্রতি এক কর্মচারীকে পাবনা মানসিক হাসপাতালে বদলি করা হয়েছে। তবু থামেনি বাড়তি টাকা আদায়। অনুসন্ধানে জানা গেছে, রোগীর ভর্তি ফি’র ১৫ টাকার বদলে নেওয়া হয় ২০ টাকা। খুচরা নেই জানিয়ে পাঁচ টাকা বেশি নেওয়া হয়। এ টাকা দায়িত্বরত দুই কর্মচারীই সমান হিসেবে ভাগ করে নেন। তারা কখনো ভর্তি ফি ২০ টাকারও বেশি নিয়ে থাকেন বলে অভিযোগ আছে। উত্তরবঙ্গের বৃহৎ এই হাসপাতালটিতে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৭০০ জন রোগী ভর্তি হন। পাঁচ টাকা করে বেশি নেওয়া হলে তা তিন হাজার ৫০০ টাকায় দাঁড়ায়। আর মাসে হয় এক লাখ পাঁচ হাজার টাকা। গত ২ জানুয়ারি ‘আমাদের রাজশাহী সিটি’ নামের একটি ফেসবুক আইডিতে এ ব্যাপারে পোস্ট দেওয়া হয়।

 ‘ন্যায়বান বিজয়ী’ নামের ফেসবুক আইডি থেকে দেওয়া পোস্টে বলা হয়, ‘রাজশাহী মেডিকেল হাসপাতালে দুর্নীতিতে সাধারণ জনগণ অতিষ্ঠ। রোগী ভর্তির টিকিট ১০ টাকার জায়গায় ২০ টাকা নিয়ে থাকে এবং ভর্তি ফরম ১৫ টাকার জায়গায় ৩০ টাকা জোরপূর্বক নিয়ে থাকে। এ থেকে আমরা মুক্তি চাই।’ এমন পোস্ট নজরে আসার পর ২ জানুয়ারি রাত সাড়ে ৮টার দিকে জরুরি বিভাগের সামনে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে অন্তত ১৫ জন রোগীকে ভর্তির ক্ষেত্রে বাড়তি টাকা আদায়ের চিত্র পাওয়া যায়।

রোগীকে ভর্তি করতে হলে দুবার টিকিট কাউন্টারে যেতে হয়। প্রথমে ১০ টাকার টিকিট নিয়ে জরুরি বিভাগের চিকিৎসকের কাছে দেখাতে হয়। তিনি রোগীকে ভর্তি করার প্রয়োজন মনে করলে ভর্তি ফরম কিনতে হয়। প্রথমবার টিকিটের দাম ১০ টাকা রাখা হলেও পরের বার নেওয়া হয় ১৫ টাকার পরিবর্তে ২০ টাকা। মূল্য ১৫ টাকা লেখা থাকার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে কাউন্টার থেকে বলা হয়, তাহলে খুচরা ১৫ টাকা দিন। জানা গেছে, বাড়তি নেওয়া এই টাকা কাউন্টারে দায়িত্বে থাকা হাসপাতালের কর্মচারীরা ভাগ-বাটোয়ারা করে নেন। সময় ভাগ করে নিয়ে টিকিট কাউন্টারে এখন ১৪ জন কর্মচারী দায়িত্ব পালন করেন। এর মধ্যে ১২ জনই দৈনিক মজুরিভিত্তিক আর দুজন নিয়মিত কর্মচারী। দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারীরাই অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার দিকে বেশি মনোযোগী।

রামেক হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস বলেন, কাউন্টারে টিকিটের অতিরিক্ত মূল্য নেওয়ার কারণে সম্প্রতি এক কর্মচারীকে পাবনায় বদলি করা হয়েছে। আরও কারও নামে যদি এ অভিযোগ পাওয়া যায় তাহলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর স্বজনদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের সুযোগ নেই।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর