বুধবার, ২০ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

৫৮ বছরেও হয়নি স্যুয়ারেজ ব্যবস্থা

চট্টগ্রাম ওয়াসা

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম নগর ও বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রাম নগরে ওয়াসা প্রতিষ্ঠা হয় ১৯৬৩ সালে। কিন্তু প্রতিষ্ঠার ৫৮ বছর পরও চট্টগ্রাম ওয়াসা নগরে স্যুয়ারেজ ব্যবস্থা চালু করতে পারেনি। সুয়্যারেজ ব্যবস্থা না থাকায় নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ, ঘটছে স্বাস্থ্যহানি।  তবে চট্টগ্রাম ওয়াসা ২০১৮ সালে ৩ হাজার ৮০৪ কোটি ৫৮ লাখ ৭৭ হাজার টাকার একটি সুয়্যারেজ প্রকল্প গ্রহণ করে। ২০২৬ সালে প্রকল্পটি শেষ হওয়ার কথা। নগরকে ছয় জোনে ভাগ করা হয়। প্রথম ধাপে নগরীর হালিশহর আনন্দবাজার এলাকায় ১৬৫ একর জায়গায় সুয়্যারেজ ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। বাকি পাঁচটি জোনের প্রি প্রকল্প তৈরি হয়েছে। আগামী ২৮ ও ৩১ জানুয়ারি এবং ২ ফেব্রুয়ারি টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।  জানা যায়, ২০১৭ সালের ১২ মার্চ পতেঙ্গায় বোট ক্লাব চত্বরে চট্টগ্রাম ওয়াসার ‘শেখ হাসিনা পানি শোধনাগার’ প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামে সুয়্যারেজ সিস্টেম চালুর কথা বলেন। কর্ণফুলী নদীকে বাঁচাতে এবং পরিবেশের স্বার্থে তিনি চট্টগ্রামে এই প্রকল্প তৈরির জন্য তখন নির্দেশনা দিয়েছিলেন। সেই নির্দেশনার পর প্রকল্প তৈরি, মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন, পরিকল্পনা কমিশন ও একনেক হয়ে ২০১৮ সালের ৭ নভেম্বর সুয়্যারেজ প্রকল্প অনুমোদন পায়। ১৮০ কিলোমিটার পাইপ নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সুয়্যারেজ সিস্টেম তৈরি করা হবে। প্রথম ধাপে আগ্রাবাদ, হালিশহর, নিউমার্কেট, পাথরঘাটা, সদরঘাট, পাঠানটুলী, চৌমুহনী, লালখান বাজার, ওয়াসা মোড়, কাজীর দেউড়িসহ আশপাশের এলাকার বাসার সেপটিক ট্যাংকের পাইপের সঙ্গে সুয়্যারেজ সিস্টেমের পাইপের সংযোগ করা হবে। এর মাধ্যমে সেপটিক ট্যাংকের বর্জ্য সরাসরি সুয়্যারেজের পাইপে চলে যাবে।

চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম বলেন, ছয় জোনে ভাগ করে সুয়্যারেজ সিস্টেম চালু করা হবে। প্রথম জোনে হালিশহর এলাকায় দুটি সর্বাধুনিক ট্রিটমেন্ট প্লান্ট তৈরি করা হবে। এর মধ্যে একটি পাইপ লাইনের মাধ্যমে আনা বর্জ্য প্রতিদিন নয় কোটি লিটার পরিশোধন করে পরিবেশ সম্মতভাবে সাগরে ফেলা হবে। অপর প্লান্টটিতে ফেক্যাল প্লাসের (বিশেষ ধরনের গাড়িতে বাসা বাড়ি থেকে সংগ্রহ করা বর্জ্য) মাধ্যমে সংগৃহীত দৈনিক ৩০০ টন বর্জ্য পরিশোধন করা যাবে।

জানা যায়, চট্টগ্রাম নগরে প্রায় ৭০ লাখ বাসিন্দার বসবাস। ফলে প্রতিদিনই তৈরি হচ্ছে পয়োবর্জ্য। এসব বর্জ্য সরাসরি নগরীর নালা ড্রেন হয়ে নদী-সাগরে গিয়ে পড়ছে। তাছাড়া নগরের বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে সেপটিক ট্যাংক থাকলেও পর্যায়ক্রমে সেগুলো নালাসহ বিভিন্ন মাধ্যমে এসে পরিবেশ নষ্ট করে। বর্তমানে নগরে প্রায় ২০ হাজার বহুতল ভবন আছে। এসব ভবনের অর্ধেক সেপটিক ট্যাংকের নিচে ফুটো আছে। যেখান দিয়ে বর্জ্য অনায়াসে ভবনের পাশের ড্রেনে এসে পড়ে। এই অবস্থার অবসানে নগরীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর