বুধবার, ২০ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

জঙ্গিবাদের কুফল নিয়ে বয়ানের আহ্বান ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিবেদক

জুমার নামাজের বয়ানে এবং প্রতিনিয়ত মসজিদে নামাজের আগে জঙ্গিবাদের কুফল সম্পর্কে জনগণকে জানাতে আলেমদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক এমপি। এতে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়বে বলে তিনি মনে করেন। গতকাল রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশন ভবনে ‘সহিংস চরমপন্থা প্রতিরোধে ইসলামিক বিজ্ঞদের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ইসলাম কখনই জঙ্গিবাদ সমর্থন করে না। একমাত্র জনগণ সচেতন হলে জঙ্গিবাদ, মাদক থেকে অনেকাংশে রেহাই পাওয়া যাবে। এতে দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে। জঙ্গিবাদ সম্পর্কে জনগণকে সচেতন রাখতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনসহ ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে সারা দেশে সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। ওয়াজ মাহফিলে উসকানিমূলক বক্তব্যের বিষয়ে ভাবছে পুলিশ : সেমিনারে মুক্ত আলোচনায় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার ও কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম জানান, ওয়াজ মাহফিলে যারা উসকানিমূলক বক্তব্য দেন তাদের বিষয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে ভেবে দেখা হচ্ছে।

 বাংলাদেশে আল-কায়েদার কোনো অস্তিত্ব নেই, এমনকি কোনো শাখাও নেই। বিভিন্ন সময় নানা অপপ্রচার চালিয়ে অনেকে বাংলাদেশে আল-কায়েদার অস্তিত্ব প্রমাণ করার চেষ্টা করছে।

সিটিটিসি প্রধান বলেন, যে লোকটির ইসলাম সম্পর্কে স্পষ্ট জ্ঞান রয়েছে সে কখনই জঙ্গিবাদে জড়ায় না। যাদের ইসলাম সম্পর্কে ভাসা ভাসা জ্ঞান, তারা জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ছে। আলেমরা বিভিন্ন সময় বয়ানের মাধ্যমে জনগণকে জঙ্গিবাদ, মাদক সম্পর্কে সচেতন করতে পারেন। জনগণের কাছে ইসলামের সঠিক ব্যাখ্যা দিতে, জনগণকে সচেতন করতে আলেম-ওলামাদের ভূমিকা অনেক। জনগণ আলেমদের কথা মনোযোগ দিয়ে শোনেন। ইসলামের সঠিক ব্যাখ্যা জনগণের কাছে সঠিকভাবে তুলে ধরতেও আলেমরা ভূমিকা রাখছেন।

মনিরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। আপাতত বাংলাদেশে বড় কোনো ধরনের জঙ্গি হামলার ঝুঁকি নেই। তবে সচেতন থাকতে হবে কেউ যেন নাশকতামূলক কার্যকলাপ চালাতে না পারে। সবাই সবার জায়গা থেকে দায়িত্ব পালন করলে জঙ্গিবাদ দমন করা সম্ভব। জঙ্গিবাদ দমনে বাংলাদেশ বিশ্বের রোল মডেল। জঙ্গিবাদ থেকে বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশ নিরাপদ। তবে শুধু আভিযানিক ব্যবস্থা জঙ্গিবাদ দমনে যথেষ্ট নয়। এটি প্রতিরোধে সচেতনতা বাড়ানোই সবচেয়ে বড় বিষয়।

জঙ্গিবাদ বিষয়ে আলেমদের মধ্যে বিভেদ রয়েছে বলে মন্তব্য করে সিটিটিসি প্রধান বলেন, জঙ্গিবাদ যেহেতু একটি আদর্শের বিষয়, যারা জেনেবুঝে রাজনৈতিক মদদে জঙ্গিবাদের দিকে যাচ্ছে তাদের পুনর্বাসনের সুযোগ সীমিত। যারা না বুঝে ধর্মের ভুল ব্যাখ্যায় ভুল পথে আদিষ্ট হয়, তারা যদি নিজেদের ভুল বুঝতে পারে তাহলে তাদের পুনর্বাসনের প্রচেষ্টা নেওয়া হবে। কারাগারগুলোতে কাউন্সেলিংয়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। হলি আর্টিজানের মতো ঘটনা যেন না ঘটে, সে ব্যাপারে আলেম সমাজসহ সবাইকে সচেতন থাকার পরামর্শ দেন তিনি।

সম্প্রতি কুষ্টিয়ায় ভাস্কর্য ভাঙচুরের পর আলেমদের নিয়ে এক পুলিশ কর্মকর্তার বক্তব্যের বিষয়ে তিনি বলেন, এটা পুলিশ বাহিনীর কোনো বক্তব্য নয়। এটা ওই কর্মকর্তার নিজস্ব বক্তব্য। সেমিনারে ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা ছাড়াও আলেম-ওলামারা অংশ নেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর