শুক্রবার, ২২ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

স্বস্তিতে ফিরছেন যুক্তরাজ্য প্রবাসীরা, সিলেটে আতঙ্ক

কোয়ারেন্টাইন শিথিল

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

করোনার ছোবলে দিশাহারা যুক্তরাজ্য থেকে ফিরলে থাকতে হবে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে। বাংলাদেশ সরকারের এমন সিদ্ধান্তের পর দেশে ফেরা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন যুক্তরাজ্য প্রবাসীরা। আশঙ্কাজনকভাবে কমে যায় যাত্রী। প্রায় শূন্য আসন নিয়ে দেশে ফিরতে থাকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের উড়োজাহাজ। কঠোর কোয়ারেন্টাইনের ওই সিদ্ধান্তের পর চারটি ফ্লাইটে যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফেরেন মাত্র ১৮৫ জন। পরে কোয়ারেন্টাইনের মেয়াদ শিথিল করে চার দিন করা হলে দেশে ফেরা নিয়ে আগ্রহ বাড়ে প্রবাসীদের। সবশেষ দুটি ফ্লাইটে দেশে এসেছেন ৩১৩ যুক্তরাজ্য প্রবাসী। এর সিংহভাগই সিলেটের। কোয়ারেন্টাইনের মেয়াদ শিথিল হওয়ায় স্বস্তি নিয়ে যুক্তরাজ্য প্রবাসীরা দেশে ফিরলেও হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত না হওয়ায় সংক্রমণ নিয়ে আতঙ্কিত সিলেটের মানুষ। যুক্তরাজ্য থেকে সরাসরি সিলেটে বিমানের সবশেষ ফ্লাইট আসে গতকাল। ২৯৮ আসনের উড়োজাহাজটিতে আসেন ১৮১ যাত্রী। এর ১৪৮ জনই ছিলেন সিলেটের। বাকি ৩৩ জন ঢাকায় যান। জানা গেছে, ১ জানুয়ারি থেকে যুক্তরাজ্য-ফেরত যাত্রীদের কোয়ারেন্টাইনের নতুন সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। দেশে এলে তাদের বাধ্যতামূলক ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখার সিদ্ধান্ত হয়। তবে এ সিদ্ধান্ত বদলে যায় ১৪ জানুয়ারি। ওই দিন নতুন করে সিদ্ধান্ত হয়, দেশে ফেরা যুক্তরাজ্য প্রবাসীদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে মাত্র চার দিন। প্রথম সিদ্ধান্তে প্রবাসীদের দেশে ফেরার আগ্রহ যেভাবে কমেছিল, দ্বিতীয় সিদ্ধান্তে সেভাবেই বাড়তে থাকে আগ্রহ।

এদিকে যুক্তরাজ্যে বর্তমানে করোনার সংক্রমণ বাড়তে থাকায় প্রবাসীরা বাংলাদেশকেই নিরাপদ মনে করছেন। তাই পরিবার নিয়ে দেশে ফিরছেন তারা। দেশে কোয়ারেন্টাইনের মেয়াদ শিথিল হওয়ায় তাদের সে আগ্রহ আরও বেড়েছে। বিমানসূত্র জানান, ৪, ৭, ১১ ও ১৪ জানুয়ারির ফ্লাইটে যুক্তরাজ্য থেকে দেশে আসেন ১৮৫ প্রবাসী। ১৪ জানুয়ারি কোয়ারেন্টাইন শিথিলের সিদ্ধান্তের পর ১৮ জানুয়ারি ও গতকাল মিলিয়ে এসেছেন ৩১৩ জন। এ ৩১৩ প্রবাসীকে চার দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হচ্ছে। এরপর তাদের পালন করতে হবে ১০ দিনের হোম কোয়ারেন্টাইন। কিন্তু এর আগে প্রবাসীরা বাড়ি ফেরার পর কোয়ারেন্টাইন না মানায় নতুন করে ফেরা প্রবাসীদের নিয়েও আছে শঙ্কা। সাধারণ মানুষ মনে করছে, করোনা আক্রান্তের মধ্যে উপসর্গ দেখা দিতে অনেক ক্ষেত্রে বেশি সময় লাগে। ফলে এসব প্রবাসীর মাধ্যমে সংক্রমণের ঝুঁকি আছে। এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদফতর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ডা. আনিসুর রহমান বলেন, দেশে ফেরা প্রবাসীদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রেখে চতুর্থ দিন নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষায় কেউ পজিটিভ হলে তাকে শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে আইসোলেশনে রাখা হবে। নেগেটিভ হলে ১০ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনের পরামর্শ দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হবে। তিনি বলেন, সবাই করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট নিয়ে যুক্তরাজ্য থেকে আসছেন। তবে সেখানে টেস্ট করানোর পর থেকে দেশে আসা পর্যন্ত যে কেউ আক্রান্ত হতে পারেন। এ জন্য চার দিনের কোয়ারেন্টাইনে রেখে ফের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তবে হোম কোয়ারেন্টাইন সঠিকভাবে পালন করা না হলে সিলেটে সংক্রমিত হওয়ার শঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর