মঙ্গলবার, ২৬ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

বিমানে দুর্নীতি নেই বলছি না

সংসদে প্রতিমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিমানে দুর্নীতি নেই বলছি না

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী ‘বাংলাদেশ ট্র্যাভেল এজেন্সি (নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) বিল-২০২১’ পাসের আগে বিরোধী দলের সমালোচনার জবাবে বলেছেন, আমি বলছি না (বিমানে) দুর্নীতি নেই। সীমিত আকারে আছে। যে জড়িত তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। মন্ত্রণালয় অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। জিডিএস সিস্টেম, টিকিট না পাওয়া এগুলো ছিল। আমরা তদন্ত করেছি। কিছু স্টেপ নিয়েছি, যাতে কোনো সমস্যা না হয়। টিকিটিং সিস্টেমে যাতে সমস্যা না হয়। ট্র্যাভেল এজেন্সি, এয়ারলাইনসগুলোর অনেকে ক্ষতিগ্রস্ত করোনাভাইরাসে। অনেক সংকটের মধ্যে চলছে। এখন কেউ বলতে পারবে না টিকিট নেই। আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। এজেন্সি ও ভোক্তা- উভয়ের স্বার্থে এ বিল আনা হয়েছে। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের একাদশ তথা শীতকালীন অধিবেশনে গতকাল তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে আলোচিত বিলের ওপর জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও সংশোধনী প্রস্তাব তোলার সময় বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ও বিএনপির এমপিরা বিমানের টিকিটসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে মন্ত্রণালয়ের সমালোচনা করেন। জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, বিমানের ইতিহাস সুখকর নয়। বেশির ভাগ সময় এটি লস করেছে। লাভ করেছে কম সময়। বিমানের ম্যানেজমেন্টের দুর্বলতার কারণে লাভ করা মুশকিল। যারা এজেন্ট তারা টিকিট বিক্রি করে টাকা দেয় না। এজেন্টরা কারসাজি করে। টিকিট পাওয়া যায় না। কিন্তু সিট ফাঁকা থাকে। এর জন্য কী করবেন? বিএনপির রুমিন ফারহানা বলেন, সনদ বাতিল না করে শুধু অর্থদন্ড দেওয়ার জন্য বিলটি আনা হয়েছে। ৫৩ থেকে ১০০টি কোম্পানি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এজেন্সিগুলো নিজেরা ক্রেতা সেজে টিকিট বুক করে রাখে। এতে ক্ষতি হয় বিমানের। যে এজেন্সিগুলোর কথা বলা হচ্ছে, সেগুলোর নিয়ন্ত্রক মন্ত্রণালয়। অদক্ষ ব্যবস্থাপনার জন্য বিমান লসে। আড়াই হাজার কোটি টাকা দেনা পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের কাছে। উড়োজাহাজ কেনা, ইজারা দেওয়া, ফুড ক্যাটারিংয়ে অনিয়ম হয়। এজেন্সি, জিডিএস সিন্ডিকেট বহাল আছে। বিএনপির হারুনুর রশীদ বলেন, ট্র্যাভেল এজেন্সিগুলোর স্বার্থ রক্ষার জন্য বিলটি আনা হয়েছে।

ট্র্যাভেল এজেন্সি বিল পাস : ট্র্যাভেল এজেন্সিগুলোর অপরাধের জন্য লাইসেন্স বাতিলের পরিবর্তে নির্ধারিত জরিমানা আদায়পূর্বক লাইসেন্স নবায়ন, মালিকানা হস্তান্তর এবং দেশ-বিদেশে শাখা খোলার সুযোগ রেখে ‘বাংলাদেশ ট্র্যাভেল এজেন্সি (নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) বিল-২০২১’ পাস করেছে সংসদ। ২০১৩ সালের এ সংক্রান্ত আইন সংশোধন করতে বিলটি আনা হয়। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে গতকাল বিলটি পাসের প্রস্তাব করেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী। পরে কণ্ঠভোটে তা পাস হয়। এর আগে বিলের ওপর আনীত জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে  প্রেরণ এবং কয়েকটি ব্যতীত সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নাকচ হয়ে যায়।  সংশোধিত আইনে যৌক্তিক কারণে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিবন্ধনের আবেদন করতে না পারলে পরবর্তী ছয় মাসের মধ্যে জরিমানা দিয়ে এজেন্সিগুলো আবেদন করতে পারবে। বিলটি পাস হওয়ায় এখন ট্র্যাভেল এজেন্সিগুলো সরকারের অনুমোদন নিয়ে দেশে-বিদেশে শাখা অফিস খুলতে পারবে।

 তবে অনুমোদন ছাড়া কোনো ট্র্যাভেল এজেন্সি ঠিকানা পাল্টাতে পারবে না, সেই শর্তও দেওয়া হয়েছে সংশোধিত আইনে।

বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কে বলা হয়েছে, আইনটি অনুমোদিত হলে নবায়ন আবেদন দাখিলে বিলম্বের ও অপরাধের জন্য লাইসেন্স বাতিলের পরিবর্তে বিধি দ্বারা নির্ধারিত জরিমানা আদায়পূর্বক সনদ নবায়ন এবং নির্ধারিত শর্ত সাপেক্ষে মালিকানা হস্তান্তর দেশে-বিদেশে শাখা অফিস খোলার সুযোগ সৃষ্টি হবে। ফলে ট্র্যাভেল এজেন্সি হতে কাক্সিক্ষত সেবাপ্রাপ্তি সহজ হবে এবং সরকারের রাজস্ব আয়ও বৃদ্ধি পাবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর