যুক্তরাজ্য থেকে দেশে আসা প্রবাসীদের নিয়ে আগে থেকেই ভয় আর উৎকণ্ঠা ছিল। দেশটিতে নতুন করে করোনা বিপর্যয় শুরু হওয়ায় প্রবাসীদের মাধ্যমে বাংলাদেশে নতুন বিপদ দেখা দেয় কিনা, তা নিয়ে শঙ্কিত ছিলেন অনেকেই। সেই শঙ্কাই যেন সত্যি হয়ে চোখ রাঙাতে শুরু করেছে। যুক্তরাজ্য থেকে দেশে আসা সিলেটের ২৯ প্রবাসী প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে থাকা অবস্থায়ই করোনায় আক্রান্ত বলে শনাক্ত হয়েছেন। তাদের ভর্তি করা হয়েছে হাসপাতালে। এসব প্রবাসীর করোনা আক্রান্তের খবরে উদ্বেগ আর আতঙ্ক ছড়াতে শুরু করেছে সিলেটে। আক্রান্ত প্রবাসীরা করোনার নতুন স্ট্রেইন বহন করছেন কিনা, তা জানতে জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) ৭ সদস্যের টিম সিলেটে পৌঁছেছে। জানা গেছে, ভয়ংকর করোনাভাইরাস প্রতিনিয়ত রূপ বদলাচ্ছে। এর নতুন নতুন স্ট্রেইন উদ্বেগ বাড়াচ্ছে বিশ্বজুড়ে। যুক্তরাজ্যে করোনার নতুন স্ট্রেইন এখন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। দেশটিতে প্রতিনিয়ত শত শত মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন এই নতুন স্ট্রেইনের ছোবলে। কিন্তু তারপরও যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের বিমান যোগাযোগ বন্ধ হয়নি। ফলে নিয়মিত শত শত যুক্তরাজ্য প্রবাসী আসছেন দেশে, যাদের সিংহভাগই সিলেটের বাসিন্দা। ২১ জানুয়ারি যুক্তরাজ্য থেকে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছেন ১৫৭ প্রবাসী। বিমানবন্দর থেকে তাদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য নেওয়া হয় পাঁচটি হোটেলে। নিয়ম অনুসারে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তাদের নমুনা সংগ্রহ করে করোনা টেস্ট করানো হয় গত রবিবার। গত সোমবার আসা ফলাফলে দেখা যায় ২৮ জনই করোনা পজিটিভ। পরে তাদের সিলেট সদরের খাদিমপাড়াস্থ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর আগে ১৮ জানুয়ারি আসা প্রবাসীদের মধ্যে একজন করোনা পজিটিভ ছিলেন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ ২৯ প্রবাসী করোনা আক্রান্তের খবরে সিলেটে উদ্বেগ বেড়েছে।

 বিশেষ করে তারা করোনার ভয়ংকর নতুন স্ট্রেইন বহন করছেন কিনা, এ নিয়েই শঙ্কা বেশি। বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে আইইডিসিআরের ৭ সদস্যের একটি দল গতকাল সিলেটে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. প্রেমানন্দ ম-ল। তিনি জানান, ঢাকার টিম আক্রান্তদের নমুনা সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে।

এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদফতর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ডা. আনিসুর রহমান বলেন, যুক্তরাজ্যে করোনা দ্রুত ছড়াচ্ছে। যুক্তরাজ্য থেকে আসা যারা আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন, তারা হয়তো সেখানে টেস্ট করানোর পর কারও সংস্পর্শে আক্রান্ত হয়েছেন। কিংবা অনেক ক্ষেত্রে ৩০ ভাগ ফলাফল ফলস আসে। সেখানে পরীক্ষায় হয়তো ফলস ফলাফল এসেছিল। তবে আক্রান্ত ২৯ জনই সুস্থ আছেন, তাদের পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।