বুধবার, ২৭ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

প্রতিবন্ধিতার আড়ালে ছিনতাইয়ের ফাঁদ

হামিদুল হত্যায় গ্রেফতার ৫

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা চালান হাতকাটা শাকিল ওরফে ডুম্বাস। শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় মানুষের সহানুভূতি ঝরত তার প্রতি। পুলিশও রিকশাটি চলাচলে বাধা দিত না। এ সুযোগে টার্গেট ব্যক্তিকে রিকশায় উঠিয়ে সর্বস্ব লুটে নিত তার চক্রের সদস্যরা। প্রতিবন্ধিতার সুযোগে গড়ে তোলা তার এ রিকশাফাঁদে পা দিয়েই প্রাণ হারিয়েছেন ডিশ ব্যবসায়ী হামিদুল ইসলাম (৫৫)। শাকিলসহ চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতারের পর এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) তদন্তে।

গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন সোহেল ওরফে অ্যারাবিয়ান সোহেল, জাহিদ হোসেন, শুক্কুর আলী, শাকিল ওরফে ডুম্বাস ও সোহেল মিয়া। তাদের কাছ থেকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত একটি চাকু, একটি মোটরচালিত রিকশা, লুণ্ঠিত মোবাইল ও মানিব্যাগ উদ্ধার করা হয়।

গতকাল ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) এ কে এম হাফিজ আক্তার জানান, এরা হামিদুলকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। সোমবার রাজধানীর উত্তর মুগদা ও কামরাঙ্গীর চরে অভিযান চালিয়ে চক্রের হোতা অ্যারাবিয়ান সোহেলসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়। এর মধ্যে শাকিল একজন রিকশাচালক। তার ডান হাত কবজির কাছ থেকে কাটা। রিকশা চালানো মূলত তার ছদ্মবেশ। এ চক্রের হোতা অ্যারাবিয়ান সোহেল। তার সঙ্গে জাহিদ ও শুক্কুর আলী সহযোগী। আর সোহেল মিয়া ছিনতাইয়ের মালামাল ক্রয়কারী। হামিদুলের ছিনতাই হওয়া মোবাইল ফোনও সোহেল মিয়াই কিনেছিলেন। তাদের সবার বাসা কামরাঙ্গীর চরে।

অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, ২৩ জানুয়ারি রাজধানীতে খুন হওয়া সেগুনবাগিচার ডিশ ব্যবসায়ী হামিদুল ইসলাম হাতকাটা শাকিলের রিকশাতেই উঠেছিলেন। হাই কোর্ট মাজার থেকে সেগুনবাগিচায় যাওয়ার পথে জাতীয় ঈদগাহ মাঠের সামনের ফুটপাথে ওই রিকশার গতি রোধ করেন ছিনতাইকারী সোহেল ওরফে অ্যারাবিয়ান সোহেল, জাহিদ হোসেন ও শুক্কুর আলী। তারা হামিদুলের কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেন। হামিদুল চিৎকার করলে অ্যারাবিয়ান সোহেল চাকু দিয়ে পায়ে আঘাত করেন। এতে পায়ের রগ কেটে রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়। গ্রেফতার প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ১০টি করে ছিনতাই মামলা আছে। তবে প্রতিটিতেই তারা জামিনে রয়েছেন। অ্যারাবিয়ান সোহেল সাত মাস আগে জেল থেকে বের হয়েছেন, আর হাতকাটা শাকিল বেরিয়েছেন এক বছর আগে। বের হয়ে পুনরায় তারা ছিনতাইয়ে নামেন।

এক প্রশ্নে হাফিজ আক্তার বলেন, রাজধানীতে কতগুলো ছিনতাই স্পট আর কতগুলো ছিনতাইকারী গ্রুপ আছে তা বলা যাচ্ছে না। তবে ছোট কিছু গ্রুপ নতুন করে তৈরি হয়েছে। এদের বিষয়েও কাজ করা হচ্ছে। আবার রাস্তার ধারে যারা নেশা করত তারাও জড়িত হচ্ছে ছিনতাইয়ের সঙ্গে। সেদিকেও নজর দেওয়া হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর