বৃহস্পতিবার, ২৮ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

মাদারীপুর ও জামালপুরে হত্যা মামলায় তিনজনের মৃত্যুদন্ড

একজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

মাদারীপুর ও জামালপুর প্রতিনিধি

মাদারীপুরে শাহেদ বেগ হত্যা মামলায় দুই আসামিকে মৃত্যুদন্ড এবং জামালপুরে ইউপি সদস্যসহ চাঞ্চল্যকর ট্রিপল মার্ডার মামলায় একজনকে মৃত্যুদন্ড ও একজনকে যাবজীবন কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। আমাদের মাদারীপুর প্রতিনিধি জানান, রাজৈরে শাহেদ বেগ (২৫) হত্যা মামলায় দুই আসামিকে মৃত্যুদন্ড দিয়েছেন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক লায়লাতুল ফেরদৌস। গতকাল দুপুরে এ রায় দেওয়া হয়। পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদন্ডও প্রদান করা হয়। সাজাপ্রাপ্তরা হলেন রাজৈর উপজেলার হরিদাসদী-মহেন্দ্রদী ইউনিয়নের কালীবাড়ী গ্রামের ইউসুফ আলী মুন্সীর ছেলে মো. সেলিম মুন্সী ও আবুল কালাম আজাদের ছেলে মো. পাভেল শিকদার। জানা গেছে, শাহেদ বেগ ২০১২ সালের ২৯ নভেম্বর রাতে লিবিয়া যাওয়ার জন্য টাকাসহ রাজৈরের বাটিয়ারকান্দা গ্রামে একটি বিয়েবাড়ির উদ্দেশে বের হন। সকালে বাটিয়ারকান্দার একটি খালের মধ্যে তার লাশ পাওয়া যায়। ওই ঘটনায় তার বড় ভাই রফিকুল বেগ রাজৈর থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা করেন।

পুলিশ তদন্তে হত্যার সঙ্গে সম্পৃক্ততা পাওয়ায় পাভেল ও সেলিমের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে। নিহতের মা মহরজান বলেন, ‘আসামিদের ফাঁসির রায় হওয়ায় আমি সন্তুষ্ট। রায় দ্রুত কার্যকর চাই।’ বাদী রফিকুল বেগ বলেন, ‘আমাদের দাবি পলাতক আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার করে ফাঁসির আদেশ কার্যকর।’ মাদারীপুরের অতিরিক্ত পিপি গোলাম আজম শামীম বলেন, ‘শাহেদ হত্যায় জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তির আদেশ দিয়েছে আদালত। আমরা এ রায়ে সন্তুষ্ট।’

এদিকে, আমাদের জামালপুর প্রতিনিধি জানান, ইউপি সদস্যসহ চাঞ্চল্যকর ট্রিপল মার্ডার মামলায় একজনকে মৃত্যুদন্ড ও একজনকে যাবজীবন কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। গতকাল দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক জিন্নাৎ জাহান ঝুনু এ রায় দেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবুল কাশেম তারা জানান, ২০১৩ সালের ১৪ নভেম্বর বিকালে সরিষাবাড়ী উপজেলার পিংনা ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য নলসন্ধ্যা গ্রামের বাসিন্দা মো. ফজলুর রহমান (৫০) ও তার সঙ্গী ইউসুফ (৫২) যমুনা নদীর বাসুরিয়া খেয়াঘাট থেকে কোরবান আলী তালুকদারের (৬০) ইঞ্জিনচালিত নৌকাযোগে বাড়ি ফিরছিলেন। চরনলসন্ধ্যা খেয়াঘাটের কাছে পৌঁছলে পূর্বশত্রুতার জেরে জলদস্যু আবদুল হাইয়ের নেতৃত্বে একদল দুর্বৃত্ত নৌকাযোগে তাদের ওপর হামলা করে। একপর্যায়ে নৌকাসহ অপহরণ করে নদীর গভীরে নিয়ে যায়। ঘটনার তিন দিন পর ইউসুফ ও পাঁচ দিন পরে ফজলুর রহমানের মৃতদেহ যমুনা থেকে উদ্ধার করা হলেও কোরবান আলী নিখোঁজ রয়েছেন। এ ব্যাপারে ফজলুর রহমানের স্ত্রী সুরাইয়া খাতুন আবদুল হাইকে প্রধান করে ১৪ জনের বিরুদ্ধে সরিষাবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। তদন্ত শেষে ২০১৬ সালের ১২ জুলাই চার্জশিট দাখিল করে সিআইডি। পরে সব আসামিকে আটক করে জেলহাজতে পাঠানো হয়। মামলায় ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যের ভিত্তিতে আসামি বেলাল (৩৫)-কে মৃত্যুদন্ড, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, হুরমুজ আলী (৩৭)-কে যাবজ্জীবন কারাদন্ড, ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং ১২ জনকে খালাসের আদেশ দেন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ। মামলায় আসামিপক্ষে আইনজীবী ছিলেন মোহাম্মদ আবদুল্লাহ।

সর্বশেষ খবর