শনিবার, ৩০ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

কুয়াশায় ফেরি বন্ধ থাকায় রাজস্ব হারাচ্ছে নৌবন্দর

রাজবাড়ী প্রতিনিধি

কুয়াশায় ফেরি বন্ধ থাকায় রাজস্ব হারাচ্ছে নৌবন্দর

ঘন কুয়াশার কারণে দেশের গুরুত্বপূর্ণ নৌরুটে প্রতিদিন ফেরি চলাচল বন্ধ রাখতে বাধ্য হচ্ছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) কর্তৃপক্ষ। এতে প্রতিদিন ১০ লাখ টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক মো. আবু অবদুল্লাহ রনি জানান, স্বাভাবিক সময়ে এ রুটে ১৬টি ফেরি দিয়ে গড়ে তিন হাজার যানবাহন পারাপার করা হয়। কিন্তু কুয়াশার কারণে বর্তমানে পারাপার ব্যাহত হচ্ছে। প্রতিদিন এ রুট থেকে ৩০ লক্ষাধিক টাকা আয় হতো। বর্তমানে সেখানে ২০ লাখ টাকা আয় হচ্ছে। জানা যায়, কুয়াশায় ফেরি চলাচল স্বাভাবিক রাখতে ২০১৪ সালে কোটি টাকা খরচ করে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটের নয়টি ফেরিতে ফগ অ্যান্ড সার্চ লাইট স্থাপন করা হয়েছিল। কিন্তু শুরু থেকে সেগুলো কোনো কাজে আসেনি। ফগ লাইট নিয়ে বিভিন্ন সময়ে লেখালেখি হলেও সেই অকার্যকর ফগ লাইটগুলোই ফেরিতে রয়েছে। কুয়াশায় দৌলতদিয়া নৌবন্দর এলাকায় সংবাদ সংগ্রহকালে দেখা যায়, ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে যানজট নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য গোয়ালন্দ মোড় থেকে অপচনশীল দ্রব্যের ট্রাকগুলোকে আটকে দেয় ট্রাফিক পুলিশ। গোয়ালন্দ মোড় থেকে রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়ক পর্যন্ত ৩/৪ কিলোমিটার অংশে ট্রাকের সিরিয়াল লেগে থাকে। মোড় এলাকায় পর্যাপ্ত টয়লেট ও কোনো টার্মিনাল না থাকায় ট্রাকচালকদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। দুই দিন পর্যন্ত অপেক্ষায় থেকে ফেরির নাগাল পায় এসব ট্রাক চালকরা। আবদুল আক্কাস শেখ নামে এক ট্রাক চালক অভিযোগ করে বলেন, দৌলতদিয়া নৌবন্দর আধুনিকায়ন করা দরকার। বিআইডব্লিউটিএর যে ট্রাক টার্মিনাল রয়েছে সেখানে বিশ্রামাগার দরকার। টার্মিনালের পরিধি বৃদ্ধি করা দরকার। গোয়ালন্দ মোড়ে যখন ট্রাক আটকে দেয় তখন গাড়ির মধ্যে দুদিন পর্যন্ত বসে থাকতে হয়। সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বিষয়গুলোর দিকে নজর দেওয়া দরকার। ঢাকাগামী যাত্রী দিপীল ম ল বলেন, ১৯৮৩ সালের জুলাই মাসে  অভ্যন্তরীণ নদীবন্দর হিসেবে স্বীকৃতি পায় দৌলতদিয়া নদীবন্দর। সেই নদীবন্দর এলাকায় ২০২১ সালে এসে কুয়াশার কারণে বাসের মধ্যে ১০ ঘণ্টা পরিবার নিয়ে বসে থাকতে হয়। তিনি বলেন, দৌলতদিয়া নৌবন্দরে যাত্রীদের জন্য একটি আধুনিক বিশ্রামাগার প্রয়োজন। এছাড়া যাত্রীদের নিরাপত্তার স্বার্থে এখানে নৌ পুলিশের সংখ্যা বৃদ্ধি করা দরকার।  বৃহস্পতিবার (বুধবার দিবাগত রাত ১টার দিকে) দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে কুয়াশার কারণে ফেরি বন্ধ করে দেয় বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ। গতকাল সকালে কুয়াশার ঘনত্ব কমে গেলে ফেরি চলাচল শুরু করে ঘাট কর্তৃপক্ষ। দৌলতদিয়া নৌপুলিশ ফাঁড়ির অফিসার ইনচার্জ (পরিদর্শক) আবদুল মোন্নাফ শেখ বলেন, বর্তমানে এই বন্দর এলাকাসহ দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটের নিরাপত্তার জন্য ১৭ জন নৌ পুলিশ কাজ করেন। দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক মো. আবু আবদুল্লাহ রনি বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকলে ১৬টি ফেরি পর্যাপ্ত ছিল। কুয়াশা ভেদ করে কীভাবে ফেরি চালু রাখা যায় সেটি নিয়ে বর্তমানে আলোচনা হচ্ছে। ফগ লাইটের বিষয়টি নিয়ে তিনি বলেন এটি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অবগত রয়েছেন। আমি এটি নিয়ে কোনো মন্তব্য করব না।

সর্বশেষ খবর