শনিবার, ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

কাস্টমস ও প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের চোখ ফাঁকি দিয়ে অর্থ পাচার

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের উদীয়মান শিল্প পোলট্রি ফিডের কেমিক্যাল আমদানির নামে শত কোটি টাকা পাচারের সঙ্গে জড়িত একটি গোষ্ঠী। কয়েক বছর ধরে এ বাণিজ্যের মাধ্যমে দেশের ভিতরেও তারা গড়েছে বিশাল বিত্ত-বৈভব। প্রাণিসম্পদ অধিদফতর ও কাস্টমসের চোখ ফাঁকি দিয়ে চলছে রমরমা ব্যবসা। অর্থ পাচারের সঙ্গে পোলট্রি খাতের খাদ্যপণ্যের দর নিয়ে অস্থিরতার জন্য দায়ী প্রতিষ্ঠানটি হলো আদিয়ান অ্যাগ্রো লিমিটেড। সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ওঠা অর্থ পাচার ও শুল্ক ফাঁকির তদন্ত শুরু করেছে দুদক ও এনবিআর। তবে এ অভিযোগ ধাপাচাপা দিতে ইতিমধ্যে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছে প্রতিষ্ঠানটি। জানা গেছে, ২০১৭ সালে কার্যক্রম শুরু করা একটি ক্ষুদ্র ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এখন কয়েক শ কোটি টাকার সম্পদের মালিক। মাত্র কয়েক বছরের মধ্যে রাজধানীতে গড়ে তুলেছে বিশাল বিত্ত-বৈভব। আদিয়ান অ্যাগ্রো লিমিটেড পোলট্রি ফিডের কেমিক্যাল আমদানি করে আন্ডার ইনভয়েসিং করে। এনবিআর ও দুদক সূত্রে দেখা গেছে, ইউরোপ, চীন থেকে আমদানি করা এসব কেমিক্যাল আন্ডার ইনভয়েসিং করে প্রায় ৮০০ গুণ বেশি দামে দেশে বাজারজাত করছে। পোলট্রি খাতে একশ্রেণির ব্যক্তিকে হাত করে এত বেশি দামে বাজারজাত করছে কয়েক বছর ধরে। প্রতিষ্ঠানটি দুই ভাবে মুনাফা তুলেছে। আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে শুল্ক ফাঁকি দিয়েছে, দ্বিতীয়ত দেশের বাজারে ৮০০ গুণ বেশি দামে বিক্রি করেও অতিরিক্ত মুনাফা করেছে। আন্তর্জাতিক বাজারের দামের তুলনায় অতিরিক্ত দেখিয়ে আমদানি করে দেশের ডলার পাচার করছে। এনবিআর এ অভিযোগ ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে। এসব কেমিক্যাল আমদানির অনুমতি দেয় প্রাণিসম্পদ অধিদফতর। অধিদফতরের একশ্রেণির কর্মকর্তাকে হাত করে নিজের অবৈধ মুনাফা করার বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। এ কেমিক্যাল আমদানির একমাত্র প্রতিষ্ঠান হওয়ায় দেশের পোলট্রি ব্যবসায়ীরা এক প্রকার জিম্মি হয়ে পড়েছেন আদিয়ান অ্যাগ্রোর কাছে। পোলট্রি ব্যবসায়ীরা দুদকের কাছে আবেদন জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার। দুদকের পক্ষ থেকে তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে আদিয়ান গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জামিল হোসেন দুই সংস্থার তদন্ত বন্ধ করতে ইতিমধ্যে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। পোলট্রি ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশের পোলট্রি খাতের অস্থিরতার জন্য দায়ী আদিয়ান গ্রুপের লুটপাট। তারা আমাদের জিম্মি করে রেখেছেন। কারণ পোলট্রি ফিড তৈরি করতে হলে তাদের আমদানি করা কেমিক্যাল ব্যবহার করতে হয়। এখন এ অনিয়মের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর