শনিবার, ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

কর্মসংস্থানের স্বপ্ন দেখাচ্ছে হাইটেক পার্ক

সম্ভাবনা দেখছেন রাজশাহীর মানুষ ► ৭৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

কর্মসংস্থানের স্বপ্ন দেখাচ্ছে হাইটেক পার্ক

শিল্পায়নে অনেক পিছিয়ে শিক্ষানগরী রাজশাহী। পড়াশোনা শেষ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাড়া এ শহরে কর্মসংস্থানের কোনো জায়গা পেতেন না তরুণ-তরুণীরা। তবে এ শহরেই কর্মসংস্থানের স্বপ্ন দেখাচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হাইটেক পার্ক। এটিকে ঘিরেই নতুন দিনের সম্ভাবনা দেখছেন রাজশাহীর মানুষ। শহরের পশ্চিম প্রান্তে পদ্মার পাড়ে গড়ে তোলা হচ্ছে এই হাইটেক পার্ক। পার্কটির প্রধান দুই অংশের মধ্যে ‘শেখ কামাল আইটি ইনকিউবেশন অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার’ এর কাজ ইতিমধ্যে শেষ। ভবনটি হয়ে উঠেছে কর্মমুখর। আর ‘সজীব ওয়াজেদ জয় সিলিকন টাওয়ার’ এর কাজও শেষের দিকে। সব মিলিয়ে প্রকল্পের প্রায় ৭৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।২০১৬ সালের ডিসেম্বরে এ প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন পায়। ২০১৭ সালের ১৮ জুলাই রাজশাহী মহানগরী বুলনপুর এলাকায় ৩১ দশমিক ৬৩ একর জমির উপর ২৮১ কোটি ১৯ লাখ টাকা ব্যয়ে হাইটেক পার্কটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। হাইটেক পার্ক নিয়ে এমপি ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, পিছিয়ে পড়া রাজশাহীকে এগিয়ে নিতে হাইটেক পার্কটি ভূমিকা রাখবে। এটি এখন বাস্তবে রূপ পাচ্ছে। এর ফলে খুলে যাচ্ছে কর্মসংস্থানের দুয়ার। দ্রুত সময়ের মধ্যে পুরো হাইটেক পার্ক চালু করার জন্য যথাযথ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এটি পুরোপুরি চালু হওয়ার পর রাজশাহী হবে প্রযুক্তির নগরী। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, হাইটেক পার্কের শেখ কামাল আইটি ইনকিউবেশন অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার অফিস পরিচালনার জন্য ইতিমধ্যে স্থান বরাদ্দ পেয়েছে ১০টি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান। এদের মধ্যে ছয়টি প্রতিষ্ঠান তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে। পার্কটিতে স্পেস বরাদ্দ পাওয়া ফ্লিট বাংলাদেশ নামে এক আইটি প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন আফরোজা আরবি তুষি। গ্রাহক সেবা নির্বাহী তুষি বলেন, ‘যখন ছাত্রী ছিলাম তখন ভয় পেতাম যে বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শেষে ভালো একটা ক্যারিয়ার গড়তে হলে হয় ঢাকায় যেতে হবে, নয়তো ক্যারিয়ারই হবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় ভাইবোনদের দেখেছি ক্যারিয়ারের জন্য ঢাকা যেতে। কিন্তু আমার খুব ইচ্ছা ছিল পরিবার-পরিজন নিয়ে রাজশাহীতে থেকেই একটা ক্যারিয়ার গড়ার। আমাকে সে সুযোগটা দিয়েছে ফ্লিট বাংলাদেশ। আর ফ্লিট বাংলাদেশকে সেই সুযোগটা দিয়েছে হাইটেক পার্ক।’মোবাইল গেমস এবং অন্যান্য সফটওয়্যার সেবা দেওয়া আরেক প্রতিষ্ঠান টেক রাজশাহীর প্রধান নির্বাহী মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘আমার প্রতিষ্ঠানে ১৪২ জন কর্মী। হাইটেক পার্কে ২৮ জন কর্মী এখন কাজ করছেন। নামের সঙ্গে রাজশাহী শব্দ থাকা প্রতিষ্ঠানটির অফিস শেষ পর্যন্ত রাজশাহীতেই হলো। হাইটেক পার্কটির অবস্থান এবং অন্যান্য আধুনিক সুবিধার পাশাপাশি এখানে একটি অফিস থাকা মানে প্রতিষ্ঠানের ‘ব্র্যান্ড ভ্যালু’ অনেকখানি বেড়ে যাওয়া।’ হাইটেক পার্ক ইন্ডাস্ট্রি এবং অ্যাকাডেমিয়ার মধ্যে সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করবে বলে মনে করেন রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক তাসনিম বিনতে শওকত। ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের এই শিক্ষক বলেন, এদেশের মেধাবীরা বাইরে যাচ্ছে। যাকে আমরা বলছি ‘ব্রেইন ড্রেন’। আবার আমরা বাইরে থেকে বিশেষজ্ঞ নিয়ে আসছি এখানকার কোম্পানি পরিচালনার জন্য। এই দ্বিমুখী সমস্যার সমাধান করবে হাইটেক পার্ক।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর