বুধবার, ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

বিশ্ববাজারে সিমেন্টের কাঁচামালের মূল্য বৃদ্ধিতে বিসিএমএর উদ্বেগ

নিজস্ব প্রতিবেদক

আন্তর্জাতিক বাজারে সিমেন্টের কাঁচামালের অব্যাহত মূল্য বৃদ্ধিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ সিমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএমএ)। বাংলাদেশে সিমেন্ট তৈরির যে কয়েকটি মূল কাঁচামাল রয়েছে তার সবগুলোই আমদানিনির্ভর এবং এর মধ্যে ক্লিংকার অন্যতম। প্রতি টন ক্লিংকার আমদানি করতে আগে যেখানে ৪২ মার্কিন ডলার খরচ হতো, এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৬ মার্কিন ডলার। অর্থাৎ প্রতি টন ক্লিংকার আমদানিতে ৪ মার্কিন ডলার খরচ বেড়েছে। মূল্য বৃদ্ধির এই ধারা এখনো অব্যাহত আছে। বিসিএমএ সূত্র জানায়, টনপ্রতি ৪ মাকিন ডলার মূল্য বৃদ্ধির মধ্যে ২ মার্কিন ডলার বেড়েছে ক্লিংকারের এফওবি অর্থাৎ উৎপাদন পর্যায়ে মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে। বাকি ২ মার্কিন ডলার বৃদ্ধি পেয়েছে জাহাজ ভাড়ায়। সংশ্লিষ্টদের মতে, আন্তর্জাতিক বাজারে ক্লিংকার প্রস্তুতে ব্যবহৃত জ্বালানি কয়লার দাম বেড়ে যাওয়ায় ক্লিংকারের উৎপাদন খরচ বেড়েছে। আর চীন হঠাৎ করে কয়লার আমদানি বৃদ্ধি করায় কয়লার দাম অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এফওবিতে বা উৎপাদন পর্যায়ে যেখানে প্রতি টন কয়লার মূল্য ছিল ৪০ থেকে ৪২ মার্কিন ডলার, এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮২ মার্কিন ডলারে। এসব কারণেই আন্তর্জাতিক বাজারে সিমেন্টের অন্যতম মূল কাঁচামাল ক্লিংকারের দাম বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। যার প্রভাব দেশীয় সিমেন্ট খাতেও পড়তে পারে। বিসিএমএর প্রেসিডেন্ট ও ক্রাউন সিমেন্টের ভাইস-চেয়ারম্যান মো. আলমগীর কবির বলেন, করোনা-পরবর্তী সময়ে অনেক দেশেই আবার নতুন করে উন্নয়নমূলক কাজ ব্যাপক হারে শুরু হয়েছে। তাই গত কয়েক মাসে নির্মাণসামগ্রীর বিশ্বব্যাপী চাহিদা ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের দেশে সিমেন্ট খাতের যে মূল কয়েকটি কাঁচামাল রয়েছে তার সবকটিই আমদানিনির্ভর। সেক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দেশীয় বাজারে তৈরি পণ্যের মূল্য পরিবর্তনের সমূহ সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। তিনি বলেন, দেশীয় বাজারে সিমেন্ট খাতে তীব্র প্রতিযোগিতার কারণে সামঞ্জস্যপূর্ণ মূল্যের বাইরে অতিরিক্ত মূল্যে এ পণ্যটি বিক্রি করা একেবারেই সম্ভব নয়। অর্থাৎ মনোপলির কোনো সুযোগ নেই। কেবল আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যের ব্যতিক্রম হলেই তার প্রভাব আমাদের দেশে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। বিসিএমএ প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, তবে আমরা অনুরোধ করব দেশের উন্নয়নের স্বার্থে বিশেষ করে মধ্যম আয়ের ক্রেতার স্বার্থে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) অতিরিক্ত কর যা এ খাতে অব্যাহত রয়েছে তা সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে এলে এ খাতের পণ্য বিক্রি বেড়ে যাবে। যেমন, দ্বৈত কর সমন্বয় করা এবং আমদানি পর্যায়ে নির্ধারিত শুল্ক ৫০০ টাকা থেকে কমিয়ে ২৫০ টাকায় নির্ধারণ করা। সাধারণ ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখা সম্ভব হলে পণ্য বিক্রি বাড়বে। এতে সরকারের রাজস্বও বাড়বে বলে তিনি মনে করেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর