ঠিকাদারি কাজের ২ শতাংশ ঘুষ দাবির মামলায় এলজিইডির দুই প্রকৌশলীর জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন রংপুরের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. শাহেনূর। তারা হলেন, এলজিইডি রংপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী আখতার হোসেন এবং সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী কাওছার আলম। তারা এলজিইডির আওতায় ৬ কোটি ৬৬ লাখ টাকার কাজে ২ শতাংশ হারে ঘুষ দাবি ও সর্বনিম্ন দরদাতাকে কাজ দেননি।

এদিকে, দুই আসামি উচ্চ আদালত থেকে চার সপ্তাহের জামিন পান। গতকাল জামিনের মেয়াদ শেষ হলে তারা রংপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন জানান।

বিধি মোতাবেক ২০১৯ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি ও ওই বছরের ৪ মার্চ দরপত্র জমা দেন নগরীর নিউ ইঞ্জিনিয়ারপাড়ার ঠিকাদার রবিউল আলম বুলবুল। কিন্তু দরপত্র দুটি গ্রহণ ও অনুমোদনের পরেও নোটিফিকেশন অব অ্যাওয়ার্ড (এনওএ) না দিয়ে রবিউল আলম বুলবুলের কাছে মোট কাজের (৬ কোটি ৬৬ লাখ টাকা) ২ শতাংশ হারে ঘুষ দাবি করেন দুই প্রকৌশলী। এ অবস্থায় ঠিকাদার রবিউল আলম বুলবুল ২ শতাংশ টাকা না দেওয়ায় তাকে নিষ্ক্রিয় হিসেবে তালিকাভুক্ত করেন এবং সর্বনিম্ন দরদাতা হয়েও তাকে কাজ না দিয়ে অন্য একজনকে কার্যাদেশ দেন। এ ঘটনায় রবিউল আলম বুুলবুল রংপুরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতে (দুদক) এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী আখতার হোসেন এবং জ্যেষ্ঠ সহকারী প্রকৌশলী ও দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির চেয়ারম্যান কাওছার আলমের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ৭ মে মামলা করেন। তদন্ত শেষে দুদকের সহকারী পরিচালক জাহাঙ্গীর হোসেন ২০২০ সালের ৬ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।  শুনানি শেষে বিচারক তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

দুদকের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর এ কে এম হারুন-উর রশীদ জানান, জালিয়াতির মাধ্যমে সর্বনিম্ন দরদাতাকে কার্যাদেশ না দিয়ে অন্য একজনকে কাজ দেওয়ায় সরকার ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে ওই দুই প্রকৌশলীর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, অভিযুক্ত দুজনের মধ্যে আখতার হোসেন পরবর্তীতে বদলি হয়ে ঢাকা প্রধান কার্যালয়ে যান এবং অপরজন রংপুরে কর্মরত আছেন।