সোমবার, ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা
বঞ্চিত হতে হচ্ছে রাজস্ব থেকে

আয়বর্ধক প্রকল্পের বদলে ইজারা

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

আয়বর্ধক প্রকল্পের বদলে ইজারা

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) আয়ের অন্যতম উৎস আয়বর্ধক প্রকল্প। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে আয়বর্ধক প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে না। তবে প্রকল্প গ্রহণ না করলেও চসিকের অনেক ভূ-সম্পত্তি ইজারা এবং সাময়িকভাবে ভাড়া দেওয়া অব্যাহত আছে। ফলে চসিক বঞ্চিত হচ্ছে আশানুরূপ আয় থেকে। চসিকের সদ্য বিদায়ী প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন শেষ দুই মাস ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে ১২টি ভূ-সম্পত্তি ইজারা দিয়েছেন। অভিযোগ আছে, চসিকের অনেক ভূ-সম্পত্তি আছে, যেসব জায়গা পরিকল্পনা করে আয়বর্ধক প্রকল্প কিংবা চসিকের উদ্যোগে ব্যবস্থাপনা করা হলে আয়ের ব্যবস্থা হতো। কিন্তু এখন অন্তত ১২টি ভূ-সম্পত্তি ইজারা দিয়ে চসিক নামমাত্র আয় করছে। বঞ্চিত হয়েছে রাজস্ব আয় থেকে। চসিকের ভূ-সম্পত্তি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে ১২টি  ভূ-সম্পত্তি ইজারা দেওয়া হয়। এর মধ্য আছে লালদীঘি মসজিদ সংলগ্ন গণশৌচাগার, ঝুমুর সিনেমা হলের উত্তর পাশে জয় পাহাড় মৌজার বিএস দাগের ৫৪০ বর্গফুট খালি জায়গা ভাড়ায় সাময়িকভাবে ব্যবহারের অনুমতি, ৪০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ভবনের উত্তর-পশ্চিম পাশে ১৭৫৭ বর্গফুট খালি জায়গা, কেসিদে (পাবলিক টয়লেট) গণশৌচাগারের পাশে পরিত্যক্ত ৩৭৬ বর্গফুট খালি জায়গাসহ ১২টি খালি ও পরিত্যক্ত জায়গা ভাড়া দেওয়া হয়েছে। তবে লালদীঘি জামে মসজিদ সংলগ্ন শৌচাগারটি ইজারা দেওয়ার বিষয়টি বেশি সমালোচনা হচ্ছে।           

চসিকের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মফিদুল আলম বলেন, ‘অতীতে চসিক নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় বিভিন্ন আয়বর্ধক প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। কিন্তু গত কয়েক বছর  ধরে এ জাতীয় প্রকল্পগুলোর অবস্থা ভালো যাচ্ছে না। তাই চসিক নিজে  বাস্তবায়ন করার ধারণা থেকে বের হয়ে আসছে। এখন পাবলিক পার্টনারশিপের  মাধ্যমে আয়বর্ধক প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘লালদীঘি  মসজিদ সংলগ্ন গণশৌচাগারটি অতীতেও ইজারা ছিল। তবে মাঝখানে কয়েক বছর ইজারা ছিল না। এখন গত ১ জানুয়ারি থেকে আবার ইজারা দেওয়া হয়েছে। তবে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সময় এক ঘণ্টা সময় বিনামূল্যে শৌচাগার ব্যবহার করার নিয়ম রাখা হয়েছে। এর মাধ্যমে ইজারা প্রাপ্তরা পরিষ্কারসহ প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষণ করবে।’

জানা যায়, চসিক অতীতে আবাসন, পরিবহন, গণশৌচাগার, বিপণিবিতানসহ  নানা ধরনের আয়বর্ধক প্রকল্প গ্রহণ করেছিল। সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর আমলে নগরে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ৩৭টি গণশৌচাগার নির্মাণ, নগরে গণপরিবহন সংকট নিরসনে ২০০৬ সালের ১ এপ্রিল ১০টি ভাড়া বাস (প্রতিটি বাসে ৪৮ সিট) নিয়ে ‘নিরাপদ মহিলা ও শিশু যাত্রীসেবা’ চালু, ২০১০ সালের জানুয়ারিতে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে ১ কোটি ৬৫ লাখ টাকায় স্বাধীনতা পার্ক নির্মাণ, ২০০৭ সালে ‘সিটি করপোরেশন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড’ নামে ওষুধ তৈরির ফার্মেসি নির্মাণ, বর্জ্য থেকে লাকড়ি উৎপাদন, আটটি আবাসন প্রকল্প নির্মাণ, ছোট-বড় ৪৮টি বিপণিবিতান (এসব মার্কেট থেকে প্রতি বছর রাজস্ব আদায় হয় প্রায় সাড়ে ৪ কোটি টাকা) নির্মাণ করে আয়বর্ধক প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছিল। কিন্তু গত প্রায় ১২ বছর ধরে কোনো প্রকল্প গ্রহণ করা হয়নি। ফলে চসিকের অর্থ সংকটটা এখন নিয়মিত সঙ্গী।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর