সোমবার, ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা
তাদের কার্যক্রম সবার মুখে মুখে

ময়মনসিংহে তারুণ্যে উচ্ছল আওয়ামী লীগের রাজনীতি

সৈয়দ নোমান, ময়মনসিংহ

শরীফ আহমেদ। পারিবারিকভাবেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির প্রতি একধর্মা। ময়মনসিংহ-২ (ফুলপুর-তারাকান্দা) থেকে টানা দুবারের সংসদ সদস্য। বর্তমানে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী। এর আগে সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রীও ছিলেন। এরপরও তিনি তারুণ্যদীপ্ত ও কর্মীবান্ধব। শরীফ আহমেদের বাবা প্রয়াত ভাষাসৈনিক শামসুল হকের মতোই রাজনীতিতে নিজ কর্মগুণ ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে অবস্থান করেছেন সুদৃঢ়। ভরা যৌবনে শরীফ আহমেদ ছিলেন ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, ওতপ্রোত সম্পৃক্ততা ছিল যুবলীগেও। একঝোঁকা নীতির কারণেই বর্তমান সরকার তাকে মূল্যায়ন করেছে বলে মত জেলার শীর্ষ নেতাদের। শরীফ আহমেদের মতো অপেক্ষাকৃত অনেক নবীন নেতা হালের রাজনীতিতে আইডল বলে মনে করেন শিক্ষাবিদ অধ্যক্ষ ড. শাহাব উদ্দিন। বলেন, সময়ের পালাবদলে অকুতোভয়, ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতারাই নেতৃত্বের আসনে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছেন। তারুণ্যের আবাহনে সৃষ্ট বঙ্গবন্ধুর আদর্শে গড়া সংগঠনটি এখন আরও উজ্জীবিত। প্রাণসঞ্চার হচ্ছে কর্মীদের। অনুন্নয়নের অচলায়তন ভেঙে তাক লাগিয়েছেন তারুণ্যের আরেক প্রতীক ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের মেয়র ইকরামুল হক টিটু। ব্রহ্মপুত্র নদের কোলঘেঁষে গড়ে ওঠা প্রাচীনতম ময়মনসিংহ শহর এখন নগরী। শিক্ষা, সাহিত্য আর সংস্কৃতির এই নগরীতে এখন নন্দিত সিটি করপোরেশনের এই মেয়র। সর্বশেষ করোনাভাইরাস মোকাবিলায় মেয়রের উল্লেখযোগ্য অবদান এখন গোটা নগরবাসীর মুখে মুখে। মেয়র টিটুর রক্তে মিশেল বঙ্গবন্ধুর আদর্শ আর আওয়ামী লীগের রাজনীতি। দলের প্রতি একাগ্রচিত্ততার কারণে মাত্র ৩৩ বছর পাঁচ মাস বয়সে বিলুপ্ত প্রাচীনতম পৌরসভার মেয়র হন। ঈর্ষণীয় জনপ্রিয় থাকায় টানা দুই মেয়াদে পৌর মেয়র থেকে দেশের দ্বাদশ সিটির প্রথম মেয়র হন তিনি। তাই সিনিয়র সিটিজেনরা বলছেন, আধুনিক নগরীর রূপকার নিরহংকার টিটু। সেই সঙ্গে তিনি সব শ্রেণির মানুষের সঙ্গে একাত্ম হয়ে জয় করেছেন হৃদয়।

ইকরামুল হক টিটু মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি পদেও দায়িত্ব পালন করছেন। দলীয় রাজনীতিকে চাঙা ও সুসংগঠিত করতেও মেয়র টিটুর ভূমিকা ঈর্ষণীয়। ভার্চুয়াল জগতেও এই তরুণের রয়েছে শক্তিশালী নেটওয়ার্ক।

ময়মনসিংহ জেলার মাটিতে আরেক কিংবদন্তি রাজনীতিকের নাম আলতাফ হোসেন গোলন্দাজ। ধীরে ধীরে প্রয়াত পিতারই উত্তরসূরি হয়ে উঠেছেন ফাহমি গোলন্দাজ বাবেল। ময়মনসিংহ-১০ (গফরগাঁও) আসনের সংসদ সদস্য এই তরুণ। টানা দুবার তিনি রেকর্ডসংখ্যক ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। এর আগে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদেও দায়িত্ব পালন করেছেন। গফরগাঁওয়ের রাজনীতিতে এখন তিনি অদ্বিতীয়। অন্যদিকে বিরোধী দল কিংবা সুবিধাবাদী আওয়ামী লীগারদের জন্য তিনি বিশাল এক প্রাচীর। সাইবার ওয়ার্ল্ডেও এই সংসদ সদস্যের রয়েছে শক্ত ভিত।

ময়মনসিংহ-৯ (নান্দাইল) আসনের বর্তমান এমপি আনোয়ারুল আবেদীন তুহিন। তিনিও এখন হাল ধরেছেন প্রাচীনতম সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের। দশম জাতীয় সংসদে তিনি প্রথমবারের মতো বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। একাদশ জাতীয় সংসদেও তিনি এমপি। টানা দুই মেয়াদে এমপি থাকায় উন্নয়নে অনেকটাই বদলে গেছে নান্দাইল। বেড়েছে কর্মী-সমর্থকও।

সাবেক সংসদ সদস্য ও প্রতিমন্ত্রী প্রয়াত প্রমোদ মানকিনের সন্তান জুয়েল আরেং। ১১ মে ২০১৬ সালে তার পিতার মৃত্যুর পর উপনির্বাচনে জয়ী হন। ২৬ জুলাই ২০১৬ সালে তিনি সর্বকনিষ্ঠ সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়নে মহাজোটের প্রার্থী হয়ে ২ লাখ ৫৮ হাজার ৯২৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। রাজনীতিতে নতুন মুখ হলেও জুয়েল উঠে আসছেন দলের মূল রাজনীতিতে। এরই মধ্যে ক্লিন ইমেজের তকমাও জুটেছে এই তরুণের।

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান সুমন। দলীয় গণ্ডি ছাপিয়ে ঈশ্বরগঞ্জের সাধারণ মানুষের কাছে এক অহংকারের নাম। মেলবন্ধন এবং কর্মগুণে এ তরুণ এখন উপজেলার রাজনীতিতে করে নিয়েছেন শক্ত অবস্থান। টানা দুবার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান তিনি।

গফরগাঁও পৌরসভায় মেয়রের দায়িত্ব পালন করছেন এস এম ইকবাল হোসেন সুমন। ময়মনসিংহ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি পদেও দায়িত্ব পালন করছেন। স্থানীয় সংসদ সদস্যদের সঙ্গে একাত্মতা হয়ে পৌর এলাকার দুর্ভোগ ঘোচাতে তিনি ক্লান্তহীন হয়ে ছুটছেন। করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের সময় এই মেয়রের ভূমিকাও ছিল উল্লেখযোগ্য। এক পর্যায়ে তিনিও করোনা আক্রান্ত হয়ে মরণঘাতী ভাইরাসকে জয় করেন। এই তরুণও রাজনৈতিক অঙ্গনে শক্ত ভিত গড়ছেন বলে জানান স্থানীয় নেতা-কর্মীরা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর