শুক্রবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা অপ্রকাশিত থাকা রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা : তথ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা অপ্রকাশিত থাকা রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা : তথ্যমন্ত্রী

তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকাকে প্রকাশ না করা ছিল জাতীয়ভাবে আমাদের ভুল ও রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা। যারা বঙ্গবন্ধুর ভূমিকাকে খাটো করে দেখানোর অপচেষ্টা করেছেন, তারা অন্যায় করেছেন। গতকাল দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে প্রেস ক্লাব আয়োজিত ‘ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধু’ সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন। জাতীয় প্রেস ক্লাব সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিনের সভাপতিত্বে ও প্রেস ক্লাবের আন্তর্জাতিক লিয়াজোঁ উপ-কমিটির আহ্বায়ক আইয়ুব ভূঁইয়ার সঞ্চালনায় রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ, বাংলা একাডেমির সভাপতি ড. শামসুজ্জামান খান এবং প্রেস ক্লাবের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাঈনুল আলম আলোচনায় অংশ নেন। সেমিনারে ‘বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন ও বাংলার বিশ্বব্যাপ্তি’ মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর।

তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ১৯৪৮ সালে ঢাকায় মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর ‘উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা’ ঘোষণার প্রতিবাদে আন্দোলন সংগঠিত করার কারণেই ১১ মার্চ ১৯৪৮ বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। ১৫ মার্চ মুক্তি লাভ করে আবার পরদিন ১৬ মার্চ ভাষার দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংগ্রাম পরিষদের সভায় সভাপতিত্ব করেন বঙ্গবন্ধু। ১৯৪৯ সালে ডিসেম্বর মাসে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়, একটানা ১৯৫২ সাল পর্যন্ত তিনি কারাগারে ছিলেন। কারাগারে থাকাকালীনও তিনি কিন্তু বসে ছিলেন না। সেখান থেকেই তিনি ভাষা আন্দোলন সংগঠিত করার দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। এমনকি তিনি জেলখানায় অনশন করেছেন। এ বিষয়গুলো আসলে আগে কখনো জনসম্মুখে প্রকাশিত হয়নি এবং এটি অপ্রকাশিত রাখা একটি বড় অন্যায় ছিল। তিনি বলেন, একটি কথা অনেকে জানে না, ’৫২ সালের পর বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার ঘোষণা দেওয়া হয়। কিন্তু ’৫৬ সালে আওয়ামী লীগ পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার গঠন করার আগ পর্যন্ত বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হলেও সেটাকে কার্যকর করা হয়নি। ’৫৬ সালে পাকিস্তানের কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলাকে সরকারি কার্যকরণে নিয়ে আসা হয়। রাষ্ট্রীয়ভাবে ২১ ফেব্রুয়ারি পালন, শহীদ মিনার সরকারিভাবে নির্মাণও তখনই শুরু হয়। মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী এবং এখন প্রকাশিত সিক্রেট ডকুমেন্ট পড়লে বোঝা যায়, বঙ্গবন্ধু আসলে পাকিস্তান সৃষ্টির পর পরই বাংলাদেশের স্বাধীনতার কথা চিন্তা করেছেন এবং সেই লক্ষ্যে তিনি কাজ শুরু করেছিলেন।

সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, অতীতে বঙ্গবন্ধুর ইতিহাসকে মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে, কিন্তু তা সফল হয়নি। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে এমন আয়োজন করতে পেরে প্রেস ক্লাব কর্তৃপক্ষ আনন্দিত। জাতির জনককে জানতে নানা আয়োজন করার জন্য সবার কাছে আহ্বান জানান তিনি।

বিটিভি মহাপরিচালকের বিদায় সংবর্ধনা : গতকাল বিকালে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ টেলিভিশনের বিদায়ী মহাপরিচালক এস এম হারুন-অর-রশীদকে সংবর্ধনা জানানো হয়। তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, তথ্যসচিব খাজা মিয়া, প্রধান তথ্য অফিসার সুরথ কুমার সরকার, মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জাহানারা পারভীনসহ কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। স্থানীয় সরকার বিভাগে সংযুক্ত অতিরিক্ত সচিব সোহরাব হোসেনকে বিটিভির মহাপরিচালক হিসেবে নিয়োগাদেশ দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর