শনিবার, ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

শুরুতেই হোঁচট নিরপেক্ষ নির্বাচন আন্দোলনের

বরিশালে বিএনপির সমাবেশে সংঘাতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া

রাহাত খান, বরিশাল

নিরপেক্ষ নির্বাচন আদায় আন্দোলনের শুরুতেই হোঁচট খেয়েছে বিএনপি। এ দাবিতে গত বৃহস্পতিবার বরিশালে অনুষ্ঠিত প্রথম বিক্ষোভ সমাবেশ নিজেদের কোন্দলেই প- হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। সিনিয়র নেতাদের সামনে স্থানীয় ছাত্রদলের দুই গ্রুপের দফায় দফায় লাঠালাঠি-চেয়ার ছোড়াছুড়ি দেখেছে দেশবাসীসহ সারা বিশ্ব। নানা বাধা-বিপত্তি উতরে সফলভাবে সমাবেশ আয়োজনের পরও তাদের সহিংসতা জনমনে বিরূপ প্রভাব ফেলছে। বরিশালে প্রথম সমাবেশের প্রধান অতিথি বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীরবিক্রম নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, মঞ্চের কাছে স্লোগান না দিয়ে রাস্তায় গিয়ে স্লোগান দেবেন। মিছিল করতে হয় রাজপথে করবেন। আগুন দিতে হয় সরকারের গদিতে দেবেন। স্লোগান দিয়ে সংঘাতে জড়িয়ে সমাবেশ নষ্ট করবেন না। দেশব্যাপী নিরপেক্ষ নির্বাচন আদায়ে  সারা দেশের সব বিভাগীয় সদরে বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচি শুরু করেছে বিএনপি। সরকারবিরোধী সমাবেশ হওয়ায় সরকারের নমনীয়তা এবং পুলিশের অনুমতি পাওয়া নিয়ে সংশয়ে ছিল নীতিনির্ধারকরা। সমাবেশের আগের রাতে পুলিশের মৌখিক সম্মতিতে আশ্বস্ত হন বিএনপি  নেতারা। সমাবেশ শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে জিলা স্কুল মাঠের আশপাশে সাজোয়া যান, জলকামান এবং রেকারসহ মোতায়েন করা হয় বিপুল সংখ্যক পুলিশ। শহরের মোড়ে মোড়ে চেকপোস্ট স্থাপন করে জমায়েত স্রোত আটকে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। বিকাল ৩টা থেকে অঘোষিতভাবে শহরের থ্রি হুইলার যান চলাচল আটকে দেয়। মোড়ে মোড়ে সরকারদলীয় কর্মীদের হামলা-ধাওয়া খেয়েও শেষ পর্যন্ত সমাবেশ সফল হয়েছে বলে দাবি করেন আয়োজক সংগঠন মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জিয়াউদ্দিন সিকদার জিয়া। কিন্তু সমাবেশের মাঝপথে কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনে ছাত্রদলের দুই গ্রুপ দফায় দফায় লাঠিসোটা নিয়ে চেয়ার ছোড়াছুড়ি করে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে। হামলার হাত থেকে নেতা-কর্মীরা বাঁচতে দিগি¦দিক ছোটাছুটি করে বাঁচার চেষ্টা করায় জিলা স্কুল মাঠ অনেকাংশ ফাঁকা হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্রীয় নেতারা শক্তহাতে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ায় কোনোমতে রক্ষা হয়েছে। দাবি আদায়ের আন্দোলনে নিজেরা সংঘাতে জড়িয়ে পড়ার ঘটনায় জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বরিশাল সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সভাপতি শিক্ষাবিদ অধ্যাপক শাহ সাজেদা বলেন, বিএনপির মতো একটা বয়োজ্যেষ্ঠ দলের কাছে এমন দায়িত্বহীন আচরণ তাদের দলের লোকজন, সমর্থক এবং সাধারণ নাগরিক কেউ আশা করেন না। তারা নিজেরা সংঘাতে জড়িয়ে দীনতার পরিচয় দিয়েছে। আগামী নির্বাচনে এ অদূরদর্শিতার ফল দলটি ভোগ করবে, যদি না তারা শোধরায়, রাজনৈতিক ম্যান্ডেট মেনে না চলে। মহানগর যুবদলের সভাপতি অ্যাডভোকেট আক্তারুজ্জামান শামীম বলেন, দল অনেক বড়। মতপার্থক্যও অনেক বেশি। এটা হওয়া উচিত না। এভাবে দাবি আদায় সম্ভব নয়। একমাত্র ঐক্য ঐক্য ঐক্যই কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পেঁৗঁছতে পারে। এ জন্য প্রত্যেকের ব্যক্তিগত স্বার্থকে জলাঞ্জলী দিয়ে ভেদাভেদ ভুলে দলের বৃহত্তর স্বার্থে ঐক্যবব্ধ হতে হবে।

বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক আ ক ন কুদ্দুসুর রহমান বলেন, একটি আন্দোলনের সফল সূচনা যারা কলুষিত করার চেষ্টা করেছে তাদের ছাড় দেবে না বিএনপি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর