সোমবার, ১ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা

অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে দিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ

নিজস্ব প্রতিবেদক

অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়েতে হাজার হাজার ডলার লেনদেনের মাধ্যমে প্রতারণার অভিযোগে জেডএম সাজ্জাদুল আলম নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এ প্রক্রিয়ায় তিনি বিভিন্ন ভিকটিমের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে সিআইডির ধারণা। সিআইডির সাইবার মনিটরিং টিম নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার মাস্টারপাড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে। এ সময় তার কাছ থেকে দুটি মোবাইলফোন ও তার ব্যবহৃত স্ক্রিল অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়। গতকাল দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংস্থার সাইবার ক্রাইম কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টারের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. কামরুল আহসান বলেন, একজন অস্ট্রেলিয়া-প্রবাসী বাংলাদেশি ডা. চৌধুরী সাইফুল আলম বেগের আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রয়োজনে অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে পেপাল, স্ক্রিল নেটলারের মাধ্যমে ডলার লেনদেনের প্রয়োজন হতো। সেই সুবাদে তিনি অভিযুক্ত সাজ্জাদুল আলমের সঙ্গে পরিচিত হন। মাঝে মাঝে সাজ্জাদুল ডা. বেগের সঙ্গে স্বাভাবিকভাবে ডলারের লেনদেন করে আসছিলেন। গত বছর থেকে এ বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অভিযুক্ত সাজ্জাদুল আলম প্রায় ১০ লাখ টাকা পরিমাণ ডলার প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাৎ করে নেন। যা ডা. বেগ বাংলাদেশে অবস্থানরত ডা. ফাহিম আহমেদকে দিতে বলেন। ডা. বেগ অভিযুক্ত সাজ্জাদুল আলমকে টাকা পরিশোধ করতে তাকে টাকা দেন। এক পর্যায়ে অভিযুক্ত সাজ্জাদুল আলম ডা. বেগের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। ডা. বেগ কোনো উপায় না পেয়ে সাইবার পুলিশ সিআইডির কাছে অভিযোগ করেন। পরে সিআইডি সাইবার পুলিশ তদন্ত করতে গিয়ে দেখে, অভিযুক্ত সাজ্জাদুল আলম আগে একজন আইটি ব্যবসায়ী ছিলেন। তিনি রাতারাতি বিত্তবান হওয়ার আশায় অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ের ডলার ব্যবসা শুরু করেন। প্রবাসী ভিকটিমের সঙ্গে তিনি আগে অল্প অল্প করে কিছু টাকা পাঠান। ফলে বিশ্বস্ততা তৈরি হয়। তিনি আমেরিকা প্রবাসী তাহমিদের সঙ্গেও প্রতারণা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সাজ্জাদুল দেশের অনেক ফ্রিল্যান্সারের পেপালের ডলার নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। অভিযুক্ত সাজ্জাদুল আলম প্রতারণার মাধ্যমে পাওয়া ডলার দিয়ে ইন্টারন্যাশনাল অনলাইন বেটিং করতেন। অভিযোগ তদন্ত করতে গিয়ে দেখা যায়, তার নামে কোর্টে তিনটি সিআর মামলা রয়েছে। প্রত্যেক মামলার বাদী ফ্রিল্যান্সিং ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। সাজ্জাদুল আলম বিভিন্ন উপায়ে মানুষের অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। দেশের ভিতরে অনেকে তার মাধ্যমে বিদেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোর্স ফি প্রদান করতে গিয়ে প্রতারণার শিকার হয়েছেন এবং অনেকে দেশের বাইরে থেকে অনলাইনে পণ্য কেনার জন্য তার কাছ থেকে পেপাল অথবা স্ক্রিলের ডলার নিতে গিয়ে প্রতারিত হয়েছেন। সাজ্জাদুল আলম এখন পর্যন্ত এ মাধ্যম ব্যবহার করে বিভিন্ন ভিকটিমের কাছে থেকে প্রায় ৫০ লাখ টাকা প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছেন। সিআইডি ধারণা করছে, এ প্রক্রিয়া ব্যবহার করে তিনি কয়েক কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর