মঙ্গলবার, ২ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা

জাতীয় প্রেস ক্লাবকে সংঘর্ষের ঢাল বানানো অপরাধের শামিল

-তথ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় প্রেস ক্লাবকে সংঘর্ষের ঢাল বানানো অপরাধের শামিল

তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, নিরপেক্ষ জাতীয় প্রতিষ্ঠান প্রেস ক্লাবকে কোনো অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা বা সংঘর্ষের ঢাল হিসেবে অপব্যবহার করা কখনই উচিত নয় এবং তা অপরাধের শামিল। প্রেস ক্লাব একটি নিরপেক্ষ জাতীয় প্রতিষ্ঠান, সাংবাদিকদের প্রতিষ্ঠান এবং সব মত ও পথের মানুষ, সব রাজনৈতিক দলের জন্য উন্মুক্ত। সুতরাং সেখান থেকে পুলিশের ওপর হামলা খুবই অনভিপ্রেত। গতকাল দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে  সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

 সুদীপ্ত কুমার দাস, মিঞা আলাউদ্দিন, শরফুদ্দিন এলাহী সম্রাট,  আজগর হোসেন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয় প্রেস ক্লাবে রবিবার পুলিশ ও ছাত্রদলের মুখোমুখি ঘটনা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান বলেন, প্রেস ক্লাবকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে ছাত্রদল হাজার হাজার ইটের টুকরা, পাথরের টুকরা পুলিশের ওপর নিক্ষেপ করে হামলা চালিয়েছে। প্রেস ক্লাবে তো কোনো পাথর থাকে না। এগুলো আগে থেকেই সংগ্রহ করে রাখা হয়েছে। প্রেস ক্লাবকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে এ ধরনের অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটানো কখনই উচিত নয় এবং এটি অপরাধের শামিল। এ ধরনের ঘটনা অবশ্যই অনভিপ্রেত, দুঃখজনক, অনুচিত এবং কেউ যাতে এভাবে প্রেস ক্লাবকে অপব্যবহার করতে না পারে সে জন্য আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।

এটিএন বাংলার একজন সাংবাদিক ছাত্রদলের ছুড়ে মারা ইটের আঘাতে আহত হলেন কেন- সে প্রশ্ন আগে আসা উচিত ছিল মন্তব্য করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ছাত্রদল গতকাল দেশে একটি ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করেছে, একটি অনাকাক্সিক্ষত ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশে একটি মহল পানি ঘোলার চেষ্টা করছে। এ অপচেষ্টা অতীতেও হয়েছে, কোনো লাভ হয়নি, এবারও কোনো লাভ হবে না।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন দেশে দেশে : ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনের তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরে এ সময় তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের দেশের এ আইনের ষষ্ঠ অধ্যায়ে যে শাস্তির বিধান রয়েছে তা ভারতের ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যাক্টের ১১তম অধ্যায়ে এবং পাকিস্তানের প্রোটেকশন অব ইলেকট্রনিক ক্রাইমস অ্যাক্টের ১৮ ধারায় আছে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে কম্পিউটার ফ্রড অ্যান্ড এবিউজ অ্যাক্ট, যুক্তরাজ্যে কম্পিউটার মিসইউজ অ্যাক্ট, নেপালে ইলেকট্রনিক ট্রানজেকশন অ্যাক্ট, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ফেডারেল ডিক্রি ল অব ২০১২ অন কমব্যাটিং সাইবার ক্রাইমস, জার্মানিতে নেটওয়ার্ক এনফোর্সমেন্ট অ্যাক্ট ২০১৭, অস্ট্রেলিয়ায় সাইবার ক্রাইম লেজিসলেশন অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট ২০১২, সিঙ্গাপুরে সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট ২০১৮ এ ধরনের আইন আছে। এ শুধু কয়েকটি দেশের উদাহরণ মাত্র। উন্নত দেশগুলোতেও এ ধরনের অপরাধের ক্ষেত্রে গ্রেফতার এবং শাস্তি বিধান করা হয়। তবে অবশ্যই আমিও আপনাদের মতো এ আইনের যাতে কোনো অপপ্রয়োগ না হয় সে জন্য সতর্ক থাকার পক্ষে।

‘মুশতাক আহমেদ কোনো ড্রাগ ব্যবহার করতেন কি না বা এর কোনো প্রভাব তার মৃত্যুতে আছে কি না’ সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, উনার মৃত্যু কীভাবে হয়েছে তা আমাদের জানা নেই। মৃত্যুর কারণ নিরূপণের জন্য যে তদন্ত কমিটি হয়েছে তাদের রিপোর্টে বেরিয়ে আসবে তিনি কোনো ড্রাগ ব্যবহার করতেন কি না বা উনার কীভাবে মৃত্যু হয়েছে, কিংবা কারা কর্তৃপক্ষের কোনো গাফিলতি ছিল কি না। তবে এ মৃত্যুর জন্য আমি নিজেও ব্যথিত এবং এটি অবশ্যই অনভিপ্রেত।

তথ্য থেকে ‘তথ্য ও সম্প্রচার’ মন্ত্রণালয় নাম প্রস্তাবিত : মতবিনিময়কালে সাংবাদিকরা তথ্য মন্ত্রণালয়ের নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। একটি প্রস্তাব পেশ করা হয়েছে। স্বাধীনতার পর এ মন্ত্রণালয়ের নাম ‘তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়’ই ছিল। পরে কোনো একসময় এটি পরিবর্তন করা হয়েছে। সম্প্রচারের বিষয়টা এ মন্ত্রণালয়ই দেখে। যেমন টেলিভিশনের সম্প্রচার, অন্যান্য মাধ্যমের সম্প্রচার সব বিষয় এ মন্ত্রণালয়ের অধিভুক্ত। এখন যেমন তথ্য মন্ত্রণালয় আছে তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ও আছে, এতে নানা জটিলতা এমনকি চিঠিপত্র উল্টাপাল্টা হয়ে যাচ্ছে।

ড. হাছান বলেন, এ মন্ত্রণালয়ে এখন টেলিভিশন, রেডিও, অনলাইন, আইপিসহ সম্প্রচারের কাজ ব্যাপক। বঙ্গবন্ধুর সময় এ মন্ত্রণালয়ের নাম তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় ছিল। এ ছাড়া ভারত, পাকিস্তানেও এ মন্ত্রণালয়ের নাম তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। এসব কারণেই আমরা এ উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। এটি মন্ত্রিসভায় পাস হতে হবে, প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পেতে হবে, সর্বশেষ রাষ্ট্রপতিরও অনুমোদন লাগবে। এটি এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে আছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর