বুধবার, ৩ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা

আসছে বর্ষা, টেনশনে চসিক

পানি নিষ্কাশনের ছয় খালের মুখ প্রায় বন্ধ, ডুবতে পারে নিম্নাঞ্চল

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

আসছে বর্ষা, টেনশনে চসিক

চট্টগ্রাম নগরের পানি নিষ্কাশনে অতিজরুরি বহদ্দারহাট থেকে বারৈপাড়া খাল খনন কাজ ৮ বছরেও শুরু করতে পারেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। নগরের পানি নিষ্কাশনের প্রধানতম ছয়টি খালের মুখ এখন প্রায় বন্ধ বা সরু। নগরের নালাগুলো পরিণত হয়েছে আবর্জনার ভাগাড়ে। এমন অবস্থায় আসন্ন বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতার বিষয়টি ভাবিয়ে তুলেছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনকে (চসিক)। অতীতের মতো আগামী বর্ষা মৌসুমেও জলাবদ্ধতার ভোগান্তির মুখোমুখি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ডুবতে পারে নগরের নিম্নাঞ্চল। নাভিশ্বাস ওঠার শঙ্কা নগরবাসীর। জানা যায়, নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) ৫ হাজার ৬১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ ও সংস্কার ও উন্নয়ন’ শীর্ষক মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পের অধীনে নগরের ৩৬টি খাল সংস্কার, প্রায় ৩ হাজার ১৫০টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, ২৪০ কিলোমিটার ড্রেন পরিষ্কার, ১৭৬ কিলোমিটার রিটার্নিং ওয়াল নির্মাণ, ৫৪টি ব্রিজ ও কালভার্ট নির্মাণ, কর্ণফুলী নদীর সঙ্গে সংযুক্ত পাঁচটি খালের মুখে রেগুলেটর নির্মাণ করা হচ্ছে। তবে নগরের পানি নিষ্কাশনের অন্যতম প্রধান খাল, পাথরঘাটার টেকপাড়া, কলাবাগিচা ও মরিয়ম বিবি খাল, ফিরিঙ্গিবাজারের ফিরিঙ্গিবাজার খাল, চাক্তাইয়ের চাক্তাই খাল ও রাজাখালী খালে বাঁধ দেওয়ায় সরু হয়েছে। খালগুলো কর্ণফুলী নদীর সঙ্গে যুক্ত। এসব খাল দিয়ে নগরের ১১টি ওয়ার্ডের পানি প্রবাহিত হয়ে কর্ণফুলীতে পড়ে। কিন্তু খাল খনন এবং দুই পাশে প্রতিরোধ দেয়াল নির্মাণের জন্য সাময়িকভাবে বাঁধ দেওয়ায় পানি চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। চসিকের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে সিডিএ মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।

কিন্তু এটি শেষ হতে আরও সময় লাগবে। বর্তমানে খালগুলোর সংস্কার কাজ চলায় পানি নিষ্কাশনে বাধাগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তাই বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতার বিষয়টি আমাদের ভাবিয়ে তুলেছে। এ নিয়ে সিডিএ’র চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের সঙ্গে বৈঠক করে করণীয় নির্ধারণ করা হবে। আমাদের উদ্দেশ্য হলো- আগামাী বর্ষা মৌসুমে যাতে মানুষকে অতিমাত্রায় দুর্ভোগ পোহাতে না হয়, সে ব্যাপারে প্রয়োজীয় জরুরি উদ্যোগ নেওয়া হবে। চসিকের প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা যায়, নগর উন্নয়নে প্রণীত মহাপরিকল্পনার সুপারিশ মতে, জলাবদ্ধতা নিরসনে ‘বহদ্দারহাট বারৈপাড়া হতে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত নতুন খাল খনন’ শীর্ষক প্রকল্পটি শুরুই করতে পারেনি চসিক।

 একাধিকবার খনন কাজ শুরু করা হলেও তা ছিল আনুষ্ঠানিকতানির্ভর। বাস্তবে প্রকল্পটি এখনো ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ার মধ্যেই আটকে আছে। এ নিয়ে নতুন মেয়র প্রকৌশল বিভাগের সঙ্গে প্রথম বৈঠকে ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন। নগরে বর্তমানে খালের মোট সংখ্যা ৫৭টি (সিডিএ সংস্কার করছে ৩৬টি)। এগুলোর মোট দৈর্ঘ্য ১৬১ কিলোমিটার ও গড় প্রস্থ ৭ দশমিক ২৮ মিটার। মোট পাকা নর্দমার দৈর্ঘ্য ৭৩৮ কি.মি এবং গড় প্রস্থ ১ দশমিক ১০ মিটার। কাঁচা নর্দমার দৈর্ঘ্য ২৭ কি.মি ও গড় প্রস্থ ১ দশমিক ৪০ মিটার।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর