বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘৭ মার্চ শেখ মুজিবুর রহমান যে ভাষণ দিয়েছেন, সেটি স্বাধীনতার কিংবা মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা নয়।’ তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ এদেশের মানুষকে স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস থেকে বঞ্চিত করে তাদের ওপর নিজেদের বানানো মিথ্যা ইতিহাস চাপিয়ে দিয়েছে। তরুণ প্রজন্মকে সত্য ইতিহাস থেকে বঞ্চিত করছে তারা। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বিএনপির বছরব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে ঐতিহাসিক ৭ মার্চের আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
বিএনপি স্থায়ী কমিটির আওয়ামী লীগ মিথ্যা সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বেগম সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘যুদ্ধ আর সংগ্রাম এক জিনিস নয়। যুদ্ধ একটা জাতির জীবনে একবারই হয়। আর সংগ্রাম একটা ব্যক্তির জীবনে সারাজীবনও চলতে পারে। কাজেই ৭ মার্চের ভাষণে মরহুম শেখ মুজিবুর রহমান যে সংগ্রামের কথা বলেছেন, সেটি স্বাধীনতা বা মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা ছিল না। কারণ, সেটি যদি স্বাধীনতা বা মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা হতো- তাহলে ৮ মার্চ থেকেই তো যুদ্ধ শুরু হয়ে যেত। কিন্তু তা না হয়ে ২৫ মার্চ পর্যন্ত পাকিস্তানিদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে গেছেন শেখ মুজিবুর রহমান। আর ৭ মার্চের ভাষণে তিনি পাকিস্তানি সরকারের নিকট জনগণের প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবি করেছেন।’মির্জা ফখরুল আরও বলেন, সুপরিকল্পিত ও সচেতনভাবে আওয়ামী লীগ এদেশের স্বাধীনতার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। স্বাধীনতার ৫০ বছর পর কেন আজ কথা বলার জন্য মুশতাককে জেলের ভিতরে মৃত্যুবরণ করতে হয়? কার্টুন আঁকার কারণে কেন আজ কিশোরকে টানা ৬৯ ঘণ্টার নির্যাতন সইতে হয়। ১০ মাস জেল খাটতে হয়। আমাদের ভোটাধিকার নেই। গণতন্ত্র নেই। এজন্য আমরা আজ বড় কাজে হাত দিয়েছি। সেটি হলো গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও খালেদা জিয়ার মুক্তি। সারা দেশে আমাদের নেতা-কর্মীদের নামে দায়ের করা ৩৫ লাখ মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে নিতে হবে ।
ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, এদেশের মানুষ যা প্রত্যাশা করেছিল তার কোনো প্রতিফলন ঘটেনি ৭ মার্চের ভাষণে। তিনি বলেন, সংগ্রাম আর যুদ্ধ এক জিনিস নয়।
মির্জা আব্বাস বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে এই ৭ মার্চের ভাষণটুকু ছাড়া আর কোনো পুঁজিপাটা নেই। আওয়ামী লীগের বানানো মিথ্যা ইতিহাস দিয়ে শহীদ জিয়াউর রহমানকে তারা খাটো করতে চাচ্ছে।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ২৭ মার্চ চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন মেজর জিয়াউর রহমান। ৭ মার্চের ভাষণে যুদ্ধের কোনো ঘোষণা আসেনি।