মঙ্গলবার, ৯ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা

সাবেক এমপির ভাতিজার বাড়িতে অস্ত্রের কারখানা

অস্ত্র ও তৈরির সরঞ্জাম জব্দ, দুজন আটক

পাবনা প্রতিনিধি

পাবনার বেড়া উপজেলার নাটিয়াবাড়ীতে সাবেক সংসদ সদস্যের ভাতিজার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের নিচতলায় অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির কারখানার সন্ধান পেয়েছে পুলিশ। গতকাল বিকালে সেখানে অভিযান চালিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র, অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম, বিপুল ভেজাল ওষুধসহ দুজনকে আটক করা হয়। তারা পাবনা-২ আসনের সাবেক এমপি খন্দকার আজিজুল হক আরজুর অনুসারী বলে জানা গেছে। স্থানীয় রাজনীতি ও পাশের নগরবাড়ী ঘাটের নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে আরজুর অনুসারী সন্ত্রাসীদের সরবরাহের জন্য এসব অস্ত্র তৈরি হচ্ছিল বলেও জানিয়েছে পুলিশ। এমপির ভাতিজা ও বাড়ির মালিক আবু বকর পলাতক রয়েছেন। রাজনৈতিকভাবে তাকে হেয় করতেই অপপ্রচার চালানো হচ্ছে বলে দাবি করেন আওয়ামী লীগদলীয় সাবেক এই এমপি। পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম জানান, আমিনপুরের নাটিয়াবাড়ীর একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের নিচতলায় অস্ত্র তৈরির কারখানা রয়েছে এমন গোপন সংবাদে অভিযান চালায় গোয়েন্দা পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে সম্পূর্ণ প্রস্তুত দুটি ওয়ান শুটার গান, একটি রিভলবার, অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম ও বিপুল পরিমাণ অনুমোদনহীন ভেজাল ওষুধ উদ্ধার করা হয়। আটকরা হলেন বেড়া উপজেলার রাকসা ভারেঙ্গা এলাকার মৃত মোকসেদ আলীর ছেলে আবদুল্লাহ আল মনসুর ওরফে মিঠু (৪৩) ও আমিনপুর থানার রাজনারায়ণপুর গ্রামের হানিফ কাজীর ছেলে আবদুল্লাহ আল সিয়াম (১৯)। নাটিয়াবাড়ীর আওয়ামী লীগ কর্মী শাহ আলম ব্যাপারী জানান, সাবেক এমপি আরজু খন্দকার দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় জামায়াত নেতা ইমান আলী মোল্লাকে নিয়ে নগরবাড়ী ঘাটের দখল ও চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করছেন। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও আওয়ামী লীগ নেতারাও বিব্রত। তবে সাবেক এমপি তার ভাতিজা আবু বকর, আবদুল মজিদ ও নাতি মেহেদী হাসান শোভনকে দিয়ে পুরো এলাকায় আধিপত্য বিস্তার এবং মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছেন। বিষয়টি এলাকায় ওপেন সিক্রেট হলেও ভয়ে কেউ বাধা দেওয়ার সাহস পায় না। স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও জনপ্রতিনিধিরাও এজন্য বিব্রতবোধ করেন। এমপির বাড়ি ও কারখানাটি লাগোয়া বলেও জানান তিনি। তবে আধিপত্য বিস্তার ও সন্ত্রাসীদের প্রশ্রয়দানের অভিযোগ অস্বীকার করে সাবেক এমপি বলেন, ‘এলাকায় আমার আত্মীয়স্বজন নেই। আমার নিজেরই কোনো আশ্রয়স্থল নেই সেখানে সন্ত্রাসীদের প্রশ্রয় দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। আমি কখনই চাঁদাবাজিতে যুক্ত ছিলাম না, রাজনৈতিকভাবে হেয় করতেই অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।’ এদিকে ঘটনার পর অস্ত্র কারখানাটি পরিদর্শন করেন পাবনার পুলিশ সুপার মুহিবুল ইসলাম খান। তিনি জানান, আটকরা পেশাদার অস্ত্র ব্যবসায়ী। এরা বিভিন্ন সময় স্থানীয় সন্ত্রাসীদের চাহিদা অনুযায়ী অস্ত্র সরবরাহের পাশাপাশি নিজেরাও ভাড়াটে সন্ত্রাসী হিসেবে ব্যবহার করে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে। তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতা কারা সে বিষয়ে জানতেও অনুসন্ধান করছে পুলিশ। পুলিশ সুপার আরও জানান, আটকদের বিরুদ্ধে আমিনপুর থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর