রূপগঞ্জে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা স্থানীয় আওয়ামী লীগ কার্যালয় ও ছাত্রলীগ নেতার বাড়িতে সশস্ত্র হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে। সন্ত্রাসীরা একই পরিবারের পাঁচজনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। তারা নগদ, স্বর্ণালঙ্কারসহ প্রায় ৩৫ লাখ টাকার মালামাল লুটে নিয়েছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় চরম উত্তেজনা চলছে। হামলার আগে পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর এপিএস কামরুজ্জামান হীরার পক্ষ থেকে বলা হয়, হীরাকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার গাড়িতে গুলি করা হয়েছে। তবে সন্ত্রাসী হামলায় ক্ষতিগ্রস্তরা বলছেন, হামলার ঘটনা ঘটানোর জন্যই হীরা নিজের গাড়িতে গুলি করার নাটক সাজিয়েছেন। গত সোমবার রাতে কায়েতপাড়া ইউনিয়নের বড়ালুপাড়াগাঁও ও চনপাড়া বড়বাড়ী এলাকায় ঘটে এ ঘটনা। এদিকে হামলা, ভাঙচুর, লুট ও আহতের ঘটনার প্রতিবাদে এবং অভিযুক্তদের গ্রেফতার দাবিতে বড়ালুপাড়াগাঁওয়ে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সভা করেছে এক পক্ষ। আরেক পক্ষ পূর্বগ্রাম এলাকায় বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সভা করেছে। আহত আশরাফুল আলম জেমিন জানান, তিনি কায়েতপাড়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করতে কায়েতপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি জাহেদ আলী বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। আর তার অবৈধ কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করায় সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে জাহেদ আলী ও বহিরাগত কামরুজ্জামান হীরার নেতৃত্বে শমসের ডাকাত, স্বপন, শাওন, নাজমা বেগম, লিটন, মিল্লাত, ফারুক ভুইয়া, রাসেলসহ ২০-২৫ জন রামদা, চাপাতি, পিস্তলসহ সশস্ত্র অবস্থায় এলাকায় মহড়া দিয়ে আতঙ্কের সৃষ্টি করে। পরে আশরাফুল আলম জেমিনের বাড়ির গেটের তালা ভেঙে ভিতরে ঢুকে ভাঙচুর চালায়। বাধা দিতে গেলে জেমিনের মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে। এ সময় মা রাশিদা বেগম ও ভাবি রিয়া আক্তার, ভাতিজি আফিফা, বড় ভাই আহাম্মদ হাসান সৈকত এগিয়ে এলে তাদের পিটুনি দেয় সন্ত্রাসীরা। একপর্যায়ে হামলাকারীরা ঘরে থাকা নগদ ৮ লাখ টাকা, ২৪ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, দুটি এলইডি টেলিভিশন, একটি এসি, একটি মোটরসাইকেলসহ প্রায় ৩৫ লাখ টাকার মালামাল লুটে নেয়। সন্ত্রাসী তান্ডবের খবর পেয়ে রূপগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এ ব্যাপারে কামরুজ্জামান হীরার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি পাল্টা অভিযোগ করে জানান, তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার ব্যবহৃত মাইক্রোবাসে সন্ত্রাসীরা গুলি চালিয়েছে। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে অন্যান্য অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেন। আশরাফুল আলম জেমিন বলেন, হামলার ঘটনা ঘটানোর জন্যই কামরুজ্জামান হীরা নিজের গাড়িতে গুলি করার নাটক সাজিয়েছেন।
কায়েতপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুল আউয়াল বলেন, আওয়ামী লীগ কার্যালয় ভাঙচুর ও ছাত্রলীগ নেতা আশরাফুল আলম জেমিনের বাড়িতে হামলার ঘটনা ন্যক্কারজনক। এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত জাহেদ আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহসিনুল কাদির বলেন, তারা পৃথক ঘটনায় দুটি অভিযোগ পেয়েছেন। একটি মামলা হয়েছে, অন্যটি প্রক্রিয়াধীন। অভিযুক্তদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।