বৃহস্পতিবার, ১১ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা

মেয়ের সামনে প্রাণ গেল মায়ের

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ডাক্তার দেখানোর পর মেয়ের সামনে যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় গতকাল মা রেহেনা বেগম (৫০) নিহত হয়েছেন। গ্রাম থেকে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য এসে দুর্ঘটনার শিকার হন তিনি। চোখের সামনে মায়ের এমন মৃত্যু দেখে কিছুতেই নিজেকে সান্ত্বনা দিতে পারছেন না মেয়ে তানজিনা আক্তার মেঘলা।

কিছু দিন আগে রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে রেহেনা বেগমের পেটের টিউমার অপারেশন করানো হয়। এরপর বাড়িতেই ছিলেন। তবে তার বুকে ব্যথা ছিল। এজন্য আবার সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে এনে চিকিৎসা করানো হয়। ওইদিন তার এনজিওগ্রাম করা হয়।

গতকাল সকালে নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার কুন্দারপাড় গ্রামের বাড়ি থেকে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে আসেন সেই পরীক্ষার রিপোর্ট নিতে। রিপোর্টে সবকিছু নরমাল আসে। এরপর মা-মেয়ে হাসপাতাল থেকে বের হন কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে আরেকটি পরীক্ষার রিপোর্ট আনতে। সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের সামনের রাস্তা পার হচ্ছিলেন তারা। এমন সময় গাবতলী থেকে আসা ওয়েলকাম পরিবহনের একটি বাস রেহেনাকে ধাক্কা দেয়। তিনি গুরুতর আহত হন। সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালেই নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক বেলা দেড়টায় তাকে মৃত ঘোষণা করেন। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।

ঢামেকে মেঘলা বলেন, ‘মায়ের হাত ধরেই রাস্তা পার হচ্ছিলাম। তখন একটি বাস খুব দ্রুত আসতে থাকে। আমি মায়ের হাত ছেড়ে বাসটিকে আস্তে আসার জন্য সংকেত দিলেও চালক গতি কমাননি। তখন মা আমার হাত থেকে ছাড়া পেয়ে বাসটির সামনে চলে যান। তখন ওই বাস তাকে জোরে ধাক্কা দেয়। এতে মা ছিটকে পড়ে যান।’

জানা যায়, রেহেনার স্বামী জসিম উদ্দিন। তাদের এক ছেলে, তিন মেয়ে। নরসিংদীর শিবপুরে একটি কিন্ডারগার্টেনে শিক্ষকতা করতেন তিনি। তবে অসুস্থতার কারণে বর্তমানে অবসরে ছিলেন।

শেরেবাংলানগর থানার এএসআই সমীরচন্দ্র ভৌমিক জানান, ওয়েলকাম পরিবহনের বাসটি জব্দ করা হয়েছে। তবে চালক-হেলপার আটক হয়েছেন কি না সে বিষয়ে কিছু বলতে পারেননি তিনি।

সর্বশেষ খবর