শনিবার, ১৩ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা

সাত জেলার শিশুদের কিডনি চিকিৎসায় তিনজন বিশেষজ্ঞ

ভোগান্তিতে রোগী ও অভিভাবকরা

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, কক্সবাজার এবং তিন পার্বত্য জেলায় মাত্র তিনজন শিশু কিডনি বিশেষজ্ঞ রয়েছেন। এর মধ্যে একজন চট্টগ্রাম সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল এবং দুজন চট্টগ্রাম মেডিকেলের শিশু কিডনি বিভাগে কর্মরত। ফলে সবেধন নীলমনি তিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের ওপর নির্ভরশীল চট্টগ্রাম বিভাগের সাত জেলার শিশু কিডনি রোগীরা। এ কারণে সংকটে পড়তে হয় রোগীদের। সবচেয়ে ভোগান্তি-দুর্ভোগ পোহাতে হয় অসহায়-গরিব ও খেটে খাওয়া রোগীর স্বজনদের। জানা যায়, ২০১০ সালে পেডিয়াট্রিক নেফ্রোলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশের উদ্যোগে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সরকারি পর্যায়ে শিশু কিডনি বিভাগের যাত্রা করে। তখন ৪৩টি পদ সৃষ্টি করে। এর মধ্যে অধ্যাপক পদ ৫টি, সহযোগী অধ্যাপক পদ ১০টি, সহকারী অধ্যাপক পদ ১৫টি ও রেজিস্ট্রার পদ ১৩টি। ২০১৩ সালের ১১ ডিসেম্বর ১১টি শয্যা নিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেলে শিশু কিডনি বিভাগ যাত্রা করে। বর্তমানে এ বিভাগে তিনজন সহযোগী অধ্যাপক, একজন সহকারী অধ্যাপক ও একজন সহকারী রেজিস্টার কর্মরত। প্রতিদিন ভর্তি থাকে গড়ে ১১ জন রোগী। তাছাড়া প্রতিদিন শিশুস্বাস্থ্য বিভাগ থেকে ৩ থেকে ৫ জন রোগীকে কিডনি ওয়ার্ডে রেফার করা হয়।

 তবে শয্যা সংকটে তাদের ভর্তি করানো যায় না। তাছাড়া প্রতিদিন বহির্বিভাগে ৮-১০ জন রোগী চিকিৎসা নেয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ডায়ালাইসিস করা হয়েছে ১১৬ জন শিশুর। প্রতিনিয়ত রোগীর সংখ্যা বাড়লেও সাত বছর পরও বাড়েনি শয্যা।

হাসপাতালের কিডনি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. মারুফ উল কাদের বলেন, ‘শিশুদের একটি অংশ কিডনির জন্মগত ত্রুটি নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। যা সময়মতো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে থাকলে ভালো হয়। বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেলে কিডনি বায়োসপি, ডায়ালাইসিস, আন্ত ও বহির্বিভাগে প্রয়োজনীয় সেবা দেওয়া হয়। কিন্তু চট্টগ্রাম বিভাগের বিশাল জনগোষ্ঠীকে সেবা দিতে প্রয়োজন বিশেষজ্ঞ শিশু কিডনি চিকিৎসক, প্রশিক্ষিত নার্সসহ অন্যান্য জনবল। তিনি বলেন, শিশু কিডনি রোগীর উন্নত চিকিৎসায় সিএপিডি সেবা, হিমোডায়ালাইসিসের প্রয়োজনীয় স্থান সংরক্ষণ, শিশু কিডনি ট্রান্সপ্লান্টের জন্য ওয়ার্ডের শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধি এখন সময়ের দাবি। প্রয়োজনীয় এসব উদ্যোগ নিলে শিশু কিডনি রোগীদের দুর্ভোগ কমবে। সবাই পাবে আধুনিক-উন্নত চিকিৎসা।      

জানা যায়, চমেক হাসপাতালের শিশু কিডনি ওয়ার্ডের বহির্বিভাগের নিজস্ব কোনো কর্নার নেই। ফলে বহির্বিভাগের রোগী দেখা হয় ওয়ার্ড সংলগ্ন ক্লাস রুমে। ডায়ালাইসিস মেশিন আছে। কিন্তু বিভাগে প্রয়োজনীয় স্থান নেই। ফলে একমাত্র শিশু কিডনি ডায়ালাইসিস মেশিনটিও স্থাপন করতে হয়েছে বয়স্কদের কিডনি বিভাগে। বয়স্কদের ডায়ালাইসিস ওয়ার্ডে শিশু কিডনি রোগীদের ডায়ালাইসিস করা হয়। নেই জনবলও। এভাবে স্থান সংকট ও নানা সমস্যা সঙ্গী হয়ে আছে শিশু কিডনি বিভাগটি। ফলে খুঁড়িয়েই চলছে চট্টগ্রামসহ সাত জেলার একমাত্র শিশু কিডনি চিকিৎসা কেন্দ্রটি।    

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর