শুক্রবার, ১৯ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা

পুরাকীর্তি ‘বড়কুঠি’র সংস্কার শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহী মহানগরীর পদ্মাপাড়ে অবস্থিত সংরক্ষিত পুরাকীর্তি ‘বড়কুঠি’র সংস্কার ও সংরক্ষণ কাজের উদ্বোধন করা হয়েছে। গতকাল বেলা ১১টায় বড়কুঠি সংস্কার ও সংরক্ষণ কাজের উদ্বোধন করেন সিটি মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। কাজের উদ্বোধন শেষে বড়কুঠি পরিদর্শন করেন তিনি। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মেয়র বলেন, ‘বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন নিদর্শন বড়কুঠি। অষ্টাদশ শতাব্দীতে ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য বাংলায় এসে ডাচ্রা রাজশাহীর পদ্মাতীরে এ ভবনটি নির্মাণ করেছিলেন। ১৯৫৩ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর বড়কুঠি ভবনে প্রশাসনিক কার্যক্রম শুরু হয়। এর পর থেকে এটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায়। বড়কুঠিকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষায় আমি প্রথমবার মেয়র থাকাকালে চেষ্টা করেছিলাম। তৎকালীন রাবি উপাচার্যকে অনুরোধ জানিয়েছিলাম রাজশাহী সিটি করপোরেশনের অর্থায়নে এর সংস্কারের জন্য। কিন্তু সে সময় বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইতিবাচক সাড়া দেননি। আজকে আনন্দের দিন অনেক পরে হলেও প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর বড়কুঠির সংস্কার ও সংরক্ষণ কাজ শুরু করতে পেরেছে।’

মেয়র আরও বলেন, পদ্মাপাড়ে মনোরম পরিবেশে অবস্থিত বড়কুঠি পর্যটকদের আকর্ষণ করবে। বড়কুঠি বিশে^র মধ্যে আইকনিক সিম্বল হতে পারে। এ ছাড়া রাজশাহীর পুঠিয়া রাজবাড়ি, বাগমারা তাহেরপুরে কংসনারায়ণের রাজবাড়িতে অবস্থিত মন্দিরসহ অন্যান্য প্রাচীন স্থাপনা ভালোভাবে সংরক্ষণ করে বিশ^বাসীর কাছে তুলে ধরা সম্ভব হলে দেশি-বিদেশি পর্যটকরা আকর্ষিত হবেন। পর্যটকদের আগমনে রাজশাহী সমৃদ্ধ হবে। আগামীতে পর্যটন বাংলাদেশের অন্যতম একটি আয়ের খাতে পরিণত হবে।

অনুষ্ঠানে লেখক-গবেষক মাহবুব সিদ্দিকী বলেন, রাসিক মেয়রের একক প্রচেষ্টা ও ইচ্ছায় অবশেষে বড়কুঠি সংরক্ষিত পুরাকীর্তি হিসেবে সংস্কার ও সংরক্ষণের কাজ শুরু করা হলো। রাজশাহীর পর্যটনশিল্পকে এগিয়ে নিতে আজকের দিন মাইলফলক।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর, রাজশাহী ও রংপুর অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক নাহিদ সুলতানা। তিনি বলেন, ২০১৮ সালের মে মাসে বড়কুঠিকে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সংরক্ষিত পুরাকীর্তি হিসেবে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। বড়কুঠির সংস্কার ও সংরক্ষণ কাজ কভিড-১৯-এর কারণে শুরু হতে কিছুটা বিলম্ব হলো। প্রথম পর্যায়ে ৪ লাখ ৮৫ হাজার টাকার সংস্কার কাজ শুরু হয়। ইতিমধ্যে বড়কুঠিকে একটি প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে, সে প্রকল্প থেকে বড় অঙ্কের অর্থ পাওয়া যাবে। সে প্রকল্পের মাধ্যমে বৃহৎ পরিসরে সংস্কার, সংরক্ষণ ও জাদুঘর করা হবে। তিনি আরও বলেন, সংস্কার ও সংরক্ষণের পর বড়কুঠিকে জাদুঘরে পরিণত করা হবে। যেহেতু এটি ডাচ্রা নির্মাণ করেছিলেন তাই জাদুঘরটি ডাচ্দের ব্যবহৃত জিনিসপত্র, ছবি-পেইন্টিং, বড়কুঠি নির্মাণের ইতিহাসসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সমৃদ্ধ করা হবে। কাজ শেষে জাদুঘরটি জনগণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। ডাচ্দের ব্যবহৃত কোনো জিনিসপত্র, তথ্য-উপাত্ত কারও কাছে থেকে থাকলে তা প্রদানের অনুরোধ করেন তিনি।

সর্বশেষ খবর