বুধবার, ২৪ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা

শত বছর পর জোয়ার-ভাটা দেখবেন যশোর শহরবাসী

ভৈরব খনন প্রকল্পের কাজ শেষ পর্যায়ে

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর

শত বছর পর জোয়ার-ভাটা দেখবেন যশোর শহরবাসী

যশোরসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে ভৈরব খননের দাবি করে আসছিলেন। সে দাবির প্রতি সাড়া দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুধু ভৈরব খননই নয়, এর আশপাশের এলাকার পানি ব্যবস্থারও উন্নয়ন করার প্রতিশ্রুতি দেন। সে অনুযায়ী ২০১৬ সালের ১৬ আগস্ট ২৭২ কোটি টাকার একটি প্রকল্প একনেকে পাস করা হয়। ‘ভৈরব রিভার বেসিন এলাকায় জলাবদ্ধতা দূরীকরণ ও টেকসই পানি ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন প্রকল্প’ নামের এই প্রকল্পে পাঁচ বছরের মধ্যে ভৈরবের ৯২ কিলোমিটার খনন কাজ শেষ করার কথা বলা হয়। ২০১৮ সালের ১৮ জানুয়ারি থেকে শুরু হয় খনন কাজ। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, নানা কারণে তিন দফায় এ প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। আগামী বছর অর্থাৎ ২০২২ সালের জুনের মধ্যে এ কাজ শেষ হবে বলে তারা আশা করছেন। তারা বলছেন, এরই মধ্যে খনন কাজের ৮০ ভাগ শেষ হয়েছে। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, যশোরের চৌগাছা উপজেলার তাহেরপুর থেকে অভয়নগর উপজেলার আফরাঘাট পর্যন্ত ভৈরবের ৯৬ কিলোমিটার অংশের বেশিরভাগ জায়গাতেই খননকাজ শেষ করা হয়েছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে যশোর শহরের ভাটিতে ১০/১৫ কিলোমিটারের মধ্যে ভৈরবে এখন জোয়ার-ভাটা খেলছে। কিন্তু যশোর শহর অংশে দখলদার উচ্ছেদসহ নানা জটিলতায় খনন কাজ থমকে আছে। নদের বিভিন্ন স্থানে ছোট ছোট যেসব ব্রিজ-কালভার্ট রয়েছে, সেগুলো অপসারণ না করায় জোয়ার-ভাটা শহরের কাছাকাছি আসতে পারছে না। ম্যাপ অনুযায়ী নদের গড় প্রস্থ যেখানে ১৫০ থেকে ৩০০ মিটার, সেখানে বেশিরভাগ ব্রিজ-কালভার্ট করা হয়েছে ১২ থেকে ৭০ মিটার। অপরিকল্পিত এসব ব্রিজ-কালভার্ট অপসারণ করে পূর্ণাঙ্গভাবে নদটি খনন করতে না পারলে খননের শতভাগ সুবিধা পাওয়া যাবে না বলে মনে করছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তারাও।

 পাউবো যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী তাওহীদুল ইসলাম বলেন, ভৈরবের ৫১টি ব্রিজ-কালভার্ট চিহ্নিত করা হয়েছে, যেগুলো অপসারণ করা দরকার। কিন্তু এ ব্রিজ-কালভার্টগুলো সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের হওয়ায় তাদেরকে এসব ব্রিজ-কালভার্ট অপসারণের জন্য বলা হয়েছে। যশোর শহর অংশের খননকাজে কিছুটা জটিলতা আছে, সেটাও সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু যশোরবাসী চান, প্রকল্পের মেয়াদ যেন আর বাড়ানো না হয়। তারা চান, যত দ্রুত সম্ভব সুষ্ঠুভাবে খননকাজ শেষ হোক। যত দ্রুত সম্ভব জোয়ার-ভাটা শুরু হোক যশোর শহর পর্যন্ত, নদীকেন্দ্রিক যোগাযোগ, বাণিজ্য আবারও জেগে উঠুক।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর