শুক্রবার, ২ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

নারী প্রতিনিধিত্বের অগ্রগতি জানতে দলগুলোকে চিঠি দিচ্ছে ইসি

দ্বৈত ভোটার যাচাইয়ে উপজেলা পর্যায়ে কমিটি

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলো সব স্তরের কমিটিতে ৩৩ ভাগ নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার অগ্রগতি জানতে দলগুলোকে চিঠি দেবে নির্বাচন কমিশন। অন্যদিকে বিদ্যমান ভোটার তালিকায় থাকা দ্বৈত ভোটারদের বিরুদ্ধে ঢালাও মামলা না দিয়ে, উপজেলা পর্যায়ে কমিটি করে শুনানির মাধ্যমে নিষ্পত্তির নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। গতকাল নির্বাচন কমিশন সভায় এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদার সভাপতিত্বে কমিশন সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী এবং ইসি সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

২০০৮ সালে দলগুলোর নিবন্ধন প্রথা চালু করে ইসি। ২০২০ সালের মধ্যে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে (আরপিও) মেনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলো সব স্তরে ৩৩ ভাগ নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।

কমিশন সভার সিদ্ধান্তের বিষয়ে ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোকে চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কিন্তু দলগুলো সব শেষ অগ্রগতি ইসিকে জানায়নি। এখন কী অবস্থায় রয়েছে তা জানতে দলগুলোকে চিঠি দেওয়া হবে। বিদ্যমান আরপিওর মধ্যে নারী প্রতিনিধিত্ব নিয়ে আইন সংস্কার উদ্যোগের মধ্যে এ সিদ্ধান্ত এলো।

আরপিওর ৯০ খ(২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় কমিটির সব দলের সব স্তরের কমিটিতে নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতে ২০২০ সাল লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। এখন ইসিতে ৪০টি নিবন্ধিত দল রয়েছে। কিন্তু ৩৩ শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্বের শর্ত কেউ নিশ্চিত করতে পারেনি।

গণফ্রন্ট ও সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট নামের ছোট দুটি দল তাদের সব কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারী প্রতিনিধি রাখার দাবি করলেও তা যাচাই করেনি নির্বাচন কমিশন। এ বাস্তবতায় আইন সংস্কার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তাতে লক্ষ্যমাত্রা পূরণে আরও সময় দেওয়ারও প্রস্তাব আসে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সুপারিশ অনুযায়ী শর্তপূরণে আরও ১০ বছর সময় দিয়ে গণপ্রতিনিধিত্ব আইন (আরপিও) সংশোধনের প্রস্তাবনা ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানান।

দ্বৈত ভোটার যাচাই করতে কমিটি : বিদ্যমান ভোটার তালিকায় দ্বৈত ভোটারদের ঢালাও মামলা না দিয়ে উপজেলা পর্যায়ে কমিটি করে শুনানির মাধ্যমে নিষ্পত্তির নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। গতকাল কমিশন সভায় এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। সভা শেষে ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, যারা সরল বিশ্বাসে দ্বৈত ভোটার হয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে না। আর যারা অসৎ উদ্দেশ্যে দ্বৈত ভোটার হয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে মামলা করবে ইসি। কারও বিরুদ্ধে মামলা করা হবে কি না, তা একটি কমিটি যাচাই-বাছাই করবে। এ জন্য উপজেলা পর্যায়ে একটি কমিটি গঠন করা হবে। ওই কমিটি উপযুক্ত শুনানি নিয়ে যাচাই-বাছাই করবে।

২০০৮ সাল থেকে গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৫ লাখ ২৯ হাজার ৮০৬ জন দ্বৈত ভোটার শনাক্ত হয়েছে। এ ছাড়া আরও ৬ লাখ ৩৮ হাজার ১৩৯ জনের আঙুলের ছাপ ইসির সার্ভারে থাকা বর্তমান ভোটারের আঙুলের ছাপের সঙ্গে মিল পাওয়া গেছে। তারা বলেন, ইতিমধ্যে ১ হাজার ৫৭ জন দ্বৈত ভোটারের বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য মাঠপর্যায়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। রেজিস্ট্রেশন অফিসার তথা উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসার ৫৫৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর