শিরোনাম
সোমবার, ৫ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

এক সপ্তাহের লকডাউনে বাড়ি ফিরছেন উদ্বিগ্ন মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক

এক সপ্তাহের লকডাউনে বাড়ি ফিরছেন উদ্বিগ্ন মানুষ

করোনাভাইরাসের প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় লকডাউন ঘোষণার পর গতকাল সদরঘাটে বাড়ি ফেরা মানুষের ভিড় -বাংলাদেশ প্রতিদিন

আজ থেকে এক সপ্তাহের লকডাউনে বাড়ি ফিরছেন উদ্বিগ্ন সাধারণ মানুষ। রাজধানী ছেড়ে গ্রামের বাড়ি যাচ্ছেন তারা। এ কারণে রেল, লঞ্চ ও বাসে ব্যাপক ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। বাসে প্রতি দুই সিটে একজন যাত্রী বসানো হলেও লঞ্চে উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। শারীরিক দূরত্ব, স্বাস্থ্য বিধির কোনো বালাই ছিল না লঞ্চে। অথচ লঞ্চে ভাড়া আদায় করা হচ্ছে বর্ধিত হারে। আজ থেকে সাত দিন গণপরিবহন বন্ধ থাকছে। তাই গতকাল বাড়ি ফেরা মানুষের উপচেপড়া ভিড় ছিল বাস, রেল, লঞ্চ ঘাটে। এ ছাড়া মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ফেরিঘাটে গতকাল যাত্রী ও যানবাহনের চাপ ছিল বেশি। সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, গতকাল দুপুরে গাবতলী বাস স্টেশনে ঘরে ফেরা মানুষের ব্যাপক ভিড় ছিল। এ ছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে বাস, সিএনজি, রিকশায় মহাখালী, সায়েদাবাদ, গাবতলী বাস টার্মিনালেও যেতে দেখা গেছে ঘরে ফেরা মানুষদের। এ ছাড়া কমলাপুল, বিমানবন্দর রেল স্টেশনেও ব্যাপক ভিড় ছিল। এদিকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ সামাল দিতে আজ থেকে সাত দিন গণপরিবহন চলাচল বন্ধের পাশাপাশি বাজার-মার্কেট, হোটেল-রেস্তোরাঁসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে- সকল প্রকার গণপরিবহন (সড়ক, নৌ, রেল ও অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট) বন্ধ থাকবে। তবে, পণ্য পরিবহন, উৎপাদন ব্যবস্থা, জরুরি সেবার ক্ষেত্রে এই আদেশ প্রযোজ্য হবে না। এ ছাড়া বিদেশগামী/বিদেশ প্রত্যাগত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে না। এ ছাড়া এক সপ্তাহের লকডাউন ঘোষণার কারণে বিভাগীয় শহর থেকেও মানুষ গ্রামে ফিরছে। কেউ জরুরি প্রয়োজন সারছে। এসব কারণে বরিশালের দুটি বাস টার্মিনালে এবং নদীবন্দর থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়া লঞ্চ ও বাসে ব্যাপক ভিড় ছিল। নগরীর নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এবং রূপাতলী বাস টার্মিনাল থেকে বিভিন্ন গন্তব্যের বাসে প্রতি দুই সিটে একজন করে যাত্রী বসানো হয়েছে। তবে বাসের সিটে জীবাণুনাশক স্প্রে করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ সাধারণ যাত্রীদের।

টিকিটের জন্য কমলাপুরে দীর্ঘ লাইন : টিকিটের জন্য গতকাল রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। টিকিট প্রত্যাশীদের লাইন স্টেশনের কাউন্টার থেকে স্টেশনের বাইরেও ছড়িয়ে পড়েছিল। টিকিট প্রত্যাশীদের দীর্ঘ লাইনের পাশাপাশি কমিউটার ট্রেনগুলোতে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন করতে দেখা গেছে। গাদাগাদি করে যাত্রী নিয়ে প্রতিটি ট্রেন স্টেশন ত্যাগ করতে দেখা গেছে।

যাত্রীর চাপ বাস টার্মিনালে : শনিবার ‘লকডাউন’ হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে রাজধানী ছাড়তে শুরু করেন নগরবাসী। এতে যাত্রীর চাপ বেড়েছে বাস টার্মিনালসহ ঢাকা থেকে বের হওয়ার পথগুলোতে। গতকাল গাবতলী বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি কাউন্টারের সামনে যাত্রীদের ব্যাপক উপস্থিতি। বিশ্রামাগারসহ সব জায়গায় অপেক্ষা করছেন যাত্রীরা। কেউ যাচ্ছেন একা, কেউ পরিবারসহ। সবাই ছুটছেন আপন গন্তব্যে। কিছুক্ষণ পরপর বাসস্ট্যান্ড থেকে যাত্রীবোঝাই বাস বেরিয়ে যাচ্ছে দূরপাল্লার গন্তব্যে। যদিও সরকারি নির্দেশ মেনে বাসগুলো এখন ৫০ শতাংশ যাত্রী নিচ্ছে।

এতে স্বাভাবিকের চেয়ে দ্বিগুণ চাপ সামলাতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পরিবহন সংশ্লিষ্টরা। আর যাত্রীরা বলছেন, দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেও বাস পাওয়া যাচ্ছে না।দেখা গেছে, যাত্রীদের সঙ্গে মাস্ক আছে ঠিকই। তবে সেটি পরিপূর্ণভাবে কাউকে পরে থাকতে দেখা যায়নি। কারও মাস্ক ঝুলছে থুতনিতে, আবার কারওবা হাতে। বাসস্ট্যান্ডে একজন আরেকজনের সঙ্গেই লেপ্টে বসে থাকতে দেখা গেছে।

সর্বশেষ খবর