মঙ্গলবার, ৬ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

সবুজ মাঠে সূর্যমুখীর হাসি

দিনাজপুর প্রতিনিধি

সবুজ মাঠে সূর্যমুখীর হাসি

দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় এবারই প্রথম বাণিজ্যিকভাবে সূর্যমুখী ফুলের চাষ শুরু হয়েছে। এখন সবুজের মাঠজুড়ে সূর্যমুখীর মায়াবী হাসি আর এর চাষে লাভজনক হওয়ায় তৈরি হয়েছে বাণিজ্যিক চাষের অপার সম্ভাবনা। আরডিএস-২৭৫ জাতের সূর্যমুখী ফুল এখানে চাষ হচ্ছে। মাটির উর্বতার সঙ্গে আবহাওয়া অনুকূল থাকায় অন্যান্য সবজির পাশাপাশি রবিশষ্যের চাষাবাদে কৃষি বিভাগের সহায়তায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে সূর্যমুখী ফুলের চাষ। কৃষকের কাছে জনপ্রিয় ও আগ্রহী করে তুলতে খানসামায় পরীক্ষামূলকভাবে সূর্যমুখী চাষ শুরু হয়েছে। ধান-পাট চাষে প্রচুর পরিশ্রম এবং খরচ হয় বেশি কিন্তু সূর্যমুখী চাষে খরচ কম, লাভ বেশি এই আশায় খানসামায় এবার সূর্যমুখী ফুলের চাষ হয়েছে। খানসামা উপজেলার দুহশুহ, নেউলা, হোসেনপুর ও ভান্ডারদহ গ্রামে দেখা যায়- ধান, রসুন, ভুট্টা ও গমের আবাদের সঙ্গে এবার নতুন করে যুক্ত হয়েছে সূর্যমুখী ফুল চাষ। মাঠজুড়ে হলুদ ফুলের সমারোহ। ফুলের সৌন্দর্য দেখতে ও বিনোদন কেন্দ্র মনে করে ছবি তুলতে আসছে অনেকে দর্শনার্থী। সূর্য যখন যেদিকে হেলে যায়, ফুলও সেদিকে হেলে থাকে। যা দেখে অনেকেই মুগ্ধ হয়ে চেয়ে থাকে আর সেলফি তুলতে ব্যস্ত থাকে।

খানসামা উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, তেলজাতীয় ফসলের আবাদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে রাজস্ব প্রকল্পের আওতায় খানসামার ছয়টি ইউনিয়নে উপজেলা কৃষি বিভাগের সহায়তায় ১২০ জন কৃষক ১২০ বিঘা জমিতে এই সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন।

খানসামার নেউলা গ্রামের কৃষক সাফিয়ার রহমান জানান, টেলিভিশন দেখে এই ফুল চাষে আগ্রহ সৃষ্টি হয়। পরে কৃষি অফিসের সহায়তায় বীজ পেয়ে ১ বিঘা জমিতে চাষ শুরু করেছি। সার, সেচ ও কীটনাশক মিলিয়ে বিঘাপ্রতি সূর্যমুখী চাষে খরচ হবে প্রায় ৬-৭ হাজার টাকা। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে খরচ বাদে বিঘাপ্রতি ২৫-৩০ হাজার টাকা আয়ের সম্ভাবনা। ৩ থেকে সাড়ে ৩ মাসের মধ্যেই এই ফলন পাওয়া যায়। সূর্যমুখীর কান্ড জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার ও বিক্রি করা যায়। যা থেকে বাড়তি লাভ হবে।

খানসামা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বাসুদেব রায় বলেন, সূর্যমুখী স্থানীয়ভাবে উচ্চমূল্যের ফসল হিসেবেও পরিচিত। ভোজ্যতেলের মধ্যে সূর্যমুখী শরীরের জন্য অত্যন্ত ভালো। কৃষকদের সঙ্গে কোম্পানির প্রতিনিধিদের আন্তঃসম্পর্ক তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। কৃষকদের কাছ থেকে কোম্পানি সরাসরি ফুলটির বীজ কিনবেন। ফলে কৃষকরা এটি কোথায় বিক্রি করবেন তা নিয়ে চিন্তা থাকছে না। আশা করছি চাষিরা প্রতি বিঘায় অন্তত ৩০ হাজার টাকা লাভ করতে পারবেন।

সর্বশেষ খবর