মঙ্গলবার, ৬ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

করোনায় আটকা সিলেট বিএনপির নেতৃত্ব বদল

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

তিন মাসের আহ্‌বায়ক কমিটি দিয়ে ১৮ মাস পার করেছে সিলেট জেলা বিএনপি। আর মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি দিয়েই চলছে মহানগর বিএনপির কার্যক্রম। ইতিমধ্যে সম্মেলনের মাধ্যমে জেলা ও মহানগর বিএনপির নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের উদ্যোগ নেওয়া হয় কয়েকবার। নানা কারণে প্রতিবারই আটকে যায় নেতৃত্ব বদলের উদ্যোগ। ফলে সম্মেলনের তোড়জোড়ে একবার নেতা-কর্মীদের মধ্যে চাঙাভাব দেখা দিলেও পরক্ষণে তা স্তিমিত হয়ে পড়ে। এতে দলের সাংগঠনিক কাঠামো দুর্বল হয়ে পড়ছে বলে মনে করছেন নেতা-কর্মীরা। দলীয় সূত্র জানান, ২০১৯ সালের ৩ অক্টোবর মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি বিলুপ্ত করে কেন্দ্র থেকে সিলেট জেলা বিএনপির আহ্‌বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের জন্য আহ্‌বায়ক কমিটিকে বেঁধে দেওয়া হয় তিন মাস সময়। দায়িত্ব পাওয়ার পর সম্মেলন আয়োজনের উদ্যোগ নেন কমিটির নেতারা।

কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তৃণমূল পর্যায়ে দল গোছাতে না পারায় কেন্দ্র থেকে সময় বাড়িয়ে নেন তারা। এর মধ্যে গত বছর মার্চ-এপ্রিলের দিকে সম্মেলন আয়োজনের টার্গেট নিলে বাধা হয়ে দাঁড়ায় করোনাভাইরাস। ওই সময় দেশব্যাপী সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হলে কেন্দ্র থেকে সাংগঠনিক কার্যক্রমও স্থগিত করা হয়। ফলে হোঁচট খায় সম্মেলনের উদ্যোগ। করোনা সংক্রমণ কিছুটা কমে এলে ফের শুরু হয় তৎপরতা। সব উপজেলা ও পৌর শাখায় ঘোষণা করা হয় নতুন আহ্‌বায়ক কমিটি। এ কমিটি নিয়ে জেলা বিএনপির আহ্‌বায়ক কমিটির মধ্যে দেখা দেয় দ্ধন্ধ। দুই গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়েন জেলার নেতারা। আহ্‌বায়ক কমিটির নেতাদের মধ্যে ঐক্য ফেরাতে সিলেট বিভাগের সাংগঠনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত দলের কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হোসেন জীবন, সহসাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন মিলন উভয় পক্ষকে নিয়ে কয়েকবার বৈঠক করেন। সর্বশেষ মার্চের প্রথম সপ্তাহে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সিলেট জেলা বিএনপির নেতাদের নিয়ে ভার্চুয়াল সভা করে সম্মেলনের ব্যাপারে দিকনির্দেশনা দেন। সে আলোকে ইউনিয়ন পর্যায় থেকে সম্মেলন আয়োজনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু দেশে ফের করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সাংগঠনিক কার্যক্রম আবারও স্থগিত করা হয়। সেই সঙ্গে থমকে যায় জেলা সম্মেলনের প্রস্তুতিও। এ ছাড়া সিলেট বিভাগের সাংগঠনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, দলীয় চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আবদুল মুক্তাদির ও জেলা বিএনপির আহ্‌বায়ক কমিটির সদস্য আবদুল কাইয়ূম চৌধুরী করোনা আক্রান্ত হলে সাংগঠনিক কার্যক্রমে কিছুটা হলেও স্থবিরতা দেখা দেয়।

জেলা বিএনপির আহ্‌বায়ক কমিটির সদস্য আবদুল কাইয়ূম চৌধুরী জানান, যখনই সম্মেলন আয়োজনে গতি এসেছে তখনই করোনা তা থামিয়ে দিয়েছে। জেলার আওতাধীন সব ইউনিয়ন শাখার আহ্‌বায়ক কমিটি গঠন করে চলছিল সম্মেলন আয়োজনের প্রস্তুতি। দুটি পৌরসভা ও একটি উপজেলা শাখার সম্মেলনের তারিখও ধার্য করা হয়েছিল। পর্যায়ক্রমে জেলা সম্মেলনের প্রস্তুতি এগিয়ে চলছিল। কিন্তু করোনার কারণে সবকিছু থমকে গেছে।

এদিকে, ১৫ মার্চ সিলেট মহানগর বিএনপির নেতাদের সঙ্গে ভার্চুয়ালি সভা করেন তারেক রহমান। ওই সভায় মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি ভেঙে আহ্‌বায়ক কমিটি গঠনের দিকনির্দেশনা দেন তিনি। মার্চের শেষ সপ্তাহে মহানগর বিএনপির আহ্‌বায়ক কমিটি ঘোষণার কথা থাকলেও করোনা পরিস্থিতির অবনতির কারণে নতুন কমিটি আর ঘোষণা হয়নি। ফলে সিলেট বিএনপির নেতৃত্ব আর বদল হয়নি। নতুন নেতৃত্বের জন্য নেতা-কর্মীদের অপেক্ষা করতে হচ্ছে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়া পর্যন্ত।

সর্বশেষ খবর