মঙ্গলবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে পুলিশকে সতর্কতা

মাহবুব মমতাজী

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে পুলিশকে সতর্কতা

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের ভেবেচিন্তে ও সতর্কতার সঙ্গে বক্তব্য বা মন্তব্য করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। গত ৭ এপ্রিল পুলিশ সদর দফতর থেকে এ বিষয়ে একটি নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। পুলিশ সদর দফতরের এডিশনাল ডিআইজি (কনফিডেন্সিয়াল) মোহাম্মদ আবদুল্লাহিল বাকীর স্বাক্ষরিত চিঠিতে পাঁচ ধরনের নির্দেশনা দেওয়া হয়। চিঠিতে বলা হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমে রাষ্ট্র, সরকার, জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, ধর্ম বা অন্য কোনো ব্যক্তি, সার্ভিস, পেশার ভাবমূর্তি ক্ষুণœ হয় এমন কোনো পোস্ট, ছবি, অডিও বা ভিডিও আপলোড, কমেন্ট, লাইক, শেয়ার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পুলিশের ভাবমূর্তি বজায় রাখার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে বলা হয়, পুলিশের পোশাক পরিহিত অবস্থায় বাহিনীকে হেয় প্রতিপন্ন করে এমন যে কোনো পোস্ট দেওয়া বা ছবি শেয়ার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। এ ছাড়া গুজব, ভিত্তিহীন, অসত্য ও অশালীন তথ্য প্রচার থেকে পুলিশ সদস্যদের বিরত থাকতে হবে। পাশাপাশি যে কোনো পোস্ট বা ভিডিওতে লাইক, কমেন্টস ও শেয়ার করার আগে অবশ্যই সত্যতা যাচাই করে নিতে হবে। এ ছাড়া ডিসিপ্লিন ফোর্সের অংশ হিসেবে যে কোনো বক্তব্যের ক্ষেত্রে সিনিয়র-জুনিয়র অর্থাৎ অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলার বিষয়টি বিবেচনার কথাও বলা হয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশের কোনো সদস্য এসব নির্দেশনার পরিপন্থী কোনো কাজ করলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ার করা হয়। পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ভুল ও অসচেতন ব্যবহারের নানা ভোগান্তি ও হয়রানি রয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশ একটি সুশৃঙ্খল বাহিনী। এ বাহিনীর সদস্যরা যেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের ফলে কোনো ধরনের বিচ্যুতির সঙ্গে জড়িয়ে না পড়ে, এ লক্ষ্যে তাদের আরও বেশি সতর্ক হওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে পুলিশ সদর দফতর পুলিশ সদস্যদের সরকারি নীতিমালা ও নির্দেশনা অনুসরণ করার নির্দেশও দিয়েছে।

এর আগে গত ৪ এপ্রিল হেফাজতে ইসলামের নেতা মামুনুল হকের পক্ষ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে বক্তব্য দেওয়ায় এএসআই গোলাম রাব্বানীকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়। তিনি কুষ্টিয়ার ইন সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারে কর্মরত ছিলেন। প্রত্যাহারের আগের দিন ওই কর্মকর্তা পুলিশের পোশাক পরে ফেসবুক লাইভে আসেন। পরে তার লাইভটি ভাইরাল হয়ে যায়।

এ ছাড়া ফেনীর সোনাগাজীর মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান কীভাবে অধ্যক্ষের হাতে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছিলেন, এর বিবরণ নিজের মুঠোফোনে রেকর্ড করে প্রচারের অভিযোগ পাওয়া যায় থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে। তাকে ২০১৯ সালের ১০ এপ্রিল প্রত্যাহার করে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নে (এপিবিএন) সংযুক্ত করা হয়।

ওই ঘটনা তদন্তে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মোয়াজ্জেম হোসেন ওসি হিসেবে রাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থেকেও নিয়মবহির্ভূতভাবে নুসরাতের বক্তব্যের ভিডিও ধারণ ও প্রচার করে দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয় দিয়েছেন।

সর্বশেষ খবর