বুধবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

বালু লুটপাট বন্ধে হার্ডলাইনে পুলিশ

সিলেটে ধরা পড়ছে বালু লুটেরারা, জব্দ হচ্ছে কয়েক কোটি টাকার যন্ত্রপাতি ও বালু

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

বালু লুটপাট বন্ধে হার্ডলাইনে পুলিশ

সিলেট বিভাগে বালুমহাল লুটপাট ও নৌপথে চাঁদাবাজি বন্ধে এবার হার্ডলাইনে নৌপুলিশ। সিলেট বিভাগের বিভিন্ন নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের দায়ে চলতি এপ্রিলে সাতটি সফল অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। অভিযানে কোটি কোটি টাকার যন্ত্রপাতি ও বালু জব্দ হয়। গ্রেফতার করা হয় বেশ কয়েকজন বালুখেকোকে। এ ছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে মোটা অঙ্কের জরিমানা করা হয়েছে অনেককে। এসব অভিযানের পর বালুমহাল লুটপাট ও নৌপথে চাঁদাবাজি অনেকটা কমে আসছে বলে জানিয়েছেন নৌপুলিশ সিলেট অঞ্চলের পুলিশ সুপার শম্পা ইয়াসমিন।

সিলেট বিভাগের চার জেলা নিয়ে নৌপুলিশ সিলেট অঞ্চল। এ চার জেলার নদ-নদীগুলো বালুর আধার। সিলেট বিভাগের বিভিন্ন নদ-নদী থেকে উত্তোলিত বালু সরবরাহ করা হয় সারা দেশে। এসব নদ-নদীর স্থানে স্থানে রয়েছে বালুমহাল। এর মধ্যে কিছু বালুমহাল প্রতি বছর প্রশাসন থেকে ইজারা দেওয়া হয়, বাকিগুলোয় লুটপাট চালান বালুখেকোরা। সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে তারা ড্রেজারে বালু উত্তোলন করে নদীপথে নিয়ে যান বিভিন্ন স্থানে। বালু পরিবহনকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঁদাবাজিও চলে নৌপথে। এ লুটপাট ও চাঁদাবাজি বন্ধে সম্প্রতি হার্ডলাইনে অভিযানে নামে নৌপুলিশ।

গত রবিবার টুকেরবাজার নৌ ফাঁড়ির সদস্যরা অভিযান চালিয়ে সুনামগঞ্জের ধোপাজান নদী থেকে বালুবোঝাই ১২টি স্টিলবডি নৌকা জব্দ করেন। অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও পাচারের দায়ে আটক করা হয় ১২ জনকে। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাদের থেকে আদায় করে ৬ লাখ টাকা। এ ছাড়া জব্দ বালু নিলামে ২ লাখ ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়। এর আগের দিন ২৪ এপ্রিল ছাতকের হাদাটিলা সংলগ্ন নদী থেকে বালু উত্তোলনের সময় নৌকাসহ দুইজনকে গ্রেফতার করে নৌ পুলিশ। বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনে তাদের বিরুদ্ধে ছাতক থানায় মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় অজ্ঞাত আরও ৩-৪ জনকে আসামী করা হয়। ২০ এপ্রিল সুনামগঞ্জের ধোপাজান নদীতে অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের দায়ে প্রায় ২ কোটি টাকা মূল্যের ৪টি স্টিলের নৌকা ও উত্তোলিত বালু জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় ৫ জনকে আসামীি করে থানায় মামলা হয়েছে। জব্দকৃত বালু পরে চার লক্ষাধিক টাকায় বিক্রি করা হয়। ১৯ এপ্রিল ধোপাজান নদী থেকে বালুবোঝাই ১টি কার্গো ও ১টি বাল্কহেড জব্দ করা হয়। কার্গো ও বাল্কহেডের দাম প্রায় দুই কোটি টাকা বলে জানা গেছে। পরে জব্দকৃত বালু প্রায় ৪ লাখ টাকায় নিলামে বিক্রি করা হয়। এ ঘটনায় থানায় ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এছাড়া গত ১৮ ও ৭ এপ্রিল অভিযান চালিয়ে আরও ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।

নৌপুলিশ সিলেট অঞ্চলের পুলিশ সুপার শম্পা ইয়াসমিন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘নৌপথে চাঁদাবাজি ও বালুমহাল লুটপাট বন্ধে নৌপুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। যেখানেই অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বা চাঁদাবাজির অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে সেখানেই তৎক্ষণাৎ অভিযান হচ্ছে।’

সর্বশেষ খবর