দেশের আমদানি-রপ্তানি প্রক্রিয়া প্রায় স্বাভাবিক থাকায় করোনার দ্বিতীয় ধাক্কায়ও চট্টগ্রাম বন্দরের প্রবৃদ্ধি ঊর্ধ্বমুখী। চলতি বছরের এ পর্যন্ত কনটেইনার ও কার্গো হ্যান্ডলিংয়ে ৭ শতাংশেরও বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হয়েছে। পাশাপাশি জাহাজ আগমনও প্রায় ৩ শতাংশ বেশি হয়েছে। বন্দর সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের মার্চ মাসে চট্টগ্রাম বন্দরে আগত জাহাজের সংখ্যা ছিল ৩৬৬টি, কনটেইনার হ্যান্ডলিং ২ লাখ ৪৯ হাজার ৬৬৯ টিইইউস, কার্গো হ্যান্ডলিং ১০২ লাখ ৬৪ হাজার ৪০২ মেট্রিক টন। ২০২১ সালের মার্চ মাসে তা যথাক্রমে জাহাজের সংখ্যা ৩৭৬টি, কনটেইনার হ্যান্ডলিং ২ লাখ ৬৯ হাজার ৪৪৬ টিইইউস, কার্গো হ্যান্ডলিং ১১০ লাখ ৪২ হাজার ৮১৮ মেট্রিক টন। কনটেইনার ও কার্গো হ্যান্ডলিংয়ে প্রবৃদ্ধি ৭.৭ শতাংশ এবং জাহাজ হ্যান্ডলিং ২.৭ শতাংশ। কভিড-১৯ এর কারণে উন্নত বিশ্বের অনেক বন্দরের কার্যক্রম সম্পূর্ণ বন্ধ হলেও চট্টগ্রাম বন্দর পুরোদমে চালু ছিল। কভিডের প্রথম ঢেউয়ের শুরুর দিকে চট্টগ্রাম বন্দরে প্রায় ডেলিভারি শূন্য অবস্থা দেখা দিলেও অল্প কিছুদিনের মধ্যেই নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও বন্দর কর্তৃপক্ষের কিছু কর্মপরিকল্পনায় তা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছিল। সেই অভিজ্ঞতার আলোকে কভিড-১৯ এর দ্বিতীয় ধাক্কা সামাল দিয়ে যাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত রূপকল্প ২০২১ এবং রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নে এই বন্দর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বন্দরের আধুনিকায়ন, যন্ত্রপাতি সংযোজন এবং সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বে-টার্মিনাল, পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল, মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ ও নিউমুরিং ওভার ফ্লো ইয়ার্ড নির্মাণসহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প চলমান রয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দর এখন বিশ্বের কনটেইনার হ্যান্ডলিং বন্দরের লয়েড লিস্টে ৫৮তম অবস্থানে রয়েছে। এক বছরের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরের সাফল্যে রয়েছে বহির্নোঙরে শূন্য পাইরেসি (দস্যুতা), লয়েড লিস্টে ছয় ধাপ এগিয়ে ৬৪ হতে ৫৮ এ উন্নীত হওয়া, পরীক্ষামূলক ভারতের কলকাতা বন্দর হতে চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যে পণ্য পরিবহন (ট্রানজিট) চালু।
বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান বলেন, এই এগিয়ে যাওয়ার পেছনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রয়েছে বন্দর ব্যবহারকারী তথা স্টেক হোল্ডারদের। বন্দরের কার্যক্রমকে আরও বেশি গতিশীল ও আধুনিকায়নের জন্য আমাদের আরও কিছু পরিকল্পনা রয়েছে, যা বাস্তবায়নের দিকে যাচ্ছে। বন্দরের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী থেকে শুরু করে সব স্টেক হোল্ডারের সক্রিয়তার কারণেই এই বৈশ্বিক দুঃসময়েও প্রবৃদ্ধি দিন দিন বাড়ছে।