শুক্রবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

চমেকে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি অব্যাহত

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে (চমেক) ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় দ্বিতীয় দিনের মতো কর্মবিরতি অব্যাহত রেখেছে ইন্টার্ন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন। গতকাল সকাল থেকে কর্মবিরতি চলার কারণে হাসপাতালের কোনো ওয়ার্ডে তারা চিকিৎসাসেবায় যোগ দেননি। তাছাড়া গতকাল দুপুরে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা দোষীদের শাস্তি দাবি করে মানববন্ধন করেছেন। ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতির কারণে ভর্তি থাকা রোগীরা চরম বিপাকে পড়ছেন বলে স্বজনদের অভিযোগ। জানা যায়, গত মঙ্গলবার রাতে চমেক ছাত্রলীগের দুটি পক্ষের কথা কাটাকাটির জের ধরে দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে চমেকের ৫৭ ব্যাচের ইন্টার্ন চিকিৎসক হাবিবুর রহমান এবং ওসমান গনিসহ সাতজন আহত হন।

আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনার জের ধরে বুধবার থেকে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা হাসপাতালে কর্মবিরতি শুরু করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য বুধবার দুপুরে চমেক হাসপাতালের পরিচালকের সম্মেলন কক্ষে চমেক, চমেক হাসপাতাল, পুলিশ এবং বিদ্যমান দুই পক্ষের নেতা-কর্মীদের বৈঠক হয়। বৈঠক ফলপ্রসূ না হওয়ায় কর্মবিরতি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। অন্যদিকে, ঘটনা তদন্তে মেডিকেলের দুজন উপপরিচালক ও মেডিসিন বিভাগের একজন অধ্যাপকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

চমেক হাসপাতাল ইন্টার্ন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক ডা. ওসমান গনি বলেন, চিকিৎসকদের ওপর হামলার ঘটনায় হাসপাতালের পরিচালক ও অধ্যক্ষ বরাবরে লিখিতভাবে আমাদের দাবিসমূহ উপস্থাপন করেছি। কিন্তু কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। দাবি না মানা পর্যন্ত কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে। 

জানা যায়, ইন্টার্ন চিকিৎসকরা হঠাৎ করে কর্মবিরতি ডাকায় বিপাকে পড়েছেন বিভিন্ন প্রান্ত থেকে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা। ইন্টার্ন চিকিৎসক না থাকায় ডিউটি ডাক্তাররা ক্রমবর্ধমান রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন। চিকিৎসা না পেয়ে অনেক রোগী ফিরেও যাচ্ছেন। গতকাল ১২ নম্বর হৃদরোগ বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা আরাফাত রহমান বলেন, বুকের ব্যথা দেখা দেওয়ায় চিকিৎসকের পরামর্শে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার জন্য আসি। কিন্তু এখানে কর্মবিরতির কারণে চিকিৎসা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। তাই বিকল্প ব্যবস্থা নিতে চলে যাচ্ছি।

এদিকে, সংঘর্ষের ঘটনায় দোষীদের বিচার দাবিতে গতকাল দুপুরে চমেক ক্যাম্পাসে মানববন্ধন করেছে ইন্টার্ন চিকিৎসক অ্যাসোসিয়েশন। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, মেডিকেলের শান্ত পরিবেশ বিনষ্ট করতে একটি মহল কাজ করছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত মঙ্গলবার পরিকল্পিতভাবে দুই চিকিৎসকের ওপর হামলা চালানো হয়। এ সময় মেডিকেলে বহিরাগতরা অবস্থান নিয়ে হাসপাতালে ভাঙচুর করে এবং ছাত্রাবাসে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের অবরুদ্ধ করে রাখে। এতকিছুর পরও প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে। তাই অবিলম্বে দোষীদের শাস্তি দাবি করছি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর