রবিবার, ৯ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

চট্টগ্রামে আক্রান্ত ৫৭ শতাংশের দীর্ঘমেয়াদি নানা উপসর্গ

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে আক্রান্ত ৫৭ শতাংশের দীর্ঘমেয়াদি নানা উপসর্গ

চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের ৫৭ শতাংশের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি নানা উপসর্গ বিদ্যমান থাকে। এর মধ্যে শারীরিক দুর্বলতা, ব্যথা, দুুশ্চিন্তা, অবসাদ, কাশি, চুল পড়ে যাওয়া ইত্যাদি রয়েছে। তবে গবেষণায় অন্তর্ভুক্তের মধ্যে ৬৫ শতাংশ রোগীর শরীরে অ্যান্টিবডির উপস্থিতি রয়েছে। তা ছাড়া পজিটিভ রোগীর প্রায় ৯০ আর নেগেটিভের প্রায় ২৬ শতাংশের মধ্যে অ্যান্টিবডির উপস্থিতি পাওয়া গেছে।

চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে করোনা আক্রান্তের শরীরে অ্যান্টিবডির উপস্থিতি নিয়ে ‘স্যারোপ্রিভিল্যান্স অব সার্স-২ কভিড-১৯ অ্যান্টিবডি ইন চিটাগাং, বাংলাদেশ : এ ক্রস-সেকশনাল স্টাডি’ শীর্ষক গবেষণায় এ তথ্য উপস্থাপন করা হয়। ২০২০ সালের অক্টোবর থেকে গেল এপ্রিল পর্যন্ত পরিচালিত গবেষণা জরিপে দৈবচয়নের ভিত্তিতে জেনারেল হাসপাতালে আগত ১ হাজার ৫৩০ রোগীর মধ্যে এ জরিপ পরিচালিত হয়। এর মধ্যে আরটিপিসিআর পজিটিভ ৯৪১ আর নেগেটিভ ৫৮৯ জন। জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. আবদুর রবের নেতৃত্বে এবং ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. আসিফ খানের সমন্বয়ে পরিচালিত গবেষণা জরিপে অংশগ্রহণ করেন হাসপাতালের কনসালট্যান্ট ডা. এইচ এম হামিদুল্লাহ মেহেদী, যুক্তরাষ্ট্রের সাউথ ক্যারোলিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা সহযোগী ডা. এম এ কবির চৌধুরী, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সহকারী সার্জন ডা. অমি দেব ও এমিনেন্স অ্যাসোসিয়েটস ফর সোশ্যাল ডেভেলপমেন্টের জ্যেষ্ঠ পুষ্টি কর্মকর্তা ডা. মোরতাহিনা রশিদ। গবেষণায় আর্থিক সহযোগিতা করে ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও এস আলম গ্রুপ।

ডা. আবদুর রব বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কভিড-১৯ চলছে। কিন্তু কভিডকে আরও বিশদভাবে জানার লক্ষ্যে রোগীর লক্ষণ, পজিটিভ-পরবর্তী দীর্ঘমেয়াদি জটিলতা ও অ্যান্টিবডির উপস্থিতি নিয়ে গবেষণাটি পরিচালিত হয়। জরিপের ফলাফলের ভিত্তিতে আগামীতে চিকিৎসাব্যবস্থা সমৃদ্ধ হবে। ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. আসিফ খান বলেন, দেশের বর্তমান বাস্তবতায় চিকিৎসাবিজ্ঞানকে উন্নত করতে গবেষণার বিকল্প নেই। আমাদের জানা মতে জেলা পর্যায়ের কোনো হাসপাতালে নিজস্ব উদ্যোগে পরিচালিত এটিই প্রথম গবেষণা।

আশা করি এ গবেষণা চিকিৎসা কাজকে আরও উৎসাহিত করবে।

হাসপাতালের কনসালট্যান্ট ডা. এইচ এম হামিদুল্লাহ মেহেদী বলেন, গবেষণার অন্যতম সাফল্য হলো আক্রান্তের মধ্যে বড় একটি অংশকে অন্তর্ভুক্ত করা, সরাসরি তাদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ এবং পরীক্ষার মাধ্যমে তথ্যগুলো সংগ্রহ। এ গবেষণা চলমান টিকা কর্মসূচি আরও গ্রহণযোগ্য ও গতিশীল করবে।

গবেষণায় বলা হয়, অংশগ্রহণকারীর অধিকাংশই পুরুষ, ৭৫ শতাংশ আর চাকরিজীবী ৭০ শতাংশ। করোনা আক্রান্তের পর তাদের মধ্যে লক্ষণ ছিল জ্বর ৯২ শতাংশ, কাশি ৬৩ শতাংশ, ঘ্রাণশক্তি লোপ ৫২ শতাংশ। এ ছাড়া ছিল গলাব্যথা, মাথাব্যথা, পাতলা পায়খানা ও শ্বাসকষ্ট উপসর্গ। আক্রান্তের ১৫ শতাংশ আগে থেকে ডায়াবেটিস, ২৩ শতাংশ উচ্চ রক্তচাপ, শ্বাসতন্ত্রের জটিলতা ৯ শতাংশ ও হৃদরোগে আক্রান্তও ছিল।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর